নবীনগর (ব্রাহ্মণবাড়িয়া) প্রতিনিধি: ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নবীনগরের খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে অপারেশন থিয়েটার থেকে এক প্রসূতির নবজাতক সন্তান গায়েব করে দেওয়ার অভিযোগের ঘটনায় মামলা দায়ের করা হয়েছে।
২৫ এপ্রিল মঙ্গলবার ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানায় মামলাটি নথিভুক্ত করা হয়েছে।
নবীনগর পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রামের ফরহাদ আহমেদ বাদী হয়ে খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের মালিক ডা. ডিউক চৌধুরী, গাইনি ও সার্জন ডা. নওরিন পারভেজ, ডা. ইসরাত আহমেদ, হাসপাতালের কো. অর্ডিনেটর মার্শাল চৌধুরী, নার্স স্নেহলতা ও অপারেশন টিম সদস্য অথৈ মন্ডলসহ ৬ জনকে আসামি করে মামলাটি দায়ের করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, নবীনগর পৌর এলাকার আলীয়াবাদ গ্রামের ফরহাদ আহমেদের স্ত্রী মোছা. লিজা প্রথমবারের মতো গর্ভবতী হলে উপজেলার স্থানীয় একটি বেসরকারি হাসপাতালের চিকিৎসক মেহেরুন্নেছার তত্ত্বাবধানে চিকিৎসাধীন ছিলেন। সে সময় আল্ট্রসনোগ্রাফিতে তার স্ত্রীর গর্ভে ২টি সন্তান দেখা যায় বলে জানান চিকিৎসকরা। সর্বশেষ ১৮ এপ্রিল করা আল্ট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টেও গর্ভে দুটি সন্তান আসে। গত শুক্রবার লিজার প্রসব ব্যথা ওঠে। যমজ শিশু গর্ভে থাকায় স্থানীয় চিকিৎসকরা ঝুঁকি না নিয়ে ব্রাহ্মণবাড়িয়া শহরে এনে সিজারিয়ান করতে পরামর্শ দেন। সেদিন দুপুর সাড়ে ১২টার দিকে তাকে শহরের খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ডা. নওরিন পারভেজ আল্ট্রসনোগ্রাফি করেন। তার রিপোর্টেও দুটি সন্তানসহ দু’জনের ওজনও দেখা যায়, একজনের ৩ কেজি অপরজনের ২ কেজি। পরে একই দিন লিজাকে অপারেশন করেন ডা. ইসরাত আহমেদ ও ডা. নওরিন পারভেজ। অপারেশন শেষে হাসপাতালের লোকজন এসে জানান লিজা একটি কন্যা সন্তান জন্ম দিয়েছে। আর কোনো সন্তানের কথা তারা জানাতে পারেনি।
শুক্রবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে জেলা শহরের মুন্সেফপাড়া খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে এ ঘটনা ঘটে। বিষয়টি নিয়ে আলোচনার ঝড় ওঠে।
সন্তান ফিরে পেতে আহাজারি করছেন লিজা বেগমসহ তার পরিবার।
এ প্রসঙ্গে ফরহাদ আহমেদ বলেন, নবীনগরের ডাক্তার ও খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের ডাক্তার আলট্রাসনোগ্রাফি রিপোর্টে দুটি সন্তানের কথা এমনকি দুই জনের ওজনের কথাও জানিয়েছেন রির্পোটে, তাহলে আমার আরেক সন্তান গেল কোথায়?
চাইলে খ্রিষ্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালের আলট্রাসনোগ্রাফি ও সিজারিয়ান অপারেশন করা চিকিৎসক নওরিন পারভেজ বলেন, আমি দুই জায়গায় হার্টবিট পেয়েছি। অনেক সময় আমাদের দেখা এবং অনুমানে ভুল হতে পারে। সেই অনুযায়ী আমি রিপোর্ট দিয়েছি। তবে সিজারিয়ানের সময় গর্ভে একটি সন্তানই পাওয়া গেছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে ব্রাহ্মণবাড়িয়া সদর মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এমরানুল ইসলাম জানান, খ্রিস্টিয়ান মেমোরিয়াল হাসপাতালে গর্ভে থাকা শিশু নিখোঁজের অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি তদন্ত চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available