বাগেরহাট প্রতিনিধি: বাগেরহাটে বাড়িঘর ভাঙচুর লুটপাটের অভিযোগে দ্রুত বিচার আদালতে আওয়ামী লীগের ২৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা করেছে মাসুম মোল্লা নামে এক ভুক্তভোগী । ১৭ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার বাগেরহাট জেলা দ্রুত বিচার আদালত জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মো. আসাদুর জামানের আদালতে এ মামলা দায়ের করেন।
বাদীপক্ষের আইনজীবীদের শুনানি শেষে বিচারক পিবিআইকে আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের আদেশ দেন। বাগেরহাট-১ আসনের আওয়ামী লীগের সাবেক এমপি শেখ হেলাল উদ্দিনের পিএস ফিরোজ জোমাদ্দার (৪৫) কে প্রধান আসামি করে আওয়ামী লীগের ২৮ জন নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেছে বাগেরহাট সদর উপজেলার কুলিয়া দাউড় গ্রামের আ. মালেক মোল্লার ছেলে বিএনপি নেতা মো. মাসুম মোল্লা।
অন্যান্য আসামিরা হচ্ছেন- জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সর্দার নাসির উদ্দিন (৪৮), জেলা তাতী লীগের সভাপতি ও বাগেরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর বাকি তালুকদার (৫৫), জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আবু বক্কার খান (৫০), জেলা কৃষক লীগের সভাপতি ও সদর উপজেলার ডেমা ইউনিয়ন পরিষদের আওয়ামী লীগ সমর্থিত চেয়ারম্যান মনি মল্লিকসহ আওয়ামী লীগ ও তার অঙ্গ সংগঠনের আরও ২৪ জনের নাম উল্লেখ করে এ মামলায় আসামি করা হয়েছে।
মামলার সূত্রে জানা যায়, বাদী ও তার ছোট দুই ভাই বিএনপি সমর্থন করার কারণে রাজনৈতিক প্রতিহিংসায় ২০১৩ সালের ২৪ ফেব্রুয়ারি সকাল ১১টা সময় মামলার ১নং আসামি সাবেক এমপি শেখ হেলাল উদ্দিনের পিএস ফিরোজ জোমাদ্দার ও ২নং আসামি জেলা যুবলীগের সভাপতি ও সাবেক সদর উপজেলা চেয়ারম্যান সর্দার নাসির উদ্দিনের হুকুমে মামলার ৩নং আসামি জেলা তাতী লীগের সভাপতি ও বাগেরহাট পৌরসভার কাউন্সিলর বাকি তালুকদার ও চার নং আসামি জেলা শ্রমিক লীগের সাধারণ সম্পাদক ও পৌর কাউন্সিলর আবু বক্কার খানের নেতৃত্বে অন্যান্য আসামীরা রাম দা, কুড়াল, হকিস্টিকসহ বিভিন্ন প্রকার দেশীয় অস্ত্র নিয়ে বাদী ও তার ভাইদের বাড়িতে ঢুকে এলোপাতাড়ি মারধর শুরু করে। এতে বাদী ও তার স্ত্রী গুরুতর আহত হয়।
এ সময় আসামীরা ঘরে ঢুকে স্বর্ণালংকার, টিভি, ফ্রিজ, ঘরের মালামাল লুট করে নেয় । এছাড়া বাদীর বাড়িতে থাকা চারটি গরুও নিয়া যায় । বাদীর ছোট দুই ভাই মাহামুদ মোল্লা ও মামুন মোল্লার ঘরের মালামাল ভাঙচুর ও লুটপাট চালায় । লুটপাট করা মালামাল নিয়ে যাওয়ার সময় মামলার এক নং আসামি সাবেক এমপি শেখ হেলাল উদ্দিনের পিএস ফিরোজ জোমাদ্দার বাদীকে সাত দিনের মধ্যে ২০ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে । চাঁদার টাকা না দিলে পরিবারসহ গ্রাম ছাড়া করে খুন করে ফেলার হুমকি দেয় । আসামীরা চলে যাওয়ার পর স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে চিকিৎসা করান। ঘটনার পরবর্তীতে দেশে আওয়ামী লীগ সরকারের দুঃশাসন কায়েম থাকায় কোথাও কোন প্রতিকার প্রার্থী হতে সাহস পায়নি বলে মামলায় উল্লেখ করে বাদী মাসুম মোল্লা।
বাদী পক্ষের আইনজীবী অ্যাড মুস্তাইনি বিল্লাহ বলেন, এ মামলার দীর্ঘ শুনানি শেষে আদালত এ মামলা পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশ (পিবিআই) কে তদন্ত করে মামলার আগামী ধার্য তারিখের মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দেন।
বাগেরহাট পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিকেশ (পিবিআই) এর পুলিশ সুপার আব্দুর রহমান বলেন, এ সংক্রান্ত কোন মামলা কপি আমাদের কাছে পৌঁছায়নি । হাতে পেলে আইন অনুযায়ী তদন্ত করে প্রতিবেদন আদালতে দেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available