মিরপুর (কুষ্টিয়া) প্রতিনিধি: কুষ্টিয়ার কমলাপুর এলাকায় রুবিনা খাতুন (২৮) নামে এক নারীর ঝুলন্ত মরদেহ উদ্ধার করেছে পুলিশ। ২৫ ডিসেম্বর বুধবার সন্ধ্যায় ওই এলাকার একটি বাসা থেকে নিহতের মরদেহটি উদ্ধার করা হয়। বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন কুষ্টিয়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব।
নিহত রুবিনা খাতুন কুষ্টিয়া আদালতের জিআরও অফিসের পুলিশ কনস্টেবল পদে কর্মরত ছিলেন। তিনি মেহেরপুর জেলার মুজিবনগর থানার রামনগর গ্রামের আব্দুল শেখের মেয়ে এবং একই থানার রতনপুর গ্রামের বাসিন্দা আলাল শেখ (৩০) তার স্বামী বলে জানা গেছে।
পুলিশ সূত্রে জানা গেছে , শহরের কমলাপুর এলাকার একটি বহুতল ভবনের তৃতীয় তলায় স্বামী ও দুই সন্তানকে নিয়ে ভাড়া থাকতেন পুলিশ সদস্য রুবিনা। ছেলে-মেয়েরা নানা বাড়িতে বেড়াতে যাওয়ায় বুধবার ছুটির দিনে স্বামী-স্ত্রী দুজনেই বাড়িতে ছিলেন। সারা দিন সহকর্মীরা রুবিনাকে মোবাইল ফোনে কল দিয়ে না পেয়ে পাশের ফ্ল্যাটের পরিচিত এক প্রতিবেশীকে ব্যাপারটি জানায়। এরপর ওই প্রতিবেশীর স্ত্রী এসে রুবিনার স্বামীকে জানায়, সহকর্মীদের কল ধরছে না সে। তখন স্বামী আলাল জানায়, শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় সকাল থেকে সে রাগ করে ঘরের দরজা বন্ধ করে আছে। সন্ধ্যায় এ ঘটনা জানার পর সহকর্মীরা এসে ডাকাডাকি করে কোনো সাড়াশব্দ না পেয়ে দরজা ভেঙে ফ্যানের সঙ্গে রুবিনাকে ঝুলন্ত অবস্থায় দেখে পুলিশে খবর দেয়। পরে পুলিশ ঘটনাস্থলে পৌঁছে মরদেহটি উদ্ধার করে কুষ্টিয়া জেনারেল হাসপাতাল মর্গে পাঠায়।
হত্যা না আত্মহত্যা এ বিষয়ে জানতে চাইলে কুষ্টিয়া সদর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শিহাবুর রহমান শিহাব বলেন, বুধবার মূলত ছুটির দিন। ছুটির দিনে কোর্টে কার্যক্রম ২টার পরে শুরু হয়। কনস্টেবল রুবিনা খোকসা থানার জিআও শাখার মুন্সী হিসেবে কর্মরত ছিল। ২টার পরে যখন অফিসে যায়নি, তখন তার কলিগরা তার ফোনে একাধিকবার ফোন দিলেও সে রিসিভ করে না। এক পর্যায়ে তার কলিগরা তার বাসার পাশে নাসির নামে একজনকে ফোন দেন। এরপর নাসির তার স্ত্রীকে বিষয়টি জানায়। নাসিরের স্ত্রী কনস্টেবল রুবিনার স্বামী আলালকে বিষয়টি জানায়। তখন আলাল জানান রুবিনা শারীরিকভাবে অসুস্থ। দুপুরের রান্না নিয়ে তাদের দুজনের মধ্যে একটু মনোমালিন্য হয়েছে । তাই দুপুরে রান্না তিনি নিজেই করতেছেন । রান্নার শেষ হলে আমি তাকে (রুবিনা) ডেকে ভাত খাওয়াবো। এ ঘটনার কিছুক্ষণ পর নারী কনস্টেবল আনজুয়া তার স্বামী শান্তকে ফোন দেয়। শান্তসহ আরও অনেকে দরজা ভেঙে ভিতরে গিয়ে দেখে কনস্টেবল রুবিনা সিলিং ফ্যানের সাথে গলায় ওড়না দিয়ে ফাঁস দিয়ে ঝুলন্ত অবস্থায় রয়েছে। এরপর পুলিশকে খবর দিলে ঘটনাস্থলে আমি (ওসি), কুষ্টিয়ার পুলিশ সুপার, অতিরিক্ত পুলিশ সুপার পমরদেহ কান্তি নাথ স্যারসহ পুলিশে ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তা ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেন।
ওসি শিহাবুর রহমান শিহাব আরও জানান, প্রাথমিকভাবে ধারণা করা হচ্ছে, এটি আত্মহত্যা। বাকিটা ময়নাতদন্ত প্রতিবেদন আসার পর নিশ্চিত হয়ে বলা যাবে। তারপরও সবকিছু মাথায় রেখে তদন্ত চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available