মাসুম লুমেন, স্টাফ রিপোর্টার (গাইবান্ধা): সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকের সংবাদ সম্মেলনের ব্যাখ্যার প্রতিবাদে সংবাদ সম্মেলন করেছেন গাইবান্ধা সদর উপজেলার আতিকুর রহমান। ১৩ এপ্রিল বৃহস্পতিবার উপজেলার কাবিলের বাজারে ইটভাটায় তিনি এ সংবাদ সম্মেলন করেছেন।
সংবাদ সম্মেলনে আতিকুর রহমান তার লিখিত বক্তব্যে বলেন, ‘বিদিশা সিদ্দিক সংবাদ সম্মেলন করে তার বিরুদ্ধে যে তথ্য দিয়েছেন, তা সত্য নয়। বিদিশা সিদ্দিক গণমাধ্যমে ছয় কোটি টাকা দেওয়ার কথা বললেও তিনি টাকা দিয়েছেন চার কোটি একুশ লাখ। যার ব্যাংক স্টেটমেন্ট সংরক্ষণ করা আছে। এছাড়া তিনি অপহরণের কথা অস্বীকার করলেও প্রকৃতপক্ষে তাকে অপহরণ করে জোরপূর্বক সাদা স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়া হয়েছে। আমার ভাই, বাবা, ভাটার ম্যানেজারসহ যারাই আমাকে উদ্ধার করতে গেছেন, তাদেরকেই আটক করে এসব অবৈধ চুক্তিপত্রে স্বাক্ষী করা হয়েছে। তাদেরকে জিম্মি করে মিথ্যে স্বাক্ষী নেওয়া হয়েছে বলে তারা ইতোমধ্যে স্বীকারও করেছেন। যার প্রমাণ আদালতে দেওয়া হবে।’
তিনি বলেন, ‘মেডাম টাকা দেওয়ার কথা ছিলো সাড়ে চার কোটি টাকা। কিন্তু তিনি টাকা দিয়েছে পর্যায়ক্রমে চার কোটি একুশ লাখ। সেই টাকা বিদিশা সিদ্দিক ইস্টার্ন ব্যাংক ও শাহাজালাল ইসলামি ব্যাংক থেকে আমার ইসলামি ব্যাংকের গাইবান্ধা শাখার অন্জুমানআরা ইন্টারপ্রাইজের একাউন্টে (একাউন্ট নাম্বার ১৮৭২) মোট চার কোটি একুশ লক্ষ টাকা আসে। কিন্তু মেডাম ৬ কোটি টাকা দেওয়ার দাবি করছেন, সেটি অসত্য এবং ভিত্তিহীন। এসবের কোন ব্যাংকি ডকুমেন্টস নেই।’
আতিকুর আরও বলেন, আমার সাথে মেডাম বা মেডামের কোন লোকের কললিস্ট চেক করলে জানা যাবে, ১ মার্চ থেকে ৭ মার্চ তারিখের মধ্যে কথা হয়েছে কিনা। গাড়ি নিয়ে ভাটায় আসার পর আমাকে গাড়িতে উঠতে বলে। পূর্বের সম্পর্ক থাকার কারণে আমি গাড়িতে উঠি, গাড়িতে ওঠার পর ম্যাডামের লোকজন আমার ফোন দুটি কেড়ে নেয় এবং আমাকে মারধোর করে আমার নাক ফাটিয়ে দেয়। সোজা ঢাকায় নিয়ে যায়। আমি নামাজ পড়তে চাইলে আমাকে নামাজ পড়তে দেয় না, বলে জীবনে অনেক নামাজ পারছিস। আর নামাজ পড়তে হবে না। যতটুকু সময় বাঁচবি কালেমা পড়। আমাকে ১০ দিন গুলশান-১-এর ৪ নাম্বার রোডের ১৭ নম্বার বাসায় দ্বিতীয় তলায় আটকিয়ে রাখে। এই ১০ দিনের মধ্যে আমার ছোট ভাইকে মেডাম ও মেডামে লোকজন ডেকে নিয়ে ৭ দিন অটিকিয়ে রাখে বারিধারা প্রেসিডেন্ট পার্কের বাসায়। পরে আমার বাবাসহ কিছু লোকজন গেলে ১৫ মার্চ একই খসড়া সমঝোতা চুক্তি শাহজাদার মাধ্যমে তৈরি করে। সেখানে ম্যাডাম স্বীকার করছে ৪ কোটি ৭১ লাখ ৪৬ হাজার ৫০০বুঝিয়া পেয়েছি। কিন্তু ১৫ তারিখে আমাকে আমার বাবা, ভাটা ম্যানেজার মোকসেদুল ইসলাম প্রতিবেশী মিজানুর ভাইকে আটকে রাখে। ১৬ তারিখ বিকেল পাঁচটার সময় আমাকে উদ্ধারকারী শাহজাদা খন্দকার ও আনারুল ইসলাম প্রামানিককে নিয়ে ৪০০ টাকার স্ট্যাম্পে ১৫ তারিখের খসড়াটি প্রিন্ট দিয়ে নিয়ে আসে।
সংবাদ সম্মেলনে আতিকুর রহমান নানা হুমকিসহ জীবনের নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন বলেও জানান।
প্রসঙ্গত, সাবেক রাষ্ট্রপতি প্রয়াত হুসাইন মুহাম্মদ এরশাদের সাবেক স্ত্রী বিদিশা সিদ্দিকের বিরুদ্ধে অপহরণ, নির্যাতন ও সুকৌশলে তুলে নিয়ে গিয়ে স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর নেওয়ার অভিযোগ এনে গাইবান্ধা আমলি আদালতে মামলা দায়ের করেন তার সাবেক কর্মচারী আতিকুর রহমান। এরই জের ধরে চলে পাল্টাপাল্টি সংবাদ সম্মেলন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available