স্টাফ রিপোর্টার, গাইবান্ধা: গাইবান্ধার সুন্দরগঞ্জের সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের অনিয়ম, দুর্নীতি ও স্বেচ্ছাচারিতার অভিযোগ তুলে তার পদত্যাগের দাবিতে এক মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়েছে।
২৮ আগস্ট বুধবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার বামনডাঙ্গা ইউনিয়নের সাহাবাজ উচ্চ বিদ্যালয় প্রাঙ্গণে শিক্ষার্থী, অভিভাবক ও এলাকাবাসীর ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।
এ সময় আরাফাত হোসাইন নামে এক যুবলীগ কর্মী বাঁধা দিলে উপস্থিত জনতা তাকে গণধোলাই দেন। মানববন্ধনে বর্তমান, সাবেক শিক্ষক- শিক্ষার্থী ছাড়াও এলাকার শতশত মানুষ অংশ নেন।
মানববন্ধনে উপস্থিত বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থী ও শিক্ষকরা বলেন, আজকের এই পরিস্থিতি দীর্ঘদিনের পুঞ্জীভূত ক্ষোভের বহিঃপ্রকাশ। প্রধান শিক্ষকের কারণে আজ শিক্ষার্থীর সংখ্যা কমে গেছে। অনিয়ম, দুর্নীতি ও প্রধান শিক্ষকের স্বেচ্ছাচারিতার কারণে বিদ্যালয়ে লেখাপড়া হয় না বললেই চলে। এ কারণে বর্তমানে বিদ্যালয়টিতে ষষ্ঠ শ্রেণি থেকে দশম শ্রেণি পর্যন্ত মাত্র ৫০ থেকে ৬০ জন শিক্ষার্থী উপস্থিত হয়।
তারা আরও বলেন, এই স্কুলে সাবেক এক নৈশ প্রহরীকে জীবিত থাকা অবস্থায় তাকে মৃত দেখিয়ে সেই পদে নিয়োগ দেখিয়ে একাধিক লোকের কাছে টাকা নেন। কয়েক বছর আগে তিনি মারা গেলেও, তার অবসর জনিত টাকা এখনো তুলতে দেওয়া হয়নি। বিভিন্ন ভুয়া পদ সৃষ্টি করে চাকরিপ্রাপ্তদের কাছে থেকে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেন প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তার। যার ফলে সেই শিক্ষকদের নাম আজও এমপিওভুক্ত হয়নি। তারা মানবেতর জীবনযাপন করছেন। স্কুলের ৬টি সেমি পাকা রুমের ৫টি ভেঙে নিয়ে যাওয়ার অভিযোগ রয়েছে তার বিরুদ্ধে। প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের এসব অন্যায়, দুর্নীতি নিয়ে বিভিন্ন সময় একাধিক গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশিত হলেও অদ্যাবধি সংশ্লিষ্ট দপ্তর প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে কোনো পদক্ষেপ নেননি। যার ফলশ্রুতিতে এক সময়ের নামকরা স্কুলটির আজ বেহাল অবস্থা। আমরা দ্রুত স্কুলটির প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের পদত্যাগ দাবি করছি।
ভুক্তভোগী স্কুলটির সিনিয়র শিক্ষক মইনুল ইসলাম বলেন, আমি ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক থাকা অবস্থায় শিক্ষক-কর্মচারীদের বেতন জমা দিতে গেলে জোরপূর্বক তৎকালীন সাধারণ শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের লোকজন আমার গাড়ি কেড়ে নেয়। যা আজও ফেরত পাইনি। বামনডাঙায় আটকে রেখে অনেকগুলো কাগজে জোরপূর্বক স্বাক্ষর নেন বর্তমান প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের লোকজন। সেসময় মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে আরেকজনকে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেন ফাতেমা আক্তার ও তার লোকজন। উনি শিক্ষক নামের কলঙ্ক।
এ ব্যাপারে জানতে অভিযুক্ত প্রধান শিক্ষক ফাতেমা আক্তারের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলেও তাকে পাওয়া যায়নি।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মো. জাহিদুল ইসলাম বলেন, শাহাবাজ স্কুলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে দুর্নীতির অভিযোগে পদত্যাগের দাবিতে মানববন্ধনের বিষয়টি লোকমুখে শুনেছি। লিখিত অভিযোগ পেলে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available