মতলব উত্তর (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: শীতের আগমনী বার্তার সঙ্গে সঙ্গে চাঁদপুরের মতলব উত্তরে লেপ-তোশকের দোকানগুলোতে বেড়েছে ভিড়। কারিগরদের মধ্যে ফিরে এসেছে কর্মচাঞ্চল্য। সকাল থেকে রাত পর্যন্ত ব্যস্ত সময় পার করছেন কারিগরেরা।
অনেক কারিগর আবার ব্যস্ত পুরোনো লেপ-তোশক মেরামতে। প্রকৃতির নিয়ম অনুযায়ী পৌষ ও মাঘ মাস শীতকাল। তবে বাংলাদেশে কার্তিক ও অগ্রহায়ণ মাসের মাঝামাঝি দিক থেকেই শীতের আগমনী বার্তা শুরু হয়। তাই শীত মোকাবিলায় আগাম প্রস্ততি হিসাবে ব্যবসায়ীরা গ্রাহকের চাহিদা অনুযায়ী লেপ-তোশক তৈরি করে দোকানে মজুদ করে রাখছেন।
উপজেলার ছেংগারচর বাজার, সুজাতপুর বাজার, কালিপুর বাজার, নতুন বাজার, কালীর বাজারসহ বিভিন্ন গ্রামের হাট-বাজারে মানুষ তীব্র শীতের আশঙ্কায় নতুন লেপ-তোশক তৈরি করতে ভিড় করছেন। এসব পণ্য বছরের অন্য সময় বেচাকেনা কম হলেও শীত মৌসুমে বিক্রি কয়েক গুন বেড়ে যায়। কম্বলের তুলনায় বাজারে লেপের দাম কম হওয়ায় চাহিদা একটু বেশি। তুলা পিটিয়ে তা রং-বেরঙের কাপড় দিয়ে তৈরি লেপ-তোশকের কাভারে মুড়িয়ে সুঁই-সুতার ফোঁড়ে তৈরি করছেন কারিগরেরা।
উপজেলার ছেংগারচর বাজারের লেপ-তোশক তৈরির কারিগর মো. সফিকুর রহমান বলেন, বিত্তবানরা শীতের আগেই নতুন লেপ ও তোশক তৈরি করেন। অনেকেই পুরোনো লেপ-তোশকের কভার পাল্টিয়ে নিচ্ছেন। অগ্রহায়ণ মাসে এ সময় রাতে শীত পড়তে শুরু করায় কাজের চাপ অনেক বেড়েছে।
তিনি আরও বলেন, তুলার মান ও পরিমাণের ওপর নির্ভর করে লেপ-তোশক তৈরির খরচ। এ বছর জিনিসপত্রের দাম অনেকটা বেশি থাকায় স্বাভাবিকভাবেই লেপ-তোশক তৈরিতে খরচ এক হাজার টাকা থেকে শুরু করে দেড় হাজার টাকা পর্যন্ত। আর একটি লেপ-তোশক তৈরি করলে তাদের ৩০০ থেকে ৫০০ টাকা লাভ হয়।
উপজেলার নতুন বাজারে কথা হয় ক্রেতা আনোয়ারের সাথে তিনি বলেন, গত বছরের চেয়ে এবার লেপ-তোশকের দাম একটু বেশি। গত এক সপ্তাহ থেকে শীত অনুভূত হওয়ায় লেপ কিনতে এসেছি। তবে এবারে লেপের জন্য তুলার দাম গত বছরের চেয়ে ৫০ থেকে ৬০ টাকা বেশি।
ছেংগারচর বাজারে লেপ-তোশক বানাতে আসা রুপালি বেগম বলেন, এবার আগেভাগেই শীত পড়েছে। এর ওপর বাড়িতে থাকা লেপ-তোশক নষ্ট হয়ে গেছে। তাই লেপ-তোশক ও বালিশ বানাতে এসেছি। কিন্তু দোকানে এসে দাম শুনে অবাক হলাম। শিমুল তুলার কেজি ৫০০ টাকা, ফাইবার তুলা ২৮০টাকা এত দাম দিয়ে লেপ-তোশক বানানো সবার পক্ষে সম্ভব না। তুলার দামটা যদি কম হতো তাহলে সবার সুবিধা হতো।
আল্লাহু বেডিং এর মালিক আয়নাল হক দেওয়ান জানান, সাদা তুলা প্রতি কেজি ১৫০ থেকে ২০০ টাকা এবং রঙিন তুলা ৫০ থেকে ৮০ টাকা দরে বিক্রি হচ্ছে। গত বছর সাদা তুলা ৮০ টাকা এবং রঙিন তুলা ৪০ টাকা, শিমুল তুলা প্রতি কেজি ৪৫০ থেকে ৬০০ টাকা, কার্পাস তুলা প্রতি কেজি ৩০০-৩৫০ টাকা।
বর্তমানে তুলার বাজার ধরে ৫ থেকে ৬ হাত একটি তোশকের খরচ পড়ে ১ হাজার ৪০০ থেকে ১ হাজার ৬০০ টাকা এবং ৫ থেকে ৬ হাত একটি লেপের খরচ পড়ে ২ হাজার থেকে ২ হাজার ৫০০ টাকা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available