লালমনিরহাট প্রতিনিধি: লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার ভেলাবাড়ী ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সুরুজ মিয়ার বিরুদ্ধে বেলাল হোসেন (১০) নামের এক শিশুকে টাকা চুরির অপবাদ দিয়ে সুপারি গাছে বেধে নির্যাতনের অভিযোগ উঠেছে।
নির্যাতনের শিকার শিশুটি বর্তমানে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন রয়েছে। এ ঘটনায় ওই শিশুর বাবা একই এলাকার বাসিন্দা আকবর আলী, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সুরুজ আলীসহ চার জনের নাম উল্লেখ করে স্থানীয় থানায় একটি অভিযোগ দিয়েছেন।
২৬ ডিসেম্বর শিশু বেলালকে গাছে বেধে নির্যাতনের ১৭ সেকেন্ডের একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়ে। ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়া ওই ভিডিওতে দেখা যায় শিশু বেলাল হোসেন একটি সুপারি গাছের লেপ্টে রয়েছেন। স্থানীয়রা দাবি করেছেন গলার মাপলার দিয়ে শিশুটিকে সুপারি গাছে বাঁধা হয়েছিলো।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্থানীয় এক বাসিন্দা বলেন, স্বেচ্ছাসেবকদল নেতা সুরুজ আলির ৮ হাজার টাকা চুরির অপবাদ দেওয়া হয় শিশু বেলালের বিরুদ্ধে। পরে তাকে ডেকে নিয়ে নির্যাতন করা হয় এবং গাছের সাথে বেঁধে রাখা হয়।
থানায় দায়ের করা অভিযোগে আকরব আলী দাবি করেন, ২৬ ডিসেম্বর সকালে সুরুজ আলির চুরি যাওয়া ৮ হাজার টাকা চুরি যায় বলে শোনেন তিনি। ওই দিন রাত আটটার দিকে ওই এলাকার শফিকুল ইসলামের ছেলে বাইজিতসহ কয়েকজন শিশু বেলালকে সুরুজের বাড়িতে ডেকে নিয়ে যায়। সেখানে জোরপূর্বক আমার ছেলের পকেটে ৬ হাজার টাকা ঢুকিয়ে চোরের অপবাদ দেওয়া হয়। পরে বেলালকে গাছের সাথে নির্যাতন করা হয় বলে অভিযোগে উল্লেখ করেন আকবর। এতে শিশু বেলাল অসুস্থ হয়ে পড়লে স্থানীয়দের সহায়তায় ছেলেকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করানো হয়।
সুপারি গাছের সাথে বেঁধে শিশুকে নির্যাতনের বিষয়ে সুরুজ মিয়া মুঠোফোনে জানান, নির্যাতন করার বিষয়টি সত্য নয়। চুরি যাওয়া টাকার ৬ হাজার টাকা বেলালের নিকট থেকে উদ্ধার হয়েছে। আর গাছের সাথে বেঁধে রাখার সময় তিনি ছিলেন না, তবে লোকমুখে শুনে ঘটনাস্থলে এসে শিশু বেলালের হাতে মাপলার দেখছেন বলে দাবি তার। গাছের হেলে ছিলেন বেলাল বলেও দাবি করে সুরুজ। ওই সময় বেলালের বাবাকে ডেকে আসা হয়েছিল বলেও জানান তিনি।
ইউনিয়ন স্বেচ্ছাসেবকদলের নেতা সুরুজের বিরুদ্ধে শিশুকে নির্যাতনের বিষয়ে আদিতমারী উপজেলা স্বেচ্ছাসেবকদলের সদস্যসচিব আসাদুল হাবিব মানিক জানান, ঘটনাটি গণমাধ্যম কর্মীর মাধ্যমে শুনেছেন তিনি। শিশু নির্যাতনের বিষয়টি ভালোভাবে শুনে এবং জেলা পর্যায়ের নেতাদেরকে অবগত করা হবে। পরে জেলা পর্যায়ের নেতাদের নির্দেশনা অনুযায়ী সাংগঠনিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে বলেন তিনি।
আদিতমারী থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) আলী আকবর জানান, অভিযোগ পেয়েছি। ঘটনাস্থলে পুলিশ পাঠিয়েছিলাম। পরবর্তী ব্যবস্থা আইনানুযায়ী গ্রহণ করা হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available