তালতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার তালতলীতে ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) সদস্যকে বিবস্ত্র করে মারধরের সংবাদ প্রকাশের জেরে স্থানীয় ৫ সাংবাদিকসহ ৭ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা হয়েছে। এই মিথ্যা মামলার তীব্র নিন্দা জানিয়েছে বিভিন্ন সাংবাদিক সমাজ।
৫ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার দুপুরে আমতলী সিনিয়র জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে এ মামলাটি দায়ের করেন শাহদাত হোসেন। আদালতের বিচারক আরিফুর রহমান মামলাটি আমলে নিয়ে বরগুনা গোয়েন্দা শাখাকে (ডিবি) তদন্ত করে প্রতিবেদন দেওয়ার নির্দেশ দিয়েছেন।
মামলার আসামিরা হলেন- তালতলী প্রেস ক্লাবের সভাপতি মো. খাইরুল ইসলাম, দৈনিক আমাদের সময় পত্রিকার সাংবাদিক মোস্তাফিজ, এশিয়ান টিভির সাংবাদিক মো জলিল আহমেদ, আজকের দর্পণ পত্রিকার সাংবাদিক হাফিজুর রহমান, মানবজমিন পত্রিকার সাংবাদিক মাহমুদুল হাসান ও বিবস্ত্র করে মারধরের শিকার ইউপি সদস্য জামাল খান ও তার চাচাতো ভাই ফেরদাউস। হামলাকারী শাহদাতের কাছ থেকে একটি মোবাইল ও মারধর করে ৫০ হাজার টাকার ক্ষতিসাধন করার অভিযোগ করেছে।
জানা যায়, গত শনিবার ৩১ আগস্ট উপজেলার নিশান বাড়িয়া ইউনিয়নের ৯নং ওয়ার্ডের ইউপি সদস্য জামাল খানের বাড়ির সামনে নিদ্রা স্লুইজঘাট খালে একটি চোরাই ইঞ্জিন চালিত স্টিলবডি ট্রলার নোঙর করে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা। বিষয়টি স্থানীয়রা ইউপি সদস্য জামাল খানকে জানালে তিনি উপজেলা নির্বাহী অফিসারকে জানান। পরে ইঞ্জিনচালিত স্টিলবডি ট্রলারটি ইউপি সদস্যের জিম্মায় রাখার নির্দেশ দেন।
এ খবর পেয়ে রাত ১০টার দিকে চোরাই ট্রলারটি অনৈতিকভাবে নেওয়ার জন্য টাকার প্রস্তাব দেয়। এতে রাজি না হলে ছিনিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে। এ সময় ইউপি সদস্য বাধা দিলে আবুল কালাম, মিজানুর রহমান, বশির, সাংবাদিক নাইম ও শাহাদাতসহ এক দল সন্ত্রাসী এলোপাতাড়ি মারধর ও কুপিয়ে জখম করেন জামাল খানকে। মারধরের একপর্যায়ে ইউপি সদস্যকে বিবস্ত্র করে ভিডিও করা হয়।
এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যেতে চাইলে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে যায় হামলাকারীরা। এতে জীবনের ভয়ে চিকিৎসা না নিয়ে বাড়িতে থাকলে পরের দিন দুপুরের দিকে উপজেলা নির্বাহী অফিসার সিফাত আনোয়ার তুমপা ইউপি সদস্য জামাল খানকে উদ্ধার করে হাসপাতাল পাঠায়। এ ঘটনায় ঐ ইউপি সদস্য বাদী হয়ে ১২ জন হামলাকারীর নাম উল্লেখ করে আদালতে একটি মামলা করেন। এ ঘটনার খবর পেয়ে ১ আগস্ট বেলা ১২টার দিকে ঘটনাস্থলে সংবাদ সংগ্রহ করতে যায় তালতলী প্রেস ক্লাবের সদস্যরা। পরে এ ঘটনায় সংবাদ প্রকাশ করা হয়। এ সংবাদ প্রকাশের জের ধরে মিথ্যা ঘটনা সাজিয়ে ৫ সাংবাদিক ও ইউপি সদস্যের বিরুদ্ধে মারধরের অভিযোগ এনে মামলা করেছেন শাহদাত হোসেন নামের এক হামলাকারী।
তালতলী প্রেস ক্লাবের সাবেক সভাপতি ও যুগান্তরের সাংবাদিক মু আ. মোতালিব বলেন, এই মারধরের ঘটনায় আমিও সংবাদ সংগ্রহে গিয়েছিলাম ও সংবাদ প্রকাশ করেছি। এখানে সাংবাদিকরা পেশাগত দায়িত্ব পালন করেছেন। তাছাড়া তারা ঘটনাস্থলেই ছিলো না। তাদের নামে যে মামলা করা হয়েছে তা মিথ্যা ও ভিত্তিহীন। এটা দুঃখজনক। অবিলম্বে তিনি মামলাটি প্রত্যাহারের দাবি জানান।
এ বিষয়ে বরগুনা গোয়েন্দা শাখা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. বশির আলম বলেন, এখনো মামলার আদেশ আমরা হাতে পায়নি। আদেশ হাতে পেলে সঠিকভাবে তদন্ত করে সুষ্ঠু প্রতিবেদন আদালতে জমা দেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available