মেহেরপুর প্রতিনিধি: মেহেরপুরের গাংনীতে দুর্নীতিবাজ কৃষি কর্মকর্তার বিরুদ্ধে কৃষকদের মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়েছে। ১০ ডিসেম্বর মঙ্গলবার সকালে গাংনী উপজেলা শহীদ মিনার চত্বরে মানববন্ধনটি অনুষ্ঠিত হয়।
ষোলটাকা ইউনিয়ন বিএনপির সাধারণ সম্পাদক কামরুল ইসলামের সভাপতিত্বে মানববন্ধনে উপস্থিত ছিলেন গাংনী উপজেলার বিভিন্ন এলাকার কৃষকরা। মানববন্ধনে বক্তব্য রাখেন জেলা যুব দলের সিনিয়র সহ-সভাপতি আব্দুল হক, ষোলটাকা গ্রামের কৃষক সামছুল হক।
বক্তরা বলেন, গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন যোগদান করার পর থেকে অনিয়ম দুর্নীতির মাধ্যমে অফিস পরিচালনা করে আসছেন। তিনি গাংনী কৃষি অফিসে যোগদানের পর থেকে অফিসের কর্মকর্তা কর্মচারীদের জিম্মি করে দুর্নীতির মাধ্যমে অবৈধ সম্পদের পাহাড় গড়েছেন।
বক্তরা আরও বলেন, বিসিআইসি ডিলারদের সাথে মোটা অঙ্কের উৎকোচ গ্রহণ করে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করে বিএডিসি ও সাব ডিলারদের মাধ্যমে সরকারি সার কালো বাজারে বেশি দামে বিক্রয় করে আসছেন। সার না পেয়ে কৃষকরা বিপাকে পড়েছে। বর্তমান সরকারকে বাধাগ্রস্ত করতে সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করছে। ইমরান হোসেনের বিরুদ্ধে রাসায়নিক সার, পারিবারিক পুষ্টি বাগানের অর্থ, কৃষি খামার যন্ত্রপাতি (মেশিনারিজ) বিক্রয়, বিভিন্ন কৃষি প্রণোদনাসহ প্রদর্শনী প্লটের কেলেঙ্কারি ও নানা অনিয়ম দুর্নীতির অভিযোগ উঠেছে। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতির তদন্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার দাবি জানিয়েছেন সাধারণ কৃষকসহ সচেতন মহল। গাংনী উপজেলায় মোট ডিলার রয়েছেন ১৩৯ জন। এর মধ্যে বিসিআইসি ডিলার রয়েছেন ১২ জন ও বিএডিসি ডিলার সংখ্যা ৩৮ জন, সাব ডিলারের সংখ্যা ৮৯ জন। সাব ডিলার ও বিএডিসি ডিলারা সার কালো বাজারে বেশি দামে বিক্রয় করছেন।
বিসিআইসি ডিলার শহিদুল ইসলাম জানান, সরকারিভাবে আমরা সার উত্তোলন করে সাব ডিলারদের সরবরাহ করছি। তারা চাষিদের নিকট সঠিকভাবে সার বিক্রয় করছেন না। যার কারণে সারের সংকট হচ্ছে। গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসারে নির্দেশে আমরা তাদের সার সরবরাহ করছি।
গাংনী বাজারের বিএডিসি ডিলার জামাল হোসেন জানান, সাব ডিলাররা সারের কৃত্রিম সংকট তৈরি করেনি। বরং তাদের কারণে ইউনিয়নের কৃষকরা সার পাচ্ছেন। তিনি আরও বলেন, বিসিআইসি ডিলারদের নামে বেনামে অনেক সাব ডিলার আছে তারাই সংকট তৈরি করে অন্যদের নামে দোষারোপ করছেন।
গাংনী উপজেলা কৃষি অফিসার ইমরান হোসেন জানান, সারের কোনো সংকট নেই। বিসিআইসি ডিলাররা সার উত্তোলন করে বিএডিসি ও সাব ডিলারদের মাঝে সরবরাহ করছেন। চাষিরা কি কারণে সার পাচ্ছে না খোঁজ খবর নেওয়া হচ্ছে। অনিয়ম হলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
গাংনী উপজেলা নির্বাহী অফিসার প্রীতম সাহা জানান, সরকারিভাবে সারের কোনো সংকট নেই। যদি কোনো ডিলার বেশি দামে সার বিক্রয় করে তাহলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মেহেরপুর কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপ-পরিচালক ও জেলা কৃষি কর্মকর্তা বিজয় কৃষ্ণ হালদার জানান, সারের কোনো সংকট নেই। আমরা কোনো অনিয়মের সাথে জড়িত নেই। আমি বা আমার কোনো কর্মকর্তা জড়িত থাকলে তার প্রমাণ দেন। যদি কোনো ডিলার অনিয়ম করে তাহলে লিখিত অভিযোগ দিলে তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available