রৌমারী (কুড়িগ্রাম) প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের রাজিবপুর উপজেলার প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) কার্যালয়ের কার্যসহকারী আকিদুল ইসলাম প্রায় অর্ধ কোটি টাকা নিয়ে আড়াই মাস ধরে পলাতক রয়েছেন। এঘটনায় প্রতিনিয়তই ভুক্তভোগীরা পিআইও অফিসে ধরনা ধরেও কোনো প্রতিকার পাচ্ছেন না।
জানা গেছে, ২০২৩-২৪ অর্থবছরে ৩০ জুনের আগে টিআর, কাবিখা ও কাবিটাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের শতভাগ কাজ বাস্তবায়ন না করে কাগজ-কলমে বাস্তবায়ন দেখিয়ে
পিআইওর যোগসাজশে কার্যসহকারী সরকারের কোটি টাকা তুলে নেন। এ ছাড়াও মন্ত্রণালয় থেকে বরাদ্দ এনে দেওয়ার কথা বলে ব্যবসায়ীদের কাছ থেকে অর্ধকোটি টাকা হাতিয়ে নেন ওই চক্রটি। ওই টাকা থেকে প্রায় ৫০ লাখ টাকা নিয়ে পবিত্র ঈদুল আযহার আগে থেকে লাপাত্তা রয়েছেন কার্যসহকারী আকিদুল ইসলাম। ওই দিন থেকে তার ব্যবহৃত মোবাইল ফোনটি বন্ধ রয়েছে। এনিয়ে বিপাকে পড়েছেন ভুক্তভোগীরা।
অপরদিকে ২০২২-২৩ অর্থবছরের কাবিটা বিশেষ বরাদ্দের ৭নং প্রকল্প উপজেলার মিয়াপাড়া সেকানের বাড়ি হইতে মিয়াপাড়া জামে মসজিদ পর্যন্ত রাস্তা মেরামত করার জন্য দেড় লাখ টাকার প্রকল্প দেওয়া হয়। এই প্রকল্পের সভাপতি করা হয় রাজিবপুর ইউপি সদস্য আব্দুল হাইকে। তিনি জানান, ২০২৩ সালের এপ্রিলে প্রথম কিস্তির ৭৫ হাজার টাকার একটি বিলের স্বাক্ষর জাল করে পিআইও ও কার্যসহকারী যোগসাজসে তুলে নেন। পরে বাকি টাকাও তুলে নেন তারা। একই কায়দায় আগের প্রকল্পের টাকাগুলোও উত্তোলন করা হয়। তবে কোন খাতের কত টাকা এর পরিমাণ বলতে অস্বীকৃতি জানান তিনি। সম্প্রতি বিষয়টি জানাজানি হলে এ নিয়ে এলাকায় তোলপার সৃষ্টি হয়।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও ব্যবসায়ীদের অভিযোগ, উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) লুৎফর রহমান রাজিবপুর উপজেলায় যোগদানের পর থেকে বিভিন্ন পর্যায়ের ব্যক্তিদের হাত করে টিআর, কাবিখা, কাবিটাসহ বিভিন্ন প্রকল্পের সরকারি টাকা নামে-বেনামে উত্তোলন ও লুটপাট করেছেন। পাত্তা পাচ্ছে না এবং তারা হতাশাগ্রস্ত হয়ে পড়েছে। এ বিয়য় নিশ্চিত করেছেন পিআইও লুৎফর রহমান
এ বিষয়ে উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) লুৎফর রহমান বলেন, পবিত্র ঈদুল আযহা ঈদের আগে কার্যসহকারী আকিদুল ইসলাম আমাকে না জানিয়ে বাড়ি চলে যান আর ফিরে আসেনি। শুনেছি সে চাকরি ছেড়ে দিয়েছে। সে যাদের কাছ থেকে টাকা নিয়েছে তাদের টাকাগুলো নাকি ফেরত দিচ্ছে।
তবে কাজ না করে বিল উত্তোলনের বিষয় জানতে চাইলে তিনি বলেন, টাকা অ্যাকাউন্টে জমা আছে। প্রকল্পের কাজ করলে টাকা পাবে। কাজ না করলে টাকা ফেরত যাবে।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা তানভীর আহমেদ বলেন, আকিদুল ইসলাম কারো কাছ থেকে টাকা নিয়ে থাকলে সেটা তার ব্যক্তিগত ব্যাপার। সে ঘুষের টাকা নিয়েছে নতুবা হাওলাত নিয়েছে তা আমার দেখার বিষয় না। তবে আমরা কাজ করে নিয়ে তাদের টাকা দিচ্ছি। কোনো লুটপাট হয়নি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available