কেরানীগঞ্জ (ঢাকা) প্রতিনিধি: ঢাকার দক্ষিণ কেরানীগঞ্জে হত্যা মামলার বাদী এখন স্বামী হত্যার অন্যতম আসামি। এই ঘটনায় স্ত্রীসহ চারজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। গ্রেফতাররা হলেন- স্ত্রী আসমা বেগম (৩০), মো. রাকিবুল ইসলাম (২২), মো. জিহাদ (২০) ও মো. শামীম (২১)।
১১ নভেম্বর দুপুরে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানার অফিসার ইনচার্জ মাজাহার সুমনের অফিস কক্ষে কেরানীগঞ্জ সার্কেল ও অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. জাহাঙ্গীর হোসেন এক সংবাদ সম্মেলনে এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, স্ত্রী আসমা বেগমের সাথে মোবাইল ফোনের মাধ্যমে বগুড়া জেলার শেরপুর থানার রাকিবুলের সাথে পরকীয়া প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এই সম্পর্কটি আসমা বেগমের স্বামী আলী মোল্লা জানতে পারে। এই বিষয়টি নিয়ে স্বামী-স্ত্রীর মধ্যে একাধিকবার ঝগড়াঝাঁটি হয়। দীর্ঘ দেড় বছর যাবত আসমা ও রাকিবুলের পরকীয়া সম্পর্ক চলে আসছিল। এই পরকীয়া প্রেমের বাধা হয়ে দাঁড়ায় স্বামী আলী মোল্লা। অবশেষে আসমা ও তার পরকীয়া প্রেমিক রাকিবুল পরিকল্পনা করে আলী মোল্লাকে হত্যা করার।
এই পরিকল্পনা অনুযায়ী গত ৬ নভেম্বর স্ত্রী আসমা তার পরকীয়া প্রেমিক রাকিবুল ও তার দুই সহযোগী মো. জিহাদ ও মো. শামীমকে ঢাকায় আসতে বলে। আসমার কথামতো রাকিবুল তার দুই সহযোগীকে নিয়ে কেরানীগঞ্জের রাজেন্দ্রপুরে আসে। রাত ৯টায় আসমার কথা অনুসারে রাকিবুল আসমার স্বামী অটো চালক আলি মোল্লাহকে হাসনাবাদ যাওয়ার জন্য মোবাইল ফোনে ডেকে আনে। রাকিবুলের ফোন পেয়ে আলী মোল্লা তার অটো নিয়ে রাজেন্দ্রপুর আসে।
এ সময় রাকিবুল তার দুই সহযোগী নিয়ে ওই অটোতে উঠে নাজিরাবাগ চন্ডীতলায় যায়। পূর্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী রাকিবুল ও তার দুই সহযোগীরা ধাড়ালো চাকু দিয়ে আলী মোল্লাকে এলোপাতাড়ি আঘাত করে। এতে আলী মোল্লা রক্তাক্ত ও গুরুতর আহত অবস্থায় মাটিতে পড়ে যায়। নাটক সাজিয়ে রাকিবুল আলী মোল্লার ফোনের মাধ্যমে আসমাকে ফোন দিয়ে বলে যে আপনার স্বামী নাজিরাবাগ চন্ডীতলায় রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে আছে।
খবর পেয়ে আসমা আলী মোল্লার ভাইয়ের ছেলেদের নিয়ে ঘটনাস্থলে এসে আলী মোল্লা কে উদ্ধার করে স্যার সলিমুল্লাহ মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে নিয়ে ভর্তি করলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় সেখানে সে মারা যায়। এই ঘটনায় আসমা বেগম বাদী হয়ে দক্ষিণ কেরানীগঞ্জ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। এই মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা তদন্ত করতে গিয়ে জানতে পারেন মামলার বাদী আসমা বেগম নিজেই এই হত্যাকাণ্ডের মূল হোতা। পরে তাকে গ্রেফতার করা হয়। তার স্বীকারোক্তি মোতাবেক গত ১০ নভেম্বর সকালে বগুড়া জেলার শেরপুর থানার খামারকান্দি এলাকা থেকে পরকীয়া প্রেমিক রাকিবুল ও তার দুই সহযোগী জিহাদ ও শামীমকে গ্রেফতার করা হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available