খোকসা (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: চলতি বছর জুলাই-আগস্টের গণআন্দোলন ও পরিবর্তিত সরকারে দীর্ঘদিনের বরফ গলেছে মানুষের নতুন করে ভাবনার। মানুষের মধ্যে প্রবণতা বেড়েছে নাগরিক অধিকার আদায় করে নেয়ার, প্রবণতা বেড়েছে ন্যায্য কথা বলারও। বিপরীতে নড়েচড়ে বসেছে রাষ্ট্র নিয়ন্ত্রিত সকল দপ্তর ও দাপ্তরিক দায়িত্বশীলরাও। সেই ধারায় সবার প্রচেষ্টা যেন সুন্দর বাংলাদেশের নিরাপদ একখণ্ড খোকসার।
গত ৫ আগস্ট শেখ হাসিনা সরকারের পলায়নের পর দেশে নানা ঘটনাক্রমে অস্থিতিশীলতা তৈরি হলে জননিরাপত্তা চরমভাবে বিঘ্নিত হয়। সুযোগ নেয়ার চেষ্টা করে আঁধার ঘরের কালোবাজারি আর চোর-ছিনতাইকারীরা। ১টি পৌরসভা ও ৯টি ইউনিয়নের নানা শ্রেণী-পেশার মানুষের সাথে কথা বলে আইনশৃঙ্খলা বিষয়ে এমন মন্তব্যই জানা গেছে।
অন্তর্বর্তীকালীন সরকার গঠনের পর দেশের অন্যান্য থানার মতো কাজে ফেরে খোকসা থানা পুলিশ। গত ১০ আগস্ট খোকসা থানা পুলিশ কাজে ফিরলেও শুরুতে খুব একটা প্রভাব রাখতে পারেনি আইনশৃঙ্খলা নিয়ন্ত্রণে। পরে জেলা পুলিশ ও সকল থানায় কর্মকর্তা পরিবর্তন হলে অন্যান্য থানার মতো কর্মোদ্যম ফিরতে শুরু করে খোকসা থানায়।
খোকসা সরকারি কলেজের ভূগোল বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. নজরুল ইসলাম বলেন, আগের চেয়ে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি অনেক উন্নত হয়েছে। তবে মাদক-সন্ত্রাসে জিরো টলারেন্স বাস্তবায়ন দরকার।
শোমসপুর মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক ও পৌর বাজারের বিশিষ্ট ব্যবসায়ী মো. শরিফুজ্জান বিল্লু বলেন, মানুষের মধ্যে অধিকার সচেতনতা বেড়েছে। আইনশৃঙ্খলা বাহিনী তাদের দায়িত্ব পালনের চেষ্টা করছে। কোনো কালো শক্তি আইনের ওপর প্রভাব বিস্তারের সুযোগ নেই। বর্তমানে খোকসার আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি বেশ উন্নত হয়েছে।
মাই টিভি ও যুগান্তরের খোকসা প্রতিনিধি লিপু খন্দকার বলেন, জেলা পুলিশের বিভিন্ন থানা ও ফাঁড়িতে পর্যাপ্ত জনবল এবং গাড়ি প্রয়োজন। মাঠে কাজ করা পুলিশের সাহস বাড়ানো দরকার। ধাপে ধাপে আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতির উন্নতি হচ্ছে।
খোকসা উপজেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সাবেক উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান সৈয়দ আমজাদ আলী জানান, রাজনীতির নাম ভাঙ্গিয়ে খোকসায় কোথাও কোনো মাদক-সন্ত্রাস, চাঁদাবাজির সুযোগ দেয়া হবে না। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীকে সর্বোচ্চ সহযোগিতার জন্য আমরা সাংগঠনিকভাবে প্রস্তুত আছি।
খোকসা থানার তথ্য অনুযায়ী, গত এক মাসে উল্লেখযোগ্য পরিমাণ গাঁজা, গাঁজার গাছ, ফেনসিডিল ও টাপেন্টাডল ট্যাবলেট উদ্ধার করা হয়েছে। একাধিক অস্ত্র উদ্ধারের অভিযান পরিচালিত হয়েছে। দুটি ভিন্ন এলাকায় দুই খুনের ঘটনায় এজাহারভুক্ত দুই আসামীকে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। ৪ জন নিখোঁজ ব্যক্তিকে উদ্ধার করে পরিবারের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে। গ্রেফতারি পরোয়ানাভুক্ত ও নিয়মিত মিলে অর্ধশতাধিকের বেশি আসামী আদালতে প্রেরণ করা হয়েছে। একটি ছিনতাইয়ের আসামীদের সনাক্ত করে ১ জনকে আটক করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available