কক্সবাজার প্রতিনিধি: রাখাইন রাজ্য আরাকান আর্মির কব্জায় হলেও রাজ্যটি মূলত মিয়ানমারের। তাই সীমান্তসহ বিভিন্ন ইস্যুতে বাংলাদেশ জান্তা সরকার এবং আরাকান আর্মি উভয়ের সাথেই যোগাযোগ রাখছে।
বিভিন্ন কারণে মিয়ানমারে সাথে আমাদের যোগাযোগ বেশি। এছাড়া দেশের অভ্যন্তরে মাদকের অনেক ছড়াছড়ি রয়েছে এই সীমান্ত এরিয়াকে কেন্দ্র করে। মাদক নিয়ন্ত্রণে দেশের সকল মসজিদের ইমামদের ভূমিকা রাখতে হবে বলে জানান স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লে. জাহাঙ্গির আলম চৌধুরি।
৩০ ডিসেম্বর সোমবার কক্সবাজারের টেকনাফ সীমান্ত পরিদর্শন শেষে মিয়ানমারের আরকান আর্মি মংডু দখলের পর সীমান্ত পরিস্থিতি ও রোহিঙ্গা সমস্যার বিভিন্ন দিক তুলে ধরে টেকনাফের দমদমিয়া বিএডব্লিউটিএ ঘাটে দুপুর দুইটায় তিনি সাংবাদিকদের এসব কথা তুলে ধরেন এবং সাংবাদিকদের বিভিন্ন প্রশ্নের উত্তর দেন।
এসময় জাহাঙ্গির আলম চৌধুরি বলেন, দেশের স্বার্থ রক্ষার্থে মিয়ানমার সরকার ও আরকান আর্মির সাথে সার্বক্ষণিক যোগাযোগ রক্ষা করছি। বিভিন্ন সময়ে যোগাযোগ রক্ষার্থে যুদ্ধাহত মিয়ানমারে রোহিঙ্গা নাগরিককে গ্রহণ করা হয়েছে। প্রায় ৮৭৬ জন মিয়ানমারের নিরাপত্তা কর্মী দেশে ঢুকে আত্মসমর্পণ করেছে। আবার তাঁদের ফিরিয়েও দেওয়া হয়েছে।
বর্তমান পরিস্থিতিতে দেশের নিরাপত্তা ও সীমান্তবাসীকে রক্ষায় বিজিবি পাশাপাশি অন্যান্য সংস্থা নিশ্ছিদ্র সার্বক্ষণিক দায়িত্ব পালন করছে। সীমান্ত সম্পূর্ণ আমাদের নিয়ন্ত্রণে রয়েছে। যে কোনো পরিস্থিতি মোকাবেলা করার জন্য আমরা প্রস্তুত আছি। ইতোমধ্যে মিয়ানমার সীমান্তে জনবল বৃদ্ধির পাশাপাশি অন্যান্য বাহিনীর জনবলও বৃদ্ধি করা হয়েছে। নাফনদীতে টহল তৎপরতা জোরদার রয়েছে।
মাদকের অজুহাতে নাফনদীতে মাছ শিকার বন্ধ ও মাদকের বিষয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, মিয়ানমারের গুলাগুলির কারণে নাফনদীতে আপাতত মাছ শিকার বন্ধ রাখা হয়েছে। এছাড়া টেকনাফে মাদক একটি বড় সমস্যা। এটা অনেক আগের সমস্যা। এ মাদক যেভাবে হোক নির্মূল করতে হবে। এজন্য মসজিদের ইমামদের ভূমিকা রাখতে হবে।
স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, মিয়ানমারে সৃষ্ট সমস্যার কারণে নতুন করে ৫০ থেকে ৬০ হাজার রোহিঙ্গা অনুপ্রবেশ করেছে। তাদের রেজিস্ট্রেশন ব্যাপারে এখনো সিদ্ধান্ত না হলেও মানবিক কারণে খাদ্য পণ্য ঠিকঠাক মতো পাচ্ছে।
এর আগে তিনি সোমবার সকাল সাড়ে দশটার দিকে তেজগাঁও পুরাতন বিমানবন্দর হতে টেকনাফ ব্যাটালিয়নে হেলিকপ্টার যোগে এসে টেকনাফ ব্যাটালিয়ন, দমদমিয়া বিওপি ও নাফ নদীতে বিজিবির ডিউটির কার্যক্রম পরিদর্শন করেন।
এ সময় তাঁর সফরসঙ্গী হিসেবে ছিলেন- বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) মহাপরিচালক মেজর জেনারেল মোহাম্মদ আশরাফুজ্জামান সিদ্দিকী, স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টার একান্ত সচিব ও সহকারী একান্ত সচিব, টেকনাফ ২ বিজিবি ব্যাটালিয়নের অধিনায়ক মো. মহিউদ্দিন খান, ইউএনও শেখ এহসান উদ্দিনসহ সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ সীমান্ত ঘেঁষা মিয়ানমারের রাখাইন রাজ্য ইতোমধ্যে কব্জায় নিয়ে নিয়েছে দেশটির বিদ্রোহী গোষ্ঠী আরাকান আর্মি। ফলে এপারে তৈরি হয়েছে রোহিঙ্গা প্রত্যাবাসনে অনিশ্চয়তাসহ নানা টেনশন। এমন সংকট সময়ে বাংলাদেশ এই মুহূর্তে সীমান্তের ওপারে কার সাথে যোগাযোগ রাখছে সেটি স্পষ্ট করেছেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল অবসরপ্রাপ্ত জাহাঙ্গির আলম চৌধুরি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available