মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জের সাটুরিয়া উপজেলায় শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুনে ঝলসে দেওয়ায় ঘটনায় ছয়দিন হাসপাতালে চিকিৎসাধীন থাকার পরে অবশেষে সেলিনা আক্তারও (৪৫) মারা গেছেন। ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আজকে দুপুরে তার মৃত্যু হয়।
এর আগে গত শুক্রবার সকালে তাদের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুনে ঝলসে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় অগ্নিদগ্ধ হয়ে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ঢাকার ধামরাই উপজেলার আমতা ইউনিয়নের রাজাপুর কয়লা গ্রামের হাসান আলীর স্ত্রী শারমিন আক্তার (৩০) ও তাঁর (শারমিন) চাচাতো ভাই রুবেল হোসেন (২৮) মারা গেছে।
এজাহার সূত্রে জানা যায়, প্রায় ১৪ বছর আগে ধামরাইয়ের রাজাপুর কয়লা গ্রামের জিন্নাহ খানের ছেলে হাসান আলীর সঙ্গে সাটুরিয়া উপজেলার গওলা গ্রামের মৃত আতাউর হোসেনের মেয়ে শারমিন আক্তারে বিয়ে হয়। এই দম্পতির মো. রায়হান ১০ বছরের এক ছেলে সন্তান রয়েছে। কয়েক বছর ধরে স্বামী ও স্ত্রীর মধ্যে দাম্পত্য কলহ দেখা দেয়। এ নিয়ে হাসান তাঁর স্ত্রী শারমিনকে অত্যাচার ও নির্যাতন করছিলেন। কিন্তু সন্তানের ভবিষ্যৎ চিন্তা করে গৃহবধূ শারমিন নির্যাতন সহ্য করেন। কিন্তু নির্যাতনের মাত্রা বেড়ে গেলে সহ্য করতে না পেরে শারমীন স্বামীকে তালাক দেওয়ার সিদ্ধান্ত নেন। এর ধারাবাহিকতায় সম্প্রতি ছেলেকে নিয়ে শারমিন বাবার বাড়িতে চলে যান।
গত শুক্রবার সকালে হাসান গওলা গ্রামে শ্বশুরবাড়িতে যান। সেখানেও স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে ঝগড়া হয়। একপর্যায়ে শারমিন পাশের চাচার বাড়িতে যান। সকাল ১০টার দিকে হাসান চাচাশ্বশুরের ঘরের ভেতর গিয়ে শারমিনের শরীরে পেট্রল ঢেলে আগুন ধরিয়ে দেন। এ সময় শারমিনের চাচি সেলিনা আক্তার (৪৫) ও চাচাতো ভাই রুবেল তাঁকে উদ্ধার করতে গেলে তাদের শরীরেও কেরোসিন ঢেলে আগুন জ্বালিয়ে দেন হাসান। পরে প্রতিবেশীরা এগিয়ে এসে আগুন নেভানোর চেষ্টা করেন। ততক্ষণে তাঁদের তিনজনের শরীর আগুনে ঝলসে যায়। খবর পেয়ে স্থানীয় ফায়ার সার্ভিসের সদস্য ও প্রতিবেশীরা তাঁদের উদ্ধার করে সেলিনা ও রুবেলকে মানিকগঞ্জ কর্নেল মালেক মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে আসেন। আর শারমিনকে জেলা সদরের ২৫০ শয্যাবিশিষ্ট জেনারেল হাসপাতালে নেওয়া হয়। প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে দুপুরে তাঁদের উন্নত চিকিৎসার জন্য ঢাকার জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
এ ঘটনায় গত রোববার শারমিনের ভাই শামীম হোসেন বাদী হয়ে হাসানকে আসামি করে থানায় মামলা করেন। মামলার পরে আসামি হাসানকে টাঙ্গাইল থেকে গ্রেফতার করা হয়েছে। পেট্রল ঢেলে আগুনে ঝলসে দেওয়ার সময় তাঁর শরীরও সামান্য ঝলসে যায়। পুলিশ হেফাজতে মির্জাপুর উপজেলায় কুমুদিনী হাসপাতালে হাসানের চিকিৎসা চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available