টাঙ্গাইল প্রতিনিধি: কোটা সংস্কার আন্দোলনের সময় শিক্ষার্থীসহ সাধারণ মানুষের উপর নির্বিচারে গুলি চালায় পুলিশ, ছাত্রলীগ ও যুবলীগ। তখন ছাত্র জনতার আন্দোলন সরকার পতনের এক দফায় পরিণত হয়। আন্দোলন দমানোর জন্য কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ প্রত্যেক জেলায় জেলায় দায়িত্ব বণ্টন করে দেয়। আন্দোলন দমানোর পরামর্শ দাতা থাকেন ৫ জন। আওয়ামী লীগ পন্থি ৫০ জন ব্যবসায়ী অর্থ দিয়ে সহযোগিতা করন। সরাসরি আন্দোলন দমানোর জন্য মাঠে থাকবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ। তখন টাঙ্গাইল জেলার অর্থ সংগ্রহের প্রধান দায়িত্বে থাকেন- ভূঞাপুর উপজেলার ছাবিবশা গ্রামের ফয়েজ মল্লিকের ছেলে ফজলু মল্লিক।
সরেজমিনে জানা যায়, টাঙ্গাইল-২ আসনের সাবেক সংসদ সদস্য ছোট মনিরের সাথে তার গভীর ঘনিষ্ঠতা ছিল। হাসিনা সরকার পতন এক দফা আন্দোলন ঢাকা শহরে যখন ছাত্র, জনতার প্রায়ই নিয়ন্ত্রণে তখন কেন্দ্রীয় আওয়ামী লীগ আদেশ দেন রাজধানী ঢাকার আশেপাশে যত জেলার সংসদ সদস্য আছেন তাদের নিজস্ব ও ভাড়াটে লোকজন নিয়ে ঢাকা আসতে। তৎকালীন সংসদ সদস্য তানভীর হাসান ছোট মনিরের সাথে ৫ আগস্ট সরাসরি ঢাকার উত্তরায় আসেন ভাড়াটে খুনিসহ সন্ত্রাসী বাহিনী।
মামলার সূত্র মতে, ছাত্র জনতার এই যৌক্তিক আন্দোলনকে অন্যায় এবং অন্যায্য পথে দমন করার জন্য ৫ তারিখে পতন হওয়া আওয়ামী লীগ সরকারের উচ্চ মহল থেকে আইন প্রয়োগকারী সংস্থাগুলোকে এবং সরকারি দল আওয়ামী লীগ, যুবলীগ এবং ছাত্রলীগসহ তাদের অঙ্গসংগঠনের সন্ত্রাসীদেরকে সাধারণ নিরস্ত্র ছাত্র জনতার উপর লেলিয়ে দেয়। এর ফলে ৮০০ শতাধিক লোক নিহত হয়। হাজার হাজার ছাত্র ও সাধারণ জনতা আহত হয়।
৫ আগস্ট সোমবার জসিম উদ্দিন ফ্লাইওভারে উপরে পুলিশ সদস্যদের সাথে, আরো অজ্ঞাত ৪০/৫০ জন লোক জড়ো হতে থাকে। তখন উত্তর দিক থেকে কালো মাইক্রোবাস এসে থামে। মাইক্রোবাস থেকে তানভীর হাসান ছোট মনিরসহ সাইফুজ্জামান সোহেল, ক্যাডার আমিন, ফজলু মল্লিক ও বাবলু শেখ অস্ত্র হাতে নামে। তার ৫ থেকে ৬ মিনিট পর মো. হারুন অর রসিদ দক্ষিণ দিক থেকে সাদা প্রাইভেট কার নিয়ে ফ্লাইওভারের উপরে নামে। তারপর পুলিশ সদস্যদের তিনি হুকুম দেন বৈষম্য বিরোধী ছাত্র আন্দোলনের মিছিলে গুলি করতে। তখন অস্ত্র হাতে থাকা সকলেই গুলি চালায়। মো. হারুন-অর-রশিদের পর পর দুইটি গুলি লাগে জসিমের পায়ে হাটুর উপরে। জসিম উদ্দিনকে উত্তরা মহিলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে প্রাথমিক চিকিৎসা দেয়। সেখানে পরিস্থিতি অবনতি ঘটলে তাকে পঙ্গু হাসপাতালে নিয়ে গেলে ৬ আগস্ট দুপুর ৩টায় তার মৃত্যু হয়।
বাদীর সংশ্লিষ্ট আইনজীবী জানান, আসামীরা ১৯৭৩ এর ৩(২)/৪(১)/৪ (২) ধারা মোতাবেক অপরাধ ও গণহত্যার অপরাধ সংগঠিত করে। আশা করি, আদালত দ্রুত গ্রেপ্তারি পরোয়ানা জারি করবেন।
হত্যা মামলার বিষয়ে সরাসরি ফজলু মল্লিক জানান, আমার বিরুদ্ধে ঢাকায় হত্যা মামলা হয়েছে কিনা তা আমি জানি না। এই বিষয়ে আমি কোনো বক্তব্য দিতে রাজি নই।
মামলার বাদি তাছলিমা কাজী জানায়, আওয়ামী লীগ, যুবলীগ, ছাত্রলীগ বিশেষ করে ভাড়াটে খুনিরা আমাকে অনেক হুমকি দিচ্ছে মামলা তুলে নেওয়ার জন্য। আইনি প্রক্রিয়ার মাধ্যমে আমি শেষ পর্যন্ত লড়বো।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available