বাউফল (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: সুবর্ণা একাদশ শ্রেণির শিক্ষার্থী। বাড়তি কিছু উপার্জনের পথ খুলবে, এই ভেবে বিন মূল্যে সেলাই মেশিনের কাজ শেখার জন্য ভর্তি হয়েছিলেন। পরে স্বল্প মূল্যে সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা বলে তার কাছে ২ হাজার ৫০০ টাকা চান প্রশিক্ষণের দায়িত্বে থাকা এক ব্যক্তি। সুবর্ণা হাত খরচ থেকে জমা করা টাকা এনে ওই ব্যক্তির কাছে দেন।
গত ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সেলাই মেশিন দেওয়ার কথা ছিল। কিন্তু মেশিন নিতে এসে দেখেন কার্যালয় বন্ধ। পরে মুঠোফোনে যোগাযোগ করে বন্ধ পান প্রশিক্ষকদের ফোন।
এভাবে পটুয়াখালীর বাউফল উপজেলার ১০৩ কিশোরী ও নারী উদ্যোক্তার কাছ থেকে আড়াই লাখ টাকার বেশি হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে সেন্ট পালস মেশিন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নামের একটি প্রতিষ্ঠানের বিরুদ্ধে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীরা ২৪ সেপ্টেম্বর মঙ্গলবার সন্ধ্যার দিকে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) ও বাউফল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তার (ওসি) কাছে লিখিত অভিযোগ দিয়েছেন।
ভুক্তভোগীদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, এলাকায় বিনামূল্যে সেলাইয়ের কাজ, ব্লক ও বাটিকের কাজ, দেশি-বিদেশি রান্না ও বিউটি পারলারের কাজ শেখানোর জন্য প্রচারপত্র বিলি ও মাইকিং করে সেন্ট পালস মেশিন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার। এ সময় বলা হয় প্রতিষ্ঠানটির প্রধান কার্যালয় খুলনায়। ১২ সেপ্টেম্বর বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নাজিরপুর ইব্রাহিম সেলিম স্মৃতি দাখিল মাদ্রাসার মিলনায়তনকক্ষে প্রশিক্ষণ শুরু হয়। দুটি কেন্দ্রে মোট ১০৩ জন প্রশিক্ষণার্থী অংশ নেন। তাদের সবাই নারী। চারজন তাদের প্রশিক্ষণ দিতেন।
ভুক্তভোগীরা বলেন, 'বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ নিতে আসছিলাম। প্রশিক্ষণের সামগ্রী কেনার জন্য টাকা চেয়েছে। এ কারণে সরল বিশ্বাসে টাকা দিয়েছি। মঙ্গলবার প্রশিক্ষণ নিতে এসে জানতে পারি, লোকজন টাকা নিয়ে পালিয়ে গেছে। এভাবে প্রতারিত হব, বুঝতে পারিনি।'
এলাকার কয়েকজন নারী বলেন, বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও নাজিরপুর ইব্রাহিম সেলিম স্মৃতি দাখিল মাদ্রাসায় প্রশিক্ষণ হচ্ছিল, কোনো ভাড়াবাড়িতে নয়। তাই তাঁরা প্রতিষ্ঠানটিকে সহজে বিশ্বাস করেন। না জেনেশুনে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ অনুমতি দেওয়ায় তারা প্রতারিত হয়েছেন।
বাউফল সরকারি মডেল মাধ্যমিক বিদ্যালয় প্রধান শিক্ষক নার্গিস আক্তার জাহান বলেন, যেহেতু বিনামূল্যে প্রশিক্ষণ দেওয়ার কথা বলে সেন্ট পালস মেশিন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টার নামের ওই প্রতিষ্ঠানটি, তাই অনুমতি দিয়েছেন।
মাদ্রাসার সুপার মোহাম্মদ রফিক উল্লাহ বলেন, তাঁরা বুঝতে পারেননি এমনটি হবে।
সেন্ট পালস মেশিন টেকনিক্যাল ট্রেনিং সেন্টারের কারও সঙ্গে এ বিষয়ে কথা বলা যায়নি।
ইউএনও মো. বশির গাজী বলেন, যাচাই-বাছাই না করে এভাবে প্রশিক্ষণের জন্য শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের অনুমতি দেওয়া ঠিক হয়নি। যারা না জেনে টাকা দিয়েছেন তারাও ঠিক করেননি।
ওসি কামাল হোসেন বলেন, এ ঘটনায় লিখিত অভিযোগ পেয়েছেন। ঘটনার সঙ্গে জড়িত ব্যক্তিদের শনাক্ত করার কাজ শুরু করেছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available