নারায়ণগঞ্জ প্রতিনিধি: নারায়ণগঞ্জের সিদ্ধিরগঞ্জে মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়ম, দুর্নীতি ও এসএসসি ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত ফি আদায়ের অভিযোগে প্রধান শিক্ষকসহ জড়িতদের বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছেন স্কুলের শিক্ষার্থীরা।
৫ ডিসেম্বর বৃহস্পতিবার স্কুলের মাঠে এ বিক্ষোভ করেন শিক্ষার্থীরা। শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, স্কুলের প্রধান শিক্ষক, স্কুলের দাতা সদস্য ও সাবেক ম্যানেজিং কমিটির সদস্যরা বিভিন্ন সময় উন্নয়নের নামে লাখ লাখ টাকা লুটপাট করেছেন। স্কুল সম্প্রসারণের জন্য জমি ক্রয়ের নামে লাখ লাখ টাকা দুর্নীতি করেছেন তারা। এখন আবার এসএসসি ফরম ফিলাপের জন্য অতিরিক্ত ফি আদায় করছেন।
মিজমিজি পাইনাদী রেকমত আলী উচ্চ বিদ্যালয়ে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থী মো. আদনান বলেন, ‘আমরা খবর পেয়েছি, স্কুল ম্যানেজিং কমিটির ১০ জন দাতা সদস্যের কাছ থেকে স্কুল ফান্ডের জন্য জনপ্রতি ২ লাখ টাকা করে ২০ লাখ টাকা নেয়া হয়। ওই ২০ লাখ টাকা থেকে তারা ১৩ লাখ টাকা সরিয়ে ফেলেছেন। এছাড়াও স্কুলের উন্নয়নের জন্য সরকার থেকে ২০ লাখ টাকা দেওয়া হয়। এসব টাকা কোন খাতে ব্যয় হয়েছে তার কোনো হদিস নেই। জানতে চাইলে, স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী, সহকারী শিক্ষক আব্দুল মতিন, সহকারী শিক্ষিকা পারভীন, জসিম উদ্দিন ও আরিফুজ্জামান আমাদের হত্যা মামলার ভয় দেখান।’
এদিকে নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক শিক্ষার্থী জানান, ‘স্কুলের প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী ও স্কুলের দাতা সদস্যরা মিলে আমাদের শ্রেণির কক্ষে বাহিরাগতদের দিয়ে পোশাক তৈরির কারখানা ভাড়া দিয়েছেন। প্রতিমাসে তারা কারখানা মালিকের কাছ থেকে ভাড়া নিচ্ছেন। কিন্তু এই টাকা স্কুলের কোনো উন্নয়নে খরচ করছেন না। স্কুলের দাতা সদস্য ও স্কুল ম্যানেজিং কমিটির সাবেক সভাপতি আব্দুর রহিম স্কুলের প্রধান শিক্ষকের কক্ষে একটি আলাদা চেয়ারে বসে নিয়মিত অফিস করছেন।’
বিক্ষোভে অংশ নিয়ে শিক্ষার্থীরা জানায়, এসএসসি ফরম ফিলামে বিজ্ঞান বিভাগে সরকার নির্ধারিত ২৪৪০ টাকার স্থলে নিচ্ছেন ২৫০০-২৬০০ এবং আর্স ও কমার্স ২১৪০ টাকার স্থলে ২৫০০-২৬০০ টাকা নিচ্ছেন।
অনিয়ম, দুর্নীতি ও এসএসসি ফরম ফিলাপের অতিরিক্ত ফি আদায়ের বিষয়ে জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মোহাম্মদ আলী বিষয়টি অস্বীকার করে বলেন, ‘সকল আয়-ব্যয়ের হিসাব রয়েছে। কোন প্রকার অনিয়ম ও দুর্নীতি হয়নি। তবে যে অতিরিক্ত ফি আদায় করা হয়েছিল তা শিক্ষার্থীদের ফিরিয়ে দেওয়া হবে।’
স্কুলের ম্যানেজিং কমিটি সাবেক সভাপতি ও দাতা সদস্য আব্দুর রহিম বলেন, ‘সরকারিভাবে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণের জন্য কিছু মেশিনারিজ দেয়া হয়েছে। সে মেশিন দিয়ে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ দেওয়া হচ্ছে।’
বাস্তবে শিক্ষার্থীদের প্রশিক্ষণ না দয়ে বহিরাগতদের কাছে গার্মেন্ট ভাড়া দেওয়া হয়েছে বলে এ অভিযোগের ব্যাপারে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি এমনিতেই স্কুলে নিয়মিত যাই, শিক্ষার্থীরা নিয়মিত ক্লাসে আসছে কিনা জানতে। অনিয়মের বিষয়ে তিনি কিছুই জানি না।’
এ বিষয়ে নারায়ণগঞ্জ জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ মাহমুদুল হক বলেন, ‘স্কুলের সভাপতি বর্তমানে সদর উপজেলা নির্বাহী অফিসার। প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নিতে তাকে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।’
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available