কুষ্টিয়া প্রতিনিধি: অন্তর্বর্তী সরকারের মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা মিস ফরিদা আখতার বলেছেন, ‘অন্তর্বর্তীকালীন সরকার যদি ঠিকঠাক কাজ করতে না পারে, আপনারা আমাদের ধরবেন। এই যে ছাত্র-জনতার রক্তের ওপর আমরা যে সরকার গঠন করেছি, দায়িত্ব পেয়েছি। তা দায়সারা হতে পারে না।’
১৭ অক্টোবর বৃহস্পতিবার রাতে কুষ্টিয়ার কুমারখালীর ছেঁউরিয়ায় বাউল সম্রাট ফকির লালন শাহের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে তিন দিনব্যাপী আলোচনা সভা, সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠান ও গ্রামীণ মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি এ কথা বলেন।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানের আলোচনা সভার ব্যানারে বাউল সম্রাট লেখা থাকায় তিনি দুঃখ প্রকাশ করে বলেন, ফকির লালন শাহ সম্রাট ছিলেন না, ‘ফকির লালন শাহ ছিলেন সাধক। তিনি সব সাধকের উপরে ছিলেন। তাঁর বাণী সমাজের সকল ক্ষেত্রে বিদ্যমান। আমরা যদি লালনকে ভালোবাসি বলি, তাহলে নারীর ওপর অন্যায়, অত্যাচার, নির্যাতন করতে পারি না। কৃষিকাজে বিষ দিয়ে, নদীতে বিষ দিয়ে মাছ মারতে পারি না।’
এ সময় তিনি আরও বলেন, ফকির লালন শাহ ছিলেন বৈষম্যবিরোধী। তিনি (লালন) ১৩৪ বছর আগেই সকল বৈষম্যের বিরুদ্ধে কথা বলে গেছেন।
সাংস্কৃতিক বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের সহযোগিতায় অনুষ্ঠানমালার আয়োজন করে জেলা প্রশাসন। অনুষ্ঠানে ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক শারমিন আখতারের সভাপতিত্বে সেখানে অতিথিরা বক্তব্য দেন।
আলোচনা সভা শেষে বাউল ও লালন অ্যাকাডেমির শিল্পীরা সেখানে লালনের গান পরিবেশন করেন। বাউল সম্রাট ফকির লালন সাঁইয়ের ১৩৪তম তিরোধান দিবস উপলক্ষে মাজারকে সাজানো হয়েছে নতুন সাজে। লালন মাজারের প্রধান রাস্তাজুড়ে ও কালি নদীর পাড়ে বসেছে বিশাল গ্রামীণ মেলা। গান শোনার ফাঁকে সেখানে মানুষ কেনাকাটা করছেন। মূল মাজারে ও মাঠে দেশ ও বিদেশ থেকে আসা ফকির-বাউলরা আসন পেতে বসে আছে।
এছাড়াও তিরোধান দিবস উপলক্ষ্যে নদীর পাড় ঘেঁষে লালন মাঠে শতাধিক অস্থায়ী থাকার জায়গাও রয়েছে। অর্থাৎ লালন শাহের মাজার প্রাঙ্গণ, মাঠ, কালি নদীর পাড় ঘেঁষে বসেছে দূরদূরান্ত থেকে আসা ভক্ত-অনুসারীদের খণ্ড খণ্ড দল। সেখানে তারা খণ্ড খণ্ডভাবে দলবদ্ধ হয়ে লালন ফকিরের গান গাইছেন। গান ছাড়াও তারা লালন ফকিরের বাণী নিয়ে একে অপরের সঙ্গে আলোচনা করছেন। অনেকে আবার লালনের মত ও পথের দীক্ষা নিচ্ছেন। গুরুশিষ্য, ভক্ত-অনুসারী আর হাজারো দর্শনার্থীদের পদচারণায় মুখরিত সম্পূর্ণ এলাকা জুড়ে। লালন মেলার উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে ভক্ত-অনুসারীদের মিলন মেলায় পরিণত হয়েছে স্থানটি। আশপাশের এলাকায়ও হরেক রকমের পসরা সাজিয়ে বসেছেন ব্যবসায়ীরা।
লালন শাহের মাজারের সহকারী খাদেম রিপন শাহ বলেন, ‘মানবতা ও অসাম্প্রদায়িকতার যে বাণী লালন সাঁইজি প্রচার করে গেছেন তা আজও ফাল্গুন ধারার মত প্রবহমান।’ দেশ-বিদেশ থেকে আগত বাউলদের থাকা ও খাওয়ার সুব্যবস্থা করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available