রাজীব মুন্সী, পীরগাছা প্রতিনিধি: বাংলাদেশের যত মোঘল স্থাপনা রয়েছে তার মধ্যে ঐতিহ্যবাহী ও অন্যতম হলো ভাংনি মসজিদ। ৪০০ বছরের পুরোনো এ মসজিদটি রংপুর জেলার মিঠাপুকুর উপজেলার ভাংনী ইউনিয়নে অবস্থিত। ঐতিহ্য ও অনেক পুরোনো স্থাপনা হওয়ায়, মসজিদটি দেখতে প্রতিনিয়ত দূরদুরান্তরের অনেক দর্শনার্থী আসেন।
ইতিহাস ও অবস্থান-
রংপুর শহর থেকে ১৭ কি.মি. উত্তরপূর্বে, মিঠাপুকুর উপজেলার ঘাঘট নদীর তীর ঘেঁষে ভাংনী ইউনিয়নে এর অবস্থান। এখানে চারশত বছর পূর্বে মোঘল আমলের শেষের দিকে ৩ গম্বুজ বিশিষ্ট ভাংনী জামে মসজিদ নির্মিত হয়েছিল।
কথিত আছে বিবি মনিরুন্নেছা চৌধুরানীর কোনো ছেলে সন্তান না থাকায় তার সমুদয় সম্পত্তি মনিরুন্নেছা বিবি ওয়াকফ স্টেটের নামে সর্বসাধারণের কল্যাণে ব্যয়ের জন্য দান করেন। যা মসজিদের মতোয়াল্লি এবং উপজেলা নির্বাহী অফিসার কর্তৃত্ব বলে সভাপতি কমিটি দেখভাল করেন।
মসজিদ সম্পর্কে জানা অজানা-
এটি বাংলাদেশ প্রত্নতত্ত্ব অধিদপ্তরের তালিকাভুক্ত একটি স্থাপনা। ধারণা করা হয়, মোঘল আমলের শেষের দিকে এটি তৈরি। আয়তাকার তিন গম্বুজ বিশিষ্ট এ মসজিদের পরিমাপ ১০.৬৬ মি.। এ মসজিদের সম্মুখে প্রাচীরবেষ্টিত অঙ্গনের পূর্ব পাশের মধ্যবর্তী স্থানে বাংলাদেশের নিজস্ব স্থাপত্য বৈশিষ্ট্যের দোচালা পদ্ধতিতে নির্মিত। এর অপূর্ব প্রবেশ তোরণ ও মসজিদের চার কোণে চারটি কর্নার টাওয়ার যা ছাদের কিনারা থেকে বেশ ওপরে উঠেছে। ছোট গম্বুজের মতো কিউ পোলা আকারে শেষ হয়েছে।
আয়তাকার মসজিদটি দুইটি ল্যাটারাল খিলানের সাহায্যে তিন ভাগে ভাগ করে ওপরে তিনটি অর্ধ গোলাকার গম্বুজ নির্মাণ করা হয়েছে। মসজিদের পূর্ব দেয়ালে তিনটি প্রবেশ পথ এবং উত্তর ও দক্ষিণে একটি করে মোট পাঁচটি প্রবেশপথ রয়েছে। তিনটি মিহরাব, মসজিদের সম্মুখের দেয়াল, প্যারাপেট দেয়াল ও গম্বুজের ড্রামসমূহ সুন্দর প্যানেল, লতাপাতা, ফুল জ্যামিতিক নকশা ও সাপের ফনাসদৃশ নকশা দ্বারা অলংকৃত।
মসজিদের সম্মুখের দেয়ালের শিলালিপি থেকে জানা যায়, শেখ মোহাম্মদ সাবেরের পুত্র শেখ মোহাম্মদ আছের ১২২৬ হিজরিতে (১৮১০ খ্রি :) মসজিদটি নির্মাণ করেছেন। এলাকাবাসীর দাবি এটি সরকারিভাবে আরও ভালো করে দেখভাল করা হলে টিকে থাকবে ইতিহাস ও ঐতিহ্য।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available