বিপ্লব তালুকদার (খাগড়াছড়ি) প্রতিনিধি: আবহাওয়া অনুকূলে থাকায় খাগড়াছড়িতে উৎপাদন বেড়েছে সজনে ডাঁটার। জেলার প্রত্যন্ত অঞ্চলের হাট-বাজারে প্রচুর পরিমাণে সজনে ডাঁটার দেখা মিলছে। প্রতিদিন জেলার বিভিন্ন অঞ্চলে যাচ্ছে সজনে ডাঁটা।
স্থানীয় ও চাষিরা জানান, অন্য বছরের তুলনায় এবার গাছে প্রচুর সজনে ডাঁটা ধরেছে। শহর থেকে গ্রাম পর্যন্ত সড়কের পাশে, ঘরের আনাচে-কানাচে প্রতিটি গাছে ঝুলছে সজনে ডাঁটা। এক সময় বাড়ির আশপাশের সীমানায় সজনের গাছ লাগানো হতো। তবে সময় পরিক্রমায় এবং চাহিদা থাকায় কৃষকরা ফসলি জমিতে সজনের চাষ করছেন। পরিকল্পিতভাবে সজনের চাষ করে লাভবানও হচ্ছেন তারা। খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় পাহাড়ের পাদদেশে বেড়েছে সজিনা চাষ। জুম বাগানের কিংবা বাড়িধারেও গাছ লাগিয়ে সজিনা চাষ করেছেন অনেকে।
খাগড়াছড়ি কৃষি গবেষণা তথ্য মতে, সজিনা ডাঁটা শুধু সবজি নয়,শক্তিশালী ভেষজ ও বটে। সাধারণত সজিনায় যেগুলি পাওয়া যায়, যেমন -কমলা-লেবুর সমপরিমাণ ভিটামিন সি, গাজরের চেয়ে ১,৩ গুণ বেশি ভিটামিন-এ, কলার চেয়ে ১,৫গুণ বেশি পটাশিয়াম,আমন্ড বাদামের চেয়ে ৪ গুণ বেশি ম্যাগনেশিয়াম, দুধের চেয়ে ৩,৫ গুণ বেশি ক্যালসিয়াম রয়েছে।
সজনা খাবার টেবিলে সবজি হিসেবেই বেশি ব্যবহার হয়। মার্চ থেকে আগস্ট পর্যন্ত সজিনা বাজারে প্রচুর পাওয়া যায়। এ সময় সবজির মধ্যে সজিনার যথেষ্ট কদর থাকে। আগাম সজিনা বাজারে নিতে পারলে আর্থিকভাবে প্রচুর লাভবান হওয়া যায়। সজিনা দিয়ে ডাল তরকারিটি সবচেয়ে জনপ্রিয়।
গুইমারা উপজেলার এক চাষি বলেন, বাড়ি আঙ্গিনা জুড়ে ৫-৬ বছর আগে কিছু সজিনা গাছ লাগিয়ে ছিলাম। আমি এর আগে জুম পাহাড়ে আম,আনারসসহ বিভিন্ন ফল মূলের চাষ করতাম। কষ্ট হলেও তেমন লাভ হত না সেসব ফল থেকে। তবে সজনা চাষ করে এক প্রতিবেশি প্রায় সময় সজনা বিক্রি করত ও বেশ লাভবান হত। তার থেকে সজনা চাষের সম্পর্কে ধারণা নিয়ে এখন বাড়িধারে গাছ লাগিয়ে মোটামুটি লাভ হচ্ছি।
খাগড়াছড়ি মাইচছড়ি ইউনিয়নে পাড়ায় গ্রামের ১২ হতে ১৫ টি পরিবারের সজিনা গাছ আছে। প্রত্যেক পরিবারের সর্বনিম্ন ১০ থেকে ২০টি সজিনা গাছ থাকে। গত বছরের সজনার দাম ছিল প্রতি মণ ৬ হাজার টাকা। আর এ বছর কিছুটা দাম বাড়িয়ে প্রতিমণ ৭ হাজার টাকা হয়েছে।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, খাগড়াছড়ি বেশ কিছু পাড়া জুড়ের সজিনা গাছের সমারোহ। এ মৌসুমে ধুম পড়েছে সজিনা ছেড়ার। একজনের একটি গাছ থেকে ছিড়ে নিয়ে এসে অন্যজন বড় করে বাঁন দিচ্ছে। উত্তপ্ত রোদ পড়লেও তবুও লাভের আশায় হাসিমুখে ছিড়ে যাচ্ছেন চাষিরা। বিভিন্ন এলাকায় জুম চাষিরা সজিনা চাষে হয়ে উঠেছেন আগ্রহী।
খাগড়াছড়ি পার্বত্য জেলায় সজিনা আবাদ দিনকে দিন বৃদ্ধি পাচ্ছে। আম, আনারস, জুম পাশাপাশি সজিনা চাষের আগ্রহ বেড়েছে পাহাড়িদের। পাহাড়ের পাদদেশে আবাহাওয়া প্রতিকুলে থাকায় উঁচু উচুঁ পাহাড়ি এলাকায় দিনকে দিন সজিনা চাষের আবাদ বৃদ্ধি হচ্ছে। সজিনা গাছের তেমন পরিচর্চা করা লাগে না। শুধু লাগিয়ে দিলেই হয়। তবে, পাহাড়ি এলাকায় তুলনায় সমতল এলাকায় কম উৎপাদন লক্ষ্য করা যায়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available