মানিকগঞ্জ প্রতিনিধি: মানিকগঞ্জে জমি সংক্রান্ত বিরোধের জেরে মুদি ব্যবসায়ী মো. লিটনের (৪০) উপর সন্ত্রাসী হামলা চালিয়েছে দুর্বৃত্তরা। এ সময় আহত হয়েছেন তার স্ত্রী নাজমিন আক্তার (৩৫) ও অষ্টম শ্রেণি পড়ুয়া ছেলে মো. লিজান (১৪)। আহতরা মানিকগঞ্জ পৌরসভার পশ্চিম দাশরা এলাকার বাসিন্দা।
১১ ডিসেম্বর বুধবার ঘটনাস্থলে গিয়ে দেখা যায়, পাঁচ শতক জমির উপর চারিদিকে ইটের প্রাচীর দিয়ে নির্মিত গ্যারেজটি গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। ভুক্তভোগীর ব্যবহৃত মোটরসাইকেলটিও ভাঙচুর করে ফেলে রাখা হয়েছে সেখানে। বিবাদীগণ এলাকার প্রভাবশালী হওয়ায় স্থানীয়রা কেউ কথা বলতে নারাজ চাঞ্চল্যকর এ বিষয়টি নিয়ে।
এর আগে, ৫ শতাংশ জমির উপর নির্মিত স্থাপনা (গ্যারেজ) ভাঙচুর করে গুঁড়িয়ে দেওয়া হয়। এ ঘটনায় ১০ জন ও অজ্ঞাত ২০-২৫ জনকে উল্লেখ করে ভুক্তভোগীর স্ত্রী নাজনীন আক্তার ৭ ডিসেম্বর একটি মামলা করেন। মামলার চারদিন পার হলেও গ্রেফতার হয়নি কোন আসামী।
মামলা সূত্রে জানা যায়, জমি নিয়ে বিরোধ এবং পূর্ব শত্রুতার জেরে দীর্ঘদিন ধরে হাবিব দেওনের (হাবলু) সাথে লিটনের দ্বন্দ্ব চলে আসছিল। চলতি মাসের ৭ তারিখে একই ঘটনার জেরে হাবলু তার লোকজন নিয়ে এসে স্থাপনা থেকে সরে যেতে বলেন। এ সময় অকথ্য ভাষায় গালিগালাজ করে। এক পর্যায়ে তার লোকজন স্থাপনাটি ভাঙতে শুরু করে। লিটন এ সময় বাধা দিলে দেশীয় অস্ত্রশস্ত্র দিয়ে তাকে গুরুতর আঘাত করা হয়। তাকে বাঁচাতে তার পরিবারের সদস্যরা এগিয়ে আসলে তাদেরও বেধরক মারধর করে দুর্বৃত্তরা। পরে স্থানীয়রা আহতদের উদ্ধার করে জেলা সদর হাসপাতালে ভর্তি করেন। এদিকে ততক্ষণে স্থাপনাটি ভেঙ্গে পালিয়ে যায় দুর্বৃত্তরা।
ভুক্তভোগীর বাবা মো.পলান (৭০) জানান, আমি ভোগ সত্বর এই জমিটুকু আমার স্ত্রীকে লিখে দিয়েছিলাম। আমার স্ত্রী মুর্খ মানুষ সে ডান-বাম কিছুই বোঝে না। তার কাছ থেকে হাবলু জোরপূর্বক জমি লিখে নিয়েছে। ভোগ সত্বর জমি সে তো বিক্রি করতে পারে না। আমার স্ত্রী এই জমি বিক্রির কোনো টাকাও পায় নাই, সে জানতোও না হাবলু জমি লিখে নিয়েছে। জাল দলিল করে হাবলু জমি লিখে নিয়েছে। এ বিষয়ে আদালতে মামলাও চলমান।
তিনি বলেন, 'আমার ছেলের বউ এবং ছোট নাতিকে ওরা (হাবলু গং) মারধর করেছে। আমার চোখের সামনেই আমার ছেলেকে মারধর করে। এই ঘটনায় পুলিশ কাউকে গ্রেফতার করে নাই। আমরা খুব ভয়ে আছি।
মামলার বাদী নাজমিন আক্তার বলেন, চারদিন হলেও এখনো পর্যন্ত কোনো আসামী গ্রেফতার হয়নি। ঘটনার পর পুলিশ একবার আসছে, আর আসে নাই। হাবলু এবং তার লোকজন এখনো পর্যন্ত এলাকায় প্রকাশ্যে ঘোরাফেরা করছে। আমাদের কাউকে দেখলেই দূর থেকেই ভয় ভীতি দেখাচ্ছে। আমরা গরীব মানুষ আমরা সুষ্ঠু বিচার চাই।
এ বিষয়ে সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম আমানুল্লাহ বলেন, এই জমি নিয়ে আদালতে মামলা চলমান। স্থাপনা ভাঙচুর এবং মারধরের ঘটনা ঘটেছে, বিষয়টা আমরা অনুসন্ধান করছি। আইনগত ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available