লক্ষ্মীপুর প্রতিনিধি: লক্ষ্মীপুরের শিক্ষার্থীদেরকে মোবাইল আসক্তি থেকে ফেরাতে আধুনিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেছেন সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা ইউএনও আরিফুর রহমান। উপজেলার ২১টি ইউনিয়নের বাছাইকৃত ২১টি স্কুলে এমন নান্দনিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করবেন বলে জানা গেছে।
শিক্ষার্থীদের ভালো লেখা পড়ার কথা ভেবে এমন অপ্রত্যাশিত এবং যুগ উপযোগী উদ্যোগকে স্বাগত জানিয়েছে লক্ষ্মীপুর জেলাবাসী। ইউএনও আরিফুর রহমান লক্ষ্মীপুরে যোগদানের পরপরই উপজেলার বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান ভিজিটে যান। ভিজিটে গিয়ে জানতে পারেন প্রত্যেকটি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানের শিক্ষার্থীরা মোবাইলে ব্যস্ত সময় পার করছেন। এসময় শিক্ষার্থীদের মোবাইলে আসক্তির বিষয়টি তার নজরেও পড়ে।
কয়েকটি বিদ্যালয়ে খবর নিয়ে দেখেন কোনো বিদ্যালয়ে ভালো কোনো লাইব্রেরি নেই। পরবর্তীতে তিনি চিন্তা করেন বিদ্যালয়গুলোতে আধুনিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে ভালো মানের কিছু বই রাখলে শিক্ষার্থীরা বই পড়াতে মনোযোগী হবে। ধীরে ধীরে তারা মোবাইল আসক্তি থেকে ফিরে আসবে। যেই কথা সেই কাজ, সদর উপজেলার ২১টি বাছাইকৃত স্কুলে তিনি আধুনিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করার উদ্যোগ নেন।
ইতোমধ্যে পাঁচটি স্কুলে আধুনিক লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করে সেখানে ভালো মানের আধুনিক মানের এবং ইসলামী বইসহ বিভিন্নরকম বই সেখানে রেখেছেন। বাকি ১৬টি স্কুলে ধারাবাহিকভাবে বাস্তবায়িত হবে বলে তিনি জানান। সম্প্রতি বৈষম্যহীন বাংলাদেশ লাইব্রেরি উদ্বোধন করলেন লক্ষ্মীপুর জেলার সাবেক ডিসি সুরাইয়া জাহান।
আনুষ্ঠানিকভাবে লাইব্রেরি উদ্বোধনের পর থেকে শুরু করে ধারাবাহিকভাবে লক্ষীপুরের বিভিন্ন বিদ্যালয়ের এই লাইব্রেরি বাস্তবায়নের কার্যক্রম শুরু হয়েছে। ইতোমধ্যে ৫টি লাইব্রেরির কাজ বাস্তবায়ন হয়েছে। লাইব্রেরি সাজাতে গত বুধবার নানানরকম বই নিয়ে হাজির হন দালাল বাজার ফাতেমা বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়। শিক্ষার্থীদের সাথে নিয়ে ওই লাইব্রেরিতে বিভিন্ন তাকে তাকে বিভিন্ন রকম বই সাজিয়ে রাখেন।
এর মধ্যে প্রতিষ্ঠার দুই একদিনের মাথায় দেখা যায় আমূল পরিবর্তন শিক্ষার্থীরা মোবাইলের বদলে বই নিয়ে বই পড়তে দেখা যায়। শিক্ষার্থীরা বলেন, এমন কিছু বই আছে যা আমাদের জ্ঞান অর্জনে অন্যতম ভূমিকা পালন করবে। আবার অনেক শিক্ষার্থী বলেন, আমাদের স্কুলে এমন একটি লাইব্রেরি হওয়াতে আমাদের উপকার হয়েছে। মোবাইলের বদলে আমরা বই পড়ে জ্ঞান অর্জন করতে পারব। কর্তৃপক্ষকে আমরা ধন্যবাদ জানাই।
দালাল বাজার ইউনিয়নের চেয়ারম্যান নজরুল ইসলাম বলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান চমৎকার একটি উদ্যোগ নিয়েছেন যা শিক্ষার্থীদের জন্য কল্যাণ বয়ে আনবে। তিনি আরো বলেন, সদর উপজেলা ইউএনও আরিফুর রহমানের মতন প্রত্যেকটি উপজেলার উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাগণ যদি স্কুলগুলোতে এভাবে লাইব্রেরি প্রতিষ্ঠা করেন তাহলে শিক্ষার্থীরা মোবাইলের আসক্ত থেকে এবং অপসংস্কৃতি থেকে বেরিয়ে আসবে।
সদর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা আরিফুর রহমান বলেন, আমি যোগদানের পরপরই বিভিন্ন স্কুলে পরিদর্শনে যাই এবং আমি শিক্ষার্থীদের সাথে কথা বলি বিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা আমাকে বিভিন্ন বিষয় শেয়ার করেন। এছাড়াও আমি দেখলাম শিক্ষার্থীরা মোবাইলের প্রতি আসক্তি হয়ে পড়েছে। আমি চিন্তা করে দেখলাম প্রত্যেকটি বিদ্যালয়ে ভালো কোনো লাইব্রেরি নেই এবং ভালো মানের কোনো বই নেই। তাই আমার এই উদ্যোগ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available