বাবুল আকতার, খুলনা থেকে: খুলনা বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমানের দুর্নীতির তদন্ত শুরু হচ্ছে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর। তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক সাতক্ষীরা সিভিল সার্জন স্বাক্ষরিত এক দফতারাদেশে এ তদন্ত শুরু বিষয়টি জানানো হয়েছে। এদিকে ডা. মিজানের সকল সম্পদের ও আয়-ব্যয়ের হিসাব তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি জোর দাবি জানিয়েছেন উপজেলাবাসী।
খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দফতর সূত্রে জানা যায়, বটিয়ায়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিপরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অনিয়ম ও দুর্নীতিসহ নানা অভিযোগ করেন উপজেলাবাসী। বিষয়টি গণমাধ্যম কর্মী, রাজনৈতিক নেতা, মুক্তিযোদ্ধাসহ এলাকাবাসীর বক্তব্য নিয়ে একটি বেসরকারি টেলিভিশনে ডা. মিজানের বিরুদ্ধে সংবাদ প্রচার হয়। পরে নড়েচড়ে বসেন খুলনার স্বাস্থ্য বিভাগ। ডা. মিজানের বিরুদ্ধে দুর্নীত ও অনিয়ম তদন্ত করার জন্য খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালক ডা. মো. মনজুরুল মুরশিদ ৩ সদস্য বিশিষ্ট একটি কমিটি গঠন করেন । যার দফতরাদেশ নং-৪৫.৪০.০০০০.০০২, তারিখ -১৫/০৯/২০২৪।
তদন্ত কমিটিতে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. আঃ সালাম সভাপতি, সাতক্ষীরা সদর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিপরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মো. ফরহাদ জামিল ও সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন অফিসের মেডিকেল অফিসার ডা. ইসমত জাহান সুমনা সদস্য হিসেবে রয়েছেন। বিষয়টি সরেজমিনে তদন্তপূর্বক আগামী ১০ কর্মদিবসের মধ্যে প্রতিবেদন দালিখ করার জন্য নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খুলনা বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর থেকে পত্রাদেশ পাওয়ার পর আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর তদন্ত শুরুর সিদ্ধান্ত নিয়েছেন কমিটির সভাপতি ডা. মো. আ. সালাম। তদন্ত কার্যক্রম সম্পাদন প্রসঙ্গে বুধবার বিকালে এক দফতরাদেশের মাধ্যমে বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. মিজানুর রহমানকে জানানো হয়েছে।
এ বিষয়ে সাতক্ষীরার সিভিল সার্জন ডা. মো. আ. সালাম জানান, ডা. মিজানুর রহমানের দুর্নীতির তদন্ত করার জন্য বিভাগীয় স্বাস্থ্য পরিচালকের দপ্তর থেকে ৩ সদস্য বিশিষ্ট কমিটি গঠন করেছে। আমি ওই তদন্ত কমিটির সভাপতি। দ্রুত তদন্তের কার্যক্রম শুরু করার কথা ছিল। অন্যান্য আরও তদন্ত থাকার কারণে আগামী ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে তদন্ত কার্যক্রম শুরু করবো। এলাকাবাসীর পক্ষ থেকে যে সকল ব্যক্তি দুর্নীতির অভিযোগ করেছেন তাদের সাক্ষাৎকার নেয়া হবে। এছাড়া ওই দিন সকাল ১১টায় ডা. মিজান সহ তদন্তের সাথে সংশ্লিষ্ট সকল কর্মকর্তা, কর্মচারীদেরকেও উপস্থিত থাকতে বলা হয়েছে।
এদিকে এলাকাবাসী জানান, আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে ৩৩ স্বাস্থ্য ক্যাডারে চাকরি হয় মিজানুর রহমানের । শেখ হাসিনা সরকারের সময় সর্বোচ্চ সুবিধা ভোগ করেন এই স্বাস্থ্য কর্মকর্তা। চাকুরির ১০ বছরে আঘাত সম্পদ বানিয়েছে বলে অভিযোগ করেন এলাকাবাসী।
তারা আরও জানান, ডা. মিজান দীর্ঘদিন ফুলতলা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের আরএমও এর দায়িত্বে ছিলেন। পরে খুলনা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের আরএমও এর দায়িত্বে ছিলেন। এর পরে পরে তিনি বটিয়াঘাটা উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা দায়িত্ব পালন করছেন। আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে সর্বোচ্চ সুবিধা নিয়ে পাহাড় সমান সম্পদ বানিয়ে এখন তিনি ভোল পাল্টিয়েছেন। এই দুর্নীতিবাজ ডা. মিজানুর রহমানের সকল সম্পদের ও আয়-ব্যয়ের হিসাব তদন্ত করার জন্য দুর্নীতি দমন কমিশনের প্রতি জোর দাবিও জানান উপজেলাবাসী।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available