• ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০২:৫৩:৪৩ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • মঙ্গলবার ১লা আশ্বিন ১৪৩১ রাত ০২:৫৩:৪৩ (17-Sep-2024)
  • - ৩৩° সে:

জেলার খবর

সরকারি টিউবওয়েল বিক্রি করে টাকার পাহাড় জনস্বাস্থ্যের প্রকৌশলীর

৮ সেপ্টেম্বর ২০২৪ সকাল ১১:০৬:২৯

সরকারি টিউবওয়েল বিক্রি করে টাকার পাহাড় জনস্বাস্থ্যের প্রকৌশলীর

নবাবগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার নবাবগঞ্জে সরকারিভাবে এলাকাভিত্তিক বিশুদ্ধ পানি সরবরাহের জন্য স্থাপন করা হচ্ছে (সাবমারসিবল টিউবওয়েল) গভীর নলকূপ। ৪ ইঞ্চি পাইপের নলকূপের সরকারি ফি ১০ হাজার টাকা। চলতি অর্থবছরে স্থানীয় সাবেক সংসদ সদস্য ও ইউনিয়ন পরিষদের বরাদ্দকৃত টিউবওয়েল এসেছে এই উপজেলায়। ব্যাংক চালান জমা দেওয়ার পরও উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আলী আশ্রাবকে ঘুষ দিতে হয়। ব্যাংক চালানের পরও প্রতিটি টিউবওয়েল থেকে ২ হাজার আবার অনেকের কাছ তেকে ৩ হাজার করে অতিরিক্ত টাকা তুলেছেন প্রকৌশলী আলী আশ্রাব।

এছাড়া নগদ ৭০ হাজার টাকা করে বিক্রি করেছেন সরকারি এসব সাবমারসিবল টিউবওয়েল। যদিও ব্যক্তিগতভাবে এসব সাবমারসিবল টিউবওয়েল দোকান থেকে ক্রয় করতে গেলে ১ লাখ টাকারও বেশি খরচ হয়। অর্ধেক দামে সরকারি টিউবওয়েল পাওয়ায় ক্রেতারা ক্রয় করছেন জনস্বাস্থ্যের সহকারী প্রকৌশলী আলী আশ্রাবের কাছ থেকে৷

দুর্নীতিবাজ প্রকৌশলী আলী আশ্রাব নবাবগঞ্জে যোগদানের পর থেকে সরকারি টিউবওয়েল বিক্রিতে বেপরোয়া হয়ে উঠেন। এভাবেই দুর্নীতি করে গড়ে তুলেছেন সম্পদের পাহাড়৷এখানে যোগদানের পর থেকে এই কর্মকর্তা এভাবে দুর্নীতি করলেও সংশ্লিষ্ট দফতর এ পর্যন্ত কোনো ব্যবস্থা নেয়নি। আওয়ামী লীগ সরকার ক্ষমতায় থাকাকালীন দলীয় কিছু প্রভাবশালী নেতাকে হাত করে এসব অপকর্ম চালিয়েছেন প্রকৌশলী আলী আশ্রাব। 
 
অভিযোগ রয়েছে, কোনো আবেদনকারী ব্যাংকে টাকা জমা দেওয়ার পর চালান কপি নিয়ে দায়িত্বরত সহকারী প্রকৌশলী আলী আশ্রাবের কাছে আসলে ব্যাংক চালান কপি জমা নেওয়ার পর অফিসের খরচের কথা বলে ২-৩ হাজার করে টাকা দাবি করেন৷ বাধ্য হয়ে বেশিরভাগ সুবিধাভোগী টাকা দিয়েছেন তারপর টিউবওয়েল পেয়েছেন।

বান্দুরা ইউনিয়নের হারিকান্দা গ্রামের আবু সাঈদ দেওয়ানসহ আগলা, বান্দুরাসহ বিভিন্ন এলাকার একাধিক সুবিধাভুগী ব্যক্তি বলেন, ‘নবাবগঞ্জ জনস্বাস্থ্য অফিসের স্যার ফোন দিয়ে বলেছে টিউবওয়েলের জন্য টাকা জমা দিতে হবে। এরপর অফিসে গেলে অফিসের খরচসহ ১৩ হাজার ৫শ’ টাকা চাওয়া হয়েছে, পরে আমি তার কাছে ১৩ হাজার ৫শ’ টাকা জমা দিয়েছি।’

২০২২-২৩ অর্থ বছরে নবাবগঞ্জে যেসব সাবমারসিবল টিউবওয়েল বরাদ্দ হয়েছিল এরমধ্যে ওই তালিকায় নাম ছিল না এমন তিনজনের কাছে তিনটি টিউবওয়েল বিক্রি করার তথ্য বেরিয়ে এসছে এই প্রতিবেদকের কাছে। এই কর্মকর্তা নিজেকে কিছুটা আড়ালে রাখতে কৌশল অবলম্বন করে ওই টিউবওয়েলগুলো মিস্ত্রিদের দিয়ে বিক্রি করিয়েছেন বলেও প্রমাণ মিলে সরেজমিনে গেলে। শুধু তিনটা নয়, এরকম আরও অনেক টিউবওয়েল গোপনে মিস্ত্রিদের দিয়ে বিক্রি করিয়েছেন। এভাবে সরকারি টিউবওয়েল বিক্রি করে আলী আশ্রাবের পকেটে গেছে বিপুল পরিমাণ টাকা।  

অনুসন্ধান করে পাওয়া যায়, উপজেলার বারুয়াখালী এলাকায় দুটি, কলাকোপা এলাকায় একটি গভীর নলকূপ (সাবমারসিবল টিউবওয়েল) বিক্রি করা হয়েছে। ২০২২-২৩ অর্থবছরের তালিকায় টিউবওয়েল পাওয়া এই তিন ব্যক্তির নাম নেই। অথচ, তালিকায় নাম না থাকা আলী আহমেদের কাছে ৬০ হাজার টাকা, আব্দুর রহমানের কাছে ৭০ হাজার টাকা এবং শিউলি বেগমের কাছে ৫০ হাজার টাকায় মিস্ত্রি খালেক ও ইলিয়াসকে দিয়ে বিক্রি করিয়ে পুরো টাকা হাতিয়ে নিয়েছেন প্রকৌশলী আলী আশ্রাব।

টিউবওয়েল মিস্ত্রি খালেক ও ইলিয়াস এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘নবাবগঞ্জ জনস্বাস্থ্য অফিসে ২০২২-২৩ অর্থবছরের সরকারি টিউবওয়েল বসানোর কাজ করেছি। ওই অফিসে দায়িত্বে থাকা সহকারী প্রকৌশলী আলী আশ্রাব স্যার আমাদের প্রস্তাব দেন ৫টি করে সরকারি টিউবওয়েল বিক্রি করে দিতে হবে। আমরা বলেছি, এগুলো আমাদের দ্বারা সম্ভব না। আশ্রাব স্যার আমাদের বলেন, এই অফিসের কাজ করতে হলে আমার কথা শুনতে হবে, তা না হলে কাজের ম্যাজারম্যানট দিব না। তখন ভয়ে আমরা দুজনে তিনটি টিউবওয়েল বিক্রি করে সব টাকা আশ্রাব স্যারের কাছে দেই। আমাদের ৫ হাজার টাকা খাবারের জন্য দিয়েছিল কিন্তু আমরা নেইনি। পরবর্তীতে সরকারি এসব কাজ করতে গেলে আমাদের আর কাজ করতে দেয়া হয়নি। কাজ করলে টিউবওয়েল প্রতি ২ হাজার টাকা করে তাকে দিতে হবে। টাকা না দেওয়ায় আমাদের আর এখানে কাজ করতে দেয়নি।’

নবাবগঞ্জ উপজেলা জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের সহকারী প্রকৌশলী আলী আশ্রাব মুঠোফোনে এশিয়ান টিভির প্রতিবেদকের কাছে সব অভিযোগ অস্বীকার করে বলেন, ‘সরকারিভাবে ব্যাংক চালানের বাইরে কোনো অতিরিক্ত টাকা নেওয়া হয়নি। এমনকি সরকারি সাবমারসিবল টিউবওয়েল বিক্রির অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। তালিকা অনুযায়ী তারা টিউবওয়েল পেয়েছে।’

জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ঢাকা বিভাগের নির্বাহী প্রকৌশলী বশির আহম্মেদ মুঠোফোনে এশিয়ান টিভি অনলাইনকে বলেন, ‘সরকারি গভীর নলকূপ (সাবমারসিবল টিউবওয়েল) বিক্রি এবং সরকার নির্ধারিত টাকার বাইরে অতিরিক্ত টাকা নেওয়া সম্পূর্ণ বেআইনী। অভিযোগ পেয়ে তদন্ত করলে তার সত্যতা পাওয়ার পর তদন্ত প্রতিবেদন ঢাকা সার্কেলের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলীর কাছে জমা দিয়েছি। আশা করি, দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া হবে।’

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ

ধনবাড়ীতে পবিত্র ঈদে মিলাদুন্নবী উদযাপন
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রাত ০৯:১২:২০


পদ্মায় অবৈধ ড্রেজারে বালু উত্তোলনের হিড়িক
১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৪ রাত ০৮:২৮:৫০