আশুলিয়া (ঢাকা) প্রতিনিধি: বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক রেহেনা পারভিন (৩৫)। গেল দুই মাস আগে বাংলাদেশে এসে নিখোঁজ হন। নিখোঁজের দুই মাস পর ঢাকার আশুলিয়ায় মাটিতে পুঁতে রাখা অবস্থায় তার অর্ধগলিত মরদেহ উদ্ধার করে পুলিশ। ঘটনায় জড়িত দুজনকে আটকও করা হয়েছে।
১২ সেপ্টেম্বর বৃহস্পতিবার রাতে আশুলিয়ার মনোদিয়া চওড়াপাড়া এলাকায় নিহতের ননদের বাড়ির উঠান থেকে তার মরদেহ উদ্ধার করা হয়।
নিহত রেহেনা পারভিন ঢাকার নবাবগঞ্জ উপজেলার পাতিলা গ্রামের লেহাজ উদ্দিনের মেয়ে এবং তিনি তার চার সন্তান ও স্বামী আওলাদ হোসেনকে নিয়ে অস্ট্রেলিয়া থাকতেন। তিনি বাংলাদেশি বংশোদ্ভূত অস্ট্রেলিয়ার নাগরিক ছিলেন।
আটকরা হলেন, নিহতের ননদ পাপিয়া আক্তার এবং চাচা আমজাদ হোসেন।
পুলিশ জানায়, গত ২৯ জুন রেহেনা পারভিন অস্ট্রেলিয়া থেকে বাংলাদেশে আসেন। উঠেন বাবার বাড়িতে। পরের দিন ৩০ জুন তার বাবার বাড়ি থেকে শ্বশুড় বাড়ি যান। শ্বশুড় বাড়িতে কিছু দিন থাকার পরে ৩ জুলাই তিনি বাবার বাড়িতে ফোনে জানান, তাকে মারধর করা হয়েছে। এরপর থেকেই তার কোনো খোঁজ পাওয়া যাচ্ছিল না। ঘটনার পর ৩ জুলাই ঢাকার নবাবগঞ্জ থানায় একটি নিখোঁজ ডায়েরি করা হয় তার পরিবারের পক্ষ থেকে। এরপর ৮ সেপ্টেম্বর তার স্বামী আওলাদ হোসেন, চাচা আমজাদ হোসেন, ননদ পাপিয়া আক্তার এবং মাকসুদাসহ চারজনের নাম উল্লেখ করে মামলা করা হয়। ওই মামলায় নিহতের চাচা আমজাদ হোসেন ও ননদ পাপিয়া আক্তারকে গ্রেফতার করে পুলিশ। পরে তাদের জিজ্ঞাসাবাদে তার মরদেহের খোঁজ মেলে। তবে রেহেনার স্বামী পলাতক রয়েছেন।
নিহতের মা আইরিন আক্তার জানান, ১৬ বছর আগে রেহেনাকে পড়াশোনার জন্য অস্ট্রেলিয়া পাঠিয়েছিলাম। সেখানেই আওলাদেরব সাথে তার পরিচয় হয় এবং তারা বিয়ে করেন। তাদের ঘরে চার সন্তান আছে। স্বামী-সন্তান নিয়ে সেখানেই বসবাস করতো রেহেনা। অস্ট্রেলিয়া থাকাকালে তার মেয়ে অনেক সম্পদের মালিক হন। সেই সম্পদের জন্যই তার মেয়েকে হত্যা করে গুম করেছে পাষণ্ডরা। তিনি অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চান।
নবাবগঞ্জ থানার এস আই নূর মোহাম্মদ খান জানান, ঘটনায় জড়িত দুজনকে গ্রেফতার করা হয় এবং তাদের দেয়া তথ্যমতে ওই নারীর মরদেহ উদ্ধার করা হয়। পারিবারিক কলহের জের ধরেই তাকে হত্যা ও মরদেহ মাটিতে পুঁতে রাখা হতে পারে। মরদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য মিটফোর্ড হাসপাতালের মর্গে পাঠানো হয়েছে।
ঢাকা জেলার সিনিয়র সহকারী পুলিশ সুপার (দোহার সার্কেল) মোহাম্মদ আশরাফুল আলম জানান, তাদের বেশিরভাগ সম্পত্তি দেশে থাকায় মাঝে মধ্যেই রেহেনা পারভিন দেশে আসতেন। তবে সেই সম্পত্তির অধিকাংশই রেহেনা পারভিনের নামে। এর জের ধরেই পূর্ব পরিকল্পিতভাবে তাকে তুলে নিয়ে হত্যা করে মরদেহ নির্মাণাধীন বাড়ির উঠানে পুঁতে রাখা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available