নওগাঁ প্রতিনিধি: নওগাঁয় বর্ণাঢ্য আয়োজনে হানাদার মুক্ত দিবস পালিত হয়েছে। ১৮ ডিসেম্বর বুধবার সকাল ১১টায় স্থানীয় সামাজিক সাংস্কৃতিক সংগঠন একুশে পরিষদের উদ্যোগে নওগাঁ শহরের মুক্তির মোড় কেন্দ্রীয় শহিদ মিনার চত্বর থেকে একটি শোভাযাত্রা বের হয়।
এ সময় জাতীয় পতাকা এবং বিভিন্ন ফেস্টুন হাতে নিয়ে শোভাযাত্রাটি শহরের বিভিন্ন সড়ক প্রদক্ষিণ করে ঐতিহ্যবাহী প্যারীমোহন লাইব্রেরিতে গিয়ে শেষ হয়। এতে নেতৃত্ব দেন সংগঠনের সভাপতি অ্যাডভোকেট ডিএম আব্দুল বারি।
একুশে পরিষদের উপদেষ্টা অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ শরিফুল ইসলাম খান, অবসরপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ প্রফেসর ওয়ালিউল ইসলাম, সাংবাদিক কায়েস উদ্দিন, অধ্যক্ষ সিদ্দিকুর রহমান, মুক্তিযোদ্ধা সিরাজুল ইসলাম, মুক্তিযোদ্ধা এবিএম রফিকুল ইসলাম, নওগাঁ জেলা প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক বেলায়েত হোসেন, সাংবাদিক ওমর ফারুক, একুশে পরিষদের সাধারণ সম্পাদক এম.এম রাসেল, রোটানিয়ান চন্দন দেব, প্রদ্যোত ফৌজদারসহ স্থানীয় বিভিন্ন সাংস্কৃতিক সংগঠন সদস্যরা শোভাযাত্রায় অংশগ্রহণ করেন।
উল্লেখ্য, ইপিআর ৭ নম্বর সেক্টরের অধীনে ছিল নওগাঁ, জয়পুরহাট, দিনাজপুর, হিলি, নবাবগঞ্জ, রাজশাহী, পাবনা ও নাটোর। অধিনায়ক ছিলেন- প্রথম দিকে ক্যাপ্টেন গিয়াস।
পরবর্তীতে মেজর নাজমুল হক এবং তার মৃত্যুর পর মেজর নুরুজ্জামান। সাবেক বাণিজ্যমন্ত্রী মরহুম আব্দুল জলিল মুক্তিযোদ্ধাদের আক্রমণ পরিকল্পনা রচনা, তাদের ব্যয়ভার বহন ও রসদপত্র সরবরাহের বিষয়ে তত্ত্বাবধায়ক ও সমন্বয়কারীর দায়িত্ব পালন করেন। মুক্তিযুদ্ধ চলাকালীন নওগাঁর দু’জন কৃতিসন্তান জালাল হোসেন চৌধুরি ও আখতার আহমেদ সিদ্দিককে সিএন্ডসি স্পেশাল প্রশিক্ষণ দেয়া হয়।
১৬ ডিসেম্বর পাকবাহিনী ঢাকায় আত্মসমর্পণ করার খবর শুনবার পরও নওগাঁর পাক বাহিনীরা অত্মসমর্পণ করবে না বলে ঘোষণা দেয়। ফলে কমান্ডার জালাল হোসেন চৌধুরীর নেতৃত্বে পরদিন সকাল ৭টার দিকে প্রায় ৩৫০ জন মুক্তিযোদ্ধা নওগাঁ শহরের দিকে অগ্রসর হন।
১৭ ডিসেম্বর এক শীতের সকালে মুক্তিবাহিনী জগৎসিংহপুর ও খলিশাকুড়ি গ্রামে আসতেই পাকিস্তানি সেনারা ভারী অস্ত্র ব্যবহার করে। সকাল থেকে রাত ৮টা পর্যন্ত উভয় পক্ষে প্রচণ্ড যুদ্ধে ৫ বীর মুক্তিযোদ্ধা শহিদ হন।
১৮ ডিসেম্বর শনিবার সকালে বগুড়া থেকে অগ্রসর ভারতীয় মেজর চন্দ্রশেখর, পশ্চিম দিনাজপুর বালুরঘাট থেকে পিবি রায়ের নেতৃত্বে মিত্রবাহিনী ও মুক্তিবাহিনী নওগাঁয় প্রবেশ করলে হানাদার বাহিনীর আর কিছুই করার ছিল না। ফলে সকাল ১০টার দিকে প্রায় দুই হাজার পাকসেনা নওগাঁ কেডি স্কুল থেকে পিএম গার্লস স্কুল, সরকারি গার্লস স্কুল, পুরাতন থানা চত্বর এবং এসডিও অফিস থেকে শুরু করে রাস্তার দু’পাশে মাটিতে অস্ত্র রেখে সারিবদ্ধভাবে দাঁড়িয়ে নতমস্তকে আত্মসমর্পণ করে।
তৎকালীন নওগাঁ মহকুমা প্রশাসক সৈয়দ মার্গুব মোরশেদ মুক্তি বাহিনী ও মিত্র বাহিনীকে স্বাগত জানান। বর্তমান পুরাতন কালেক্টরেট (এসডি) অফিস চত্বরে স্বাধীন বাংলাদেশের পতাকা উত্তোলন করা হয়। সেখানে উপস্থিত মুক্তিযোদ্ধারা পতাকার প্রতি সালাম জানিয়ে সম্মান প্রদর্শন করেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available