আমতলী (বরগুনা) প্রতিনিধি: বরগুনার আমতলী উপজেলার গুলিশাখালী ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান অ্যাডভোকেট মো.নুরুল ইসলাম মিয়ার বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করা হয়েছে।
১১ এপ্রিল মঙ্গলবার নুরুল ইসলামসহ মোট ৯ জনের বিরুদ্ধে বরগুনা দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে চাঁদাবাজির অভিযোগে মামলা দায়ের করেছেন একই ইউনিয়নের গুলিশাখালী গ্রামের বাসিন্দা মো. সামসু পঞ্চায়েত। তিনি ঐ গ্রামের মৃত মজিদ পঞ্চায়েতের ছেলে ।
মামলা সুত্রে জানা যায়, মামলার ১ নং আসামী মো. নুরুল ইসলাম তার স্ত্রীর নামে গুলিশাখালীতে ন্যাশনাল ব্রিক ম্যানুফেকচার নামে একটি ইটভাটা পরিচালনা করে আসছিলেন। ইটভাটাটি সাধারণ জনগণ, বিদ্যালয়গামী শিক্ষার্থী ও এলাকার শিশুদের জন্য ক্ষতির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে।
ইটভাটার ৫০০ থেকে ১০০০ হাজার মিটারের মধ্যে দুটি সরকারী প্রাথমিক বিদ্যালয়, ১ টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়, ১টি বাজার, ব্যাংক, আশ্রয়কেন্দ্র এবং সরকারী উপ স্বাস্থ্য কেন্দ্রের অবস্থান।
ন্যাশনাল ব্রিকস ইটভাটার নির্গত ধোয়ায় সংশ্লিষ্ট গ্রামের ফলফলাদিসহ কৃষকদের ফসল উৎপাদন এখন ধ্বংসের মুখে। ইটভাটার ট্রাক ও ভারী যন্ত্রপাতি চালানোর কারণে এলজিইডি কর্তৃক নির্মিত সরকারি রাস্তাটি এখন ধ্বংসের পথে। নির্গত কালো ধোয়ার প্রভাবে এলাকার বৃদ্ধ, শিশু ও নারীরা আক্রান্ত হচ্ছেন বিভিন্ন রোগে ।
এ বিয়য়ে পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হলেও প্রশাসনের পক্ষ থেকে কোন ব্যবস্থা নেয়া হয়নি। এ বিষয়ে প্রতিকার চেয়ে একই গ্রামের আমান উল্লাহ লিটন বাংলাদেশ সুপ্রিম কোর্টের হাইকোর্ট বিভাগে একটি রিট পিটিশন দায়ের করেন, পিটিশন নং ১৬১৯/২০২৩।
আমান উল্লাহ লিটনের দায়ের করা রিট পিটিশনে গ্রামের ক্ষতিগ্রস্থদের গণ-স্বাক্ষরসহ জমা দেয়া হয়। উক্ত গণ-স্বাক্ষর দাতাদের তালিকায় ২ নং ক্রমিকে বাদীর স্বাক্ষর রয়েছে।
এছাড়া বাদী বিভিন্ন সময়ে ন্যাশনাল ব্রিক ম্যানুফেকচার নামক ইটভাটার পরিবেশ দূষণের বিষয়ে সাংবাদিকদের তথ্য দিয়ে সহায়তা করে ফলে বিভিন্ন পত্রিকায় একাধিক সংবাদ প্রকাশিত হয়। একারণে মামলার আসামীরা বাদীর উপর ক্ষিপ্ত হয়।
মো. সামচু পঞ্চায়েত অভিযোগ করেন, ঘটনার দিন গত ৩১ মার্চ শুক্রবার সকালে ৮ টায় ইটভাটার পশ্চিম পাশের পাকা সড়কে তাকে দেখতে পেয়ে পূর্ব পরিকল্পিতভাবে পথ রোধ করে আসামীরা। ভয় দেখাতে তার উপর অতর্কিত আক্রমন করে ১নং আসামী মোঃ নুরুল ইসলাম মিয়া। আসামী তার নিজের ব্যবহৃত লাল রঙের প্রাইভেট কার থেকে একটি শটগান বের করে বাদীর পেটে ঠেকায় এবং তার গতিরোধ করে। এসময় সে মামলার বাদী সামচু পঞ্চায়েতের পেটে গুলি করার হুমকি দেয়া হয় এবং তার কাছে ৫ লক্ষ টাকা চাঁদা দাবি করে আসামীরা। চাঁদার টাকা না দিলে এলাকাছাড়া করারও হুমকি প্রদান করে।
এসময় বাদীর ডাক চিৎকারে স্থানীয় লোকজন চলে আসায় আসামীরা বাদীকে জীবন নাশের হুমকি দিয়ে স্থান ত্যাগ করে। এ ঘটনায় ১১ এপ্রিল মঙ্গলবার সামসু পঞ্চায়েত বাদী হয়ে বরগুনা দ্রুত বিচার ট্রাইবুন্যালে মো. নুরুল ইসলাম (৫৫), মো. নুরুদ্দিন (৪৯), সালাম পঞ্চায়েত (৪৮), মো. মস্তফা(৪৮), মো.রোকন(৪৫), মো. ওহেদুল(৩৮), স্বপন মোল্লা(৪৫), মো.মোতালেব গাজী(৪২) এবং মো. শাহিন গাজী(৪০) কে আসামী করে একটি চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করেন।
ঘটনার বিষয় জানতে সাবেক ইউপি চেয়ারম্যান মো. নুরুল ইসলমামের মুঠোফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হলে তার মুঠোফোনটি বন্ধ পাওয়া গেছে। ফলে এ ঘটনায় তার বক্তব্য গ্রহণ সম্ভব হয়নি।
মামলায় বাদী পক্ষের আইনজীবি অ্যাডভোকেট সাইফুল ইসলাম সোহাগ জানান, আদালত মামলাটি আমলে নিয়ে পটুয়াখালী পিবিআইকে তদন্ত করে আদালতে প্রতিবেদন দাখিলের নির্দেশ দিয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available