আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বিএনপির দলীয় পদ ব্যবহার করে আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও তার সহযোগীরা চাঁদা আদায়, বাসস্ট্যান্ড দখল, ভাঙচুর ও লুটপাট করছে। এমন কর্মকাণ্ড ও আওয়ামী লীগের অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করার প্রতিবাদে আমতলী উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক মো. জহিরুল ইসলাম মামুন (ভিপি) সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
৩০ আগস্ট শুক্রবার বেলা ১১টায় আমতলী উপজেলা পরিষদ সড়কের দলীয় অস্থায়ী কার্যালয়ে এ সংবাদ সম্মেলন করেন। সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে উপজেলা বিএনপির ভারপ্রাপ্ত আহ্বায়ক জহিরুল ইসলাম মামুন। সংবাদ সম্মেলনে তিনি তুহিন মৃধাসহ এমন কর্মকাণ্ডে যারা জড়িত তাদের দল থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান তিনি।
বক্তৃতায় বিএনপি নেতা মামুন বলেন, ৫ আগস্ট ফ্যাসিবাদ শেখ হাসিনা পদত্যাগ করে দেশ ত্যাগ করেন। ওই দিন আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও উপজেলা বিএনপির সিনিয়র সদস্য সামসুল হক চৌকিদারসহ অর্ধ শতাধিক নেতাকর্মী আমতলী উপজেলায় ব্যাপক তাণ্ডব চালায়। বাড়ি-ঘর ভাঙচুর, জমি দখল, অগ্নি সংযোগসহ বিভিন্ন কর্মকাণ্ডে জড়িয়ে পরেন। বুধবার আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা এবং সিনিয়র সদস্য সামসুল হক চৌকিদারসহ ২০-২৫টি মোটরসাইকেল নিয়ে চলাভাঙ্গা গ্রামে নির্মাণাধীন পাওয়ার গ্রিড উপ-কেন্দ্রের শ্রমিক সরবরাহকারী হুমায়ুন কবির মিল্টনের মুদি মনোহরী দোকানে দেশীয় অস্ত্র নিয়ে হামলা ও ভাঙচুর চালায়। ওই দোকান থেকে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা ও তার সহযোগীরা দুই লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করেন। ওই টাকা না দেয়ায় তাকে মারধর করে। পরে দোকান থেকে দুই লক্ষ টাকা লুট করে নিয়ে যায়।
এছাড়াও উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা গ্রামের হাট বাজার দখল বাণিজ্য ও চাঁদা আদায় করে আসছে। তুহিন মৃধা ও তার অনুসারীদের এমন কর্মকাণ্ডে আমতলী উপজেলা বিএনপির ভাবমূর্তি একেবারে শূন্যের কোঠায় নেমে এসেছে। মৃধা ও তার এমন কর্মকাণ্ডের সঙ্গে জড়িতদের বিএনপি থেকে বহিষ্কার করে দলীয় ভাবমূর্তি উদ্ধারের দাবি জানান ভিপি মামুন।
সংবাদ সম্মেলনে পৌর বিএনপির আহ্বায়ক কবির উদ্দিন ফকির বলেন, উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধার বাবা মরহুম আব্দুস ছত্তার মৃধা ছিলেন আমতলী উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তার চাচাতো ভাই আমতলী সদর ইউনিয়ন পরিষদ সাবেক চেয়ারম্যান মোতাহার উদ্দিন মৃধা উপজেলা আওয়ামী লীগের সহ-সভাপতি। তার অ্যাজেন্ডা বাস্তবায়ন করতে উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা এমন কর্মকাণ্ড করছেন। দ্রুত তাকে দলীয় পদ থেকে বহিষ্কারের দাবি জানান তিনি।
সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন- উপজেলা বিএনপির যুগ্ম আহ্বায়ক মকবুল আহম্মেদ খাঁন, উপজেলা যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক মইনুদ্দিন মামুন, আবু সাইয়েদ জুবেরী, আব্দুর রাজ্জাক চৌকিদার, বিএনপি নেতা রুস্তুম আলী আকন, পৌর বিএনপির সদস্য সচিব জালাল আহম্মেদ খাঁন, মাহহারুল ইসলাম মিলন, মতিউর রহমান মানিক, মো. সেতু মল্লিক ও উপজেলা ছাত্রদলের সদস্য সচিব ইমরান খাঁন।
আমতলী উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব তুহিন মৃধা সকল অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, হাসিনা দেশ ত্যাগের পর আমতলী উপজেলায় যতগুলো ঘটনা ঘটেছে তার সঙ্গে আমি ও আমার অনুসারীরা জড়িত নহে। এসব অভিযোগের অনেকগুলোই মিথ্যা এবং বানোয়াট।
উপজেলা বিএনপির সদস্য সচিব মো. তুহিন মৃধা চাঁদা দাবির অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, আমি কোন চাঁদা দাবি, ঘর ভাঙচুর মালামাল এবং নগদ টাকা লুট কোনটিই করি নাই। শেখ হাসিনা সরকার পতনের পর সাবেক সভাপতি জালাল ফকিরের নেতৃত্বে খুরিয়ার খেয়াঘাট এলাকায় চাঁদাবাজি চলছিল। আমি তা বন্ধের নির্দেশ দিয়েছি। এ জন্য আমার বিরুদ্ধে মিথ্যা অপবাদ আনা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available