স্টাফ রিপোর্টার, গাজীপুর: গাজীপুর সদর উপজেলার বারইপাড়া মৌজার খাস খতিয়ানের গাছ কর্তন ও বন ভূমি বিক্রি করে লাখ লাখ টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ পাওয়া গেছে। খাস জমি লিজে নিয়ে বিক্রি ও গাছ কর্তন সম্পূর্ণরূপে নিষিদ্ধ হওয়া সত্ত্বেও একটি চক্র দীর্ঘদিন ধরে বনের জমি ও শাল গাছ কেনাবেচার করে চলেছে।
এমনই দেখা যায়, গাজীপুর সদরের বারইপাড়া মৌজার খাস খতিয়ানের আর এস ৫৩৩০নং দাগের শাল প্লটটি বারেক নামের এক ব্যক্তিকে লিজে দিয়েছে ঢাকা বন বিভাগ। লিজের সকল শর্ত ভঙ্গ করে এসব খাস জমি কেনাবেচাকে ও শাল গাছ কর্তন করে সে তার ফার্নিচারের দোকানে ব্যবহার করে লাখ লাখ টাকার মালিক বনে গিয়েছেন।
এমন অভিযোগের ভিত্তিতে সরেজমিনে অনুসন্ধান করে জানা গেছে, বারইপাড়া মৌজার সরকারি বনভূমি কেনাবেচার মূলহোতা হচ্ছেন, রাজেন্দ্রপুর রেলগেইটের মৃত. হামিদ আলীর ছেলে মো. বারেক মিয়া (৪৩) ও তার স্ত্রী মরিয়ম বেগম (৩৭)। শাল বন লিজে নিয়ে ছোট ছোট প্লটে কখনো ১০০ টাকার তিনটি অলিখিত স্ট্যাম্পে স্বাক্ষর করে, কখনো আবার মৌখিকভাবে পজিশন হস্তান্তর করে চলেছেন ওই দুর্ধর্ষ দম্পতি। অন্যদিকে একই প্লটে তার সহোদর ভাই রফিক বনের জমিতে গৃহনির্মাণ করে দীর্ঘ দিন ধরে চুলাই মদের ব্যবসা পরিচালনা করে চলেছে। তাদের ভয়ে এলাকায় কেউ মুখ খুলতে পারে না।
গোপনীয়তা শর্তে এক ব্যক্তি জানায়, কসাই মতির নিকট একটি প্লট বিক্রি করে ১ লক্ষ টাকায়, বাঙ্গারী বাবু’র কাছে বিক্রি করে ৭০,০০০ হাজার টাকায়। তবে মতি কসাই বলেন, আমি কোনো বাড়ি করিনি। বাঙ্গারী বাবু অভিযোগটি অস্বীকার করে বলেন, বারেক এর থেকে জায়গায় নিয়ে ঘর করে বসবাস করছি কোনো টাকা দেইনি। ঢাকা বিভাগীয় বন কর্মকর্তার অনুমতি ব্যতীত বারেক কীভাবে ঘর করতে দেয় এবং তার কী দেয়ার এখতিয়ার রয়েছে? এ প্রশ্নের কোনো সঠিক ব্যাখ্যা তিনি দিতে পারেননি।
২২ ডিসেম্বর সকালে গিয়ে দেখা যায়, সরকারি লিজের সাবেক নোয়াগাঁও মৌজার খাস খতিয়ানের ২৫৭৬ দাগের বন ভূমি থেকে বারেক মিয়ার বাড়ির ভাড়াটিয়া আমরাইদ এলাকার আক্তার ও বানুর মায়ের নাতি আল-আমিন নামের ব্যক্তিদ্বয়কে দিয়ে রাতের আঁধারে একাধিক শীলকড়াই, একটি সায়তান গাছ কর্তন করেছে। তার বরাদ্দকৃত প্লট থেকে গাছ কর্তন সম্পর্কে মুঠোফোনে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমার এ বিষয়ে জানা নেই। আপনার বাগানের বেশিরভাগ গাছ নেই এবং গাছের গুরিগুলো করাত দিয়ে কর্তনের চিহ্ন রয়েছে। এমন প্রশ্নের কোনো সদুত্তর তিনি দিতে পারেননি।
নামপ্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক ব্যক্তি জানায়, প্লটটি বারেক মিয়া’র নামে বরাদ্দ হয়েছে, কম করে হলেও ৫০০ থেকে ৭০০ শাল গাছ তার নেতৃত্বে এ প্লট থেকে ইতিপূর্বে কর্তন করা হয়েছে, সাক্ষী স্বরূপ শাল গাছের গুড়ি বর্তমান রয়েছে।
এবিষয়ে ভাওয়াল রেঞ্জ এর বারইপাড়া বিট কর্মকর্তা নাছির উদ্দীন জানান, ঘটনাস্থল থেকে ২টি শীলকড়াই, ১টি সায়তান গাছ উদ্ধার করেছি, তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করবো।
ঢাকা বিভাগীয় ভাওয়াল রেঞ্জ কর্মকর্তা সাহিদুল ইসলাম জানান, অভিযোগে বনের গাছ জব্দ করা হয়েছে। তদন্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণ করতে বিট অফিসারকে নির্দেশ প্রদান করা হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available