ফরিদপুর প্রতিনিধি: আবহমান গ্রাম বাংলায় খেজুরের রস আহরণের মধ্য দিয়ে গ্রামীণ জনপদে শুরু হয় শীতের আমেজ। এবছর পুরোপুরি শীত ও কুয়াশা আসার আগেই ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় অগ্রহায়ণ থেকেই খেজুরের রস সংগ্রহ ও গুড় তৈরিতে ব্যস্ত হয়ে পড়েছেন গাছিরা।
তাদের তৈরি ভেজালমুক্ত ও সুস্বাদু গুড় উপজেলার চাহিদা মিটিয়ে যাচ্ছে দেশের অন্যান্য অঞ্চলেও। মান ঠিক রাখতে গাছি ও তরুণ উদ্যোক্তাদের পরামর্শ দিয়ে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি বিভাগ।
কাকডাকা ভোরে খেজুরের রস সংগ্রহে বেরিয়ে পড়েন এ উপজেলার গাছিরা। গাছ থেকে নামিয়ে আনেন রস ভর্তি হাঁড়ি। এরপর তা নিয়ে ছুটেন চুলার কাছে। টিনের বড় পাত্রে রস ঢেলে জ্বাল দিয়ে শুরু হয় গুড় তৈরির প্রক্রিয়া। আস্তে আস্তে রস শুকিয়ে রূপ নেয় সুস্বাদু গুড়ে। উপজেলার বিভিন্ন জায়গায় দেখা মেলে এ কর্মযজ্ঞ। উপজেলাটিতে এ বছর প্রায় দুই হাজার খেজুর গাছ প্রস্তুত করছেন তারা। শীত মৌসুমে রস থেকে গুড় উৎপাদন করে প্রায় ৫ থেকে ৬ মাস স্বাচ্ছন্দ্যে জীবন-জীবিকা নির্বাহ করেন এখানকার গাছিরা।
স্থানীয় গাছিদের সাথে কথা হলে তারা বলেন, উৎপাদিত গুড় বাজারে বিক্রির পাশাপাশি স্থানীয়দের কাছেও বিক্রি করা হয়। ফরিদপুরের খেজুরের গুড় ও পাটালির খ্যাতি দেশজুড়ে। এখানকার গুড় কিনতে ভিড় করেন অন্য এলাকার মানুষও। এবছর প্রতি কেজি গুড় বিক্রি হচ্ছে ৬শ’ টাকা দরে। ক্রেতারা বলেন, ভেজালমুক্ত রস ও গুড় নেয়ার জন্য গাছি ও উৎপাদনকারীদের কাছে ছুটে আসা। আমরা ভালো মানের গুড় পেলে দামের কথা চিন্তা করি না।
উপজেলা কৃষি বিভাগ বলছে, নতুন করে খেজুর গাছ লাগানোর পরামর্শের পাশাপাশি নতুন উদ্যোক্তাদের সহযোগিতা দেয়া হচ্ছে। গুড়ের মান যাতে ঠিক থাকে তাই এ বিষয়ে তাদের সচেতন করা হচ্ছে।
ফরিদপুর জেলা কৃষি বিভাগের তথ্য মতে, ফরিদপুরে ছোট-বড় মিলিয়ে প্রায় দেড় লাখের বেশি খেজুর গাছ রয়েছে। এ বছর অন্যান্য বছরের তুলনায় ফলন অনেক বেশি বলেও জানান তারা।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available