স্টাফ রিপোর্টার, ফরিদপুর: এক বছর আগে সংসারের হাল ধরতে ভূমধ্যসাগর পথে ইতালি পাড়ি জমিয়েছিলেন ফরিদপুরের সালথা উপজেলার যদুনন্দী ইউনিয়নের বড়খারদিয়া গ্রামের সেলিম শেখ (৩২)। ৬ অক্টোবর রাতে পরিবার তাঁর মৃত্যুর খবর জানতে পেরেছে।
ইতালি থেকে সেলিম শেখের প্রতিবেশী সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হওয়ার খবর পরিবারকে জানান। কিন্তু কোথায় কীভাবে আছে তার মরদেহ, তা জানেন না স্বজনেরা। মরদেহ ফিরিয়ে আনতে সরকারের সহযোগিতা চেয়েছেন পরিবারের সদস্যরা।
৯ অক্টোবর বুধবার রাতে সেলিমের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করে যদুনন্দী ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান মো. রফিকুল ইসলাম জানান, ‘সেলিম আমার প্রতিবেশী। তিনি ইতালিতে থাকতেন। গত ৬ অক্টোবর সোমবার ইতালির একটি শহরে মর্মান্তিক সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত হয়েছেন বলে জানতে পেরেছি। তাঁর মুত্যুর খবরে পরিবারের সদস্যরা শোকে পাথর হয়ে আছে। দুদিন ধরে সেলিমের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য ইতালিতে থাকা প্রবাসী ভাইদের সঙ্গে যোগাযোগ করা হচ্ছে।’
নিহত সেলিম শেখ ওই গ্রামের সেখেন শেখের বড় ছেলে। মা-বাবাসহ তাঁর স্ত্রী ও দুটি ছেলে সন্তান রয়েছে। সেলিমের মৃত্যুর খবরে দুদিন ধরে মরদেহ ফিরে পাওয়ার প্রহর গুনছেন স্বজনেরা।
নিহতের স্বজনেরা জানান, তিন ভাই, এক বোনের মধ্যে সবার বড় সেলিম। তাঁর স্ত্রী ও দুটি শিশু ছেলে সন্তান রয়েছে। যে কারণে সংসারের দায়িত্ব ছিল তাঁর বেশি। তিনি স্থানীয় ময়েনদিয়া বাজারে একটি মুদিদোকান করতেন। তবে দোকান করে পোষাতে পারছিলেন না। তাই স্ত্রী-সন্তানদের ভালো রাখতে ও উন্নত জীবনের আশায় ইতালি যাওয়ার পরিকল্পনা নেন তিনি। কিন্তু সরাসরি ইতালি যাওয়ার মতো অর্থ ছিল না তাঁর।
এক বছর আগে দালালদের মাধ্যমে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে সাগরপথে লিবিয়া হয়ে ইতালিতে যান তিনি। সেখানে গিয়ে অন্তত পাঁচ মাস শরণার্থী ক্যাম্পে আটকে ছিলেন। পরে দীর্ঘ কয়েক মাস চেষ্টার পর অনুমতি পেয়ে সেখানে কাজ শুরু করেন তিনি।
সেলিমের বাবা সেখেন শেখ বলেন, ‘আমার ছেলে ইতালিতে সড়ক দুর্ঘটনায় মারা গেছে, এটাই শুধু জানি। এখন তার মরদেহ কোথায় আছে, তা-ও জানি না। আমার সন্তানের মরদেহ দেশে ফিরিয়ে আনার জন্য সরকারের সহযোগিতা চাই।’
তিনি আরও বলেন, ৬ অক্টোবর রাতে তাঁদের বাড়িতে ফোন আসে। এলাকার এক প্রতিবেশী ফোন করে সড়ক দুর্ঘটনায় ছেলের নিহতের খবর জানান।
ফরিদপুরের সালথা উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আনিচুর রহমান বালী জানান, সেলিমের মরদেহ দেশের ফিরিয়ে আনার জন্য যদি তাঁর পরিবার প্রবাসীকল্যাণ ও বৈদেশিক কর্মসংস্থান মন্ত্রণালয়ে আবেদন করেন, তাহলে সর্বোচ্চ সহযোগিতা পাবেন বলে আমি মনে করি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available