খুলনা ব্যুরো: অবশেষে খুলনার পাইকগাছার দেলুটির কালিনগরের ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামত করা সম্ভব হয়েছে। ৫ম দিন ২৬ আগস্ট সোমবার প্রায় ৫ হাজার মানুষ স্বেচ্ছাশ্রমে কাজ করে বাঁধ মেরামতের কাজ সম্পন্ন করেছে।
অন্যদিকে টানা ৫ দিন পানি বন্দি থাকায় চরম দুর্ভোগে পড়েছেন দুর্গত এলাকার মানুষ। বিভিন্ন সরকারি ও বেসরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে ত্রাণ সামগ্রী বিতরণ অব্যাহত থাকলেও অনুন্নত যোগাযোগ ব্যবস্থা ও পর্যাপ্ত নৌযান না থাকায় দুর্গত মানুষের কাছে ত্রাণ পৌঁছাতে ত্রাণ বিতরণকারীরা চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন। শত শত পরিবার গবাদি পশু ও শিশু সন্তানদের নিয়ে ওয়াপদার রাস্তায় খোলা আকাশের নিচে মানবেতর জীবন যাপন করছে। পানি নিষ্কাশনসহ বাসস্থান নির্মাণে সরকারি-বেসরকারি সহায়তার দাবি জানিয়েছেন দুর্গত এলাকার এ সব মানুষ।
গত ২২ আগস্ট বৃহস্পতিবার উপজেলার দেলুটি ইউনিয়নের কালিনগর এলাকার পানি উন্নয়ন বোর্ডের ওয়াপদার বেড়িবাঁধ ভেঙ্গে ২২ নং পোল্ডারের ১৪টি গ্রাম প্লাবিত হয়ে পানি বন্দি হয়ে পড়ে ৩০ হাজার মানুষ। উপজেলা প্রশাসন ও পানি উন্নয়ন বোর্ডের তত্ত্বাবধায়নে হাজার হাজার মানুষ প্রতিদিন বাঁধ মেরামতের চেষ্টা করলেও জোয়ারে পানিতে সংস্কারকৃত বাঁধ ভেঙ্গে যায়। ফলে আবারও ভাঙ্গা বেড়ি বাধ দিয়ে পানি ঢুকে প্লাবিত হয় ওই সব এলাকার মানুষ। শেষে পর্যন্ত সোমবার দেলুটির ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল ও সোলাদানার সাবেক চেয়ারম্যান এসএম এনামুল হকের নেতৃত্বে প্রায় ৫ হাজার মানুষ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত কাজ করে বাঁধ মেরামতের কাজ সম্পন্ন করেন।
নোয়াই গ্রামের করবী মন্ডল জানান, আমাদের বেশির ভাগ কাঁচা ঘর-বাড়ি ধ্বংস হয়ে গেছে। রাস্তার উপর রাত কাটাচ্ছি । এই মুহূর্তে পর্যাপ্ত তাঁবু প্রয়োজন। আর খাবারেও তীব্র সংকটে রয়েছি। শিশু সন্তানদের নিয়ে চরম বিপদে আছেন। এছাড়া নানা দুর্ভোগের কথা জানান হরিণখোলা গ্রামের সাধনা গোলদার।
এলাকার বাসিন্দা রুমি মন্ডল জানান, বৃষ্টির মধ্যে খোলা আকাশের নিচে পরিবার নিয়ে চরম বিপাকে ছিলাম। বাংলাদেশ নৌবাহিনী তাঁবু স্থাপন করে দেওয়ায় তাবুর মধ্যেই পরিবার নিয়ে জীবন ধারণ করছি।
এদিকে দুর্গত মানুষের জন্য সরকারি-বেসরকারিভাবে ত্রাণ সহায়তা অব্যাহত থাকলেও দুর্গত মানুষের কাছে পৌঁছাতে ভোগান্তিতে পড়েছেন ত্রাণ বিতরণকারীরা।
হৃদয় পাইকগাছা সংগঠনের রইচ উদ্দীন বলেন, বিগরদানা থেকে দারুনমল্লিক পর্যন্ত একটি মাত্র রাস্তা। সেই রাস্তা দিয়ে ত্রাণের গাড়ি সহজে চলাচল করতে পারেনা। এছাড়া ত্রাণ সামগ্রী নামানোর পর দুর্গত এলাকার ভিতরে অবস্থানরত মানুষের কাছে ত্রাণ সামগ্রী পৌঁছানোর জন্য পর্যাপ্ত নৌযান নেই। ফলে ভোগান্তিতে পড়তে হচ্ছে ত্রাণ বিতরণ কারীদের।
ইউপি চেয়ারম্যান রিপন কুমার মন্ডল বলেন, বাঁধ মেরামত হলেও এখন পানি নিষ্কাশন, কৃষি ও বাসস্থান পুনর্বাসন জরুরি হয়ে পড়েছে। এ ক্ষেত্রে সরকারি-বেসরকারি সহায়তার দাবি জানান স্থানীয় এই জনপ্রতিনিধি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available