খাগড়াছড়ি প্রতিনিধি: বাংলাদেশের অতি পরিচিত পাখি। দেখতে রাগান্বিত বা ঝগড়াটে মনে হলেও বুলবুলি ভীষণ রকমের মিষ্টি একটি পাখি। এরা ‘টিউ-টু-টুল’ সুরে গান গায়। এজন্য বুলবুলিকে গানের পাখি বলা হয়। বুলবুলি পাখি দেখলেই ছোটবেলায় ছড়ার ছন্দে বলতাম, ‘বুলবুলি গো বুলবুলি,/আয় না খেলি চুল খুলি।/গাছের ফাঁকে লুকিয়ে থেকে,/উদাস করিস আমায় ডেকে।/তোর গলার মিষ্টি সুরে,/মন যে আমার কেমন করে।’
সারা বিশ্বে প্রায় ১৩০ থেকে ১৪০টি প্রজাতি রয়েছে। আফ্রিকা, মধ্যপ্রাচ্য, ক্রান্তীয় এশিয়া, ইন্দোনেশিয়া ও জাপান এদের মূল বসবাস অঞ্চল। বাংলাদেশে বুলবুলির ১১টি প্রজাতি দেখতে পাওয়া যায়। এর মাঝে সাদা বুক, ছাইরঙা, সবুজ, সিপাহী বুলবুলি, কালোঝুঁটি হলদে বুলবুলি উল্লেখযোগ্য।
এরা আকারে ১৮ থেকে ২০ সেন্টিমিটার। স্ত্রী ও পুরুষ দেখতে একইরকম। গায়ের পালক লম্বা, নরম ও ফোলানো। ঠোঁট এবং পা খাটো। চোখের ভেতরের অংশ গাঢ় পিঙ্গল। লেজ তুলনামূলক লম্বা। গলা দেখতে কালো। মাথায় কালো ঝুঁটি বিদ্যমান। ঘাড়, বুক কালচে বাদামি। তলপেট দেখতে সাদাটে। লেজের তলা উজ্জ্বল লাল। ছোট আকৃতির ফল, ফুলের মধু, কীটপতঙ্গ ও পোকামাকড়, পুঁইশাকের পাকা দানা, মটরশুটি, খেজুরের রস এদের প্রিয় খাদ্য।
মানুষের বসতভিটার খুব কাছাকাছি এদের বাসা বানাতে দেখা যায়। এরা মাটি থেকে কম উঁচুতে গাছের ডালে বাসা নির্মাণ করে। বাসা দেখতে পেয়ালা আকৃতির। খড়, তন্তু, ঘাস, শুকনো পাতা, গাছের শেকড় বাসা নির্মাণের মূল উপকরণ। বুলবুলি জোড়ায় জোড়ায় বা দলবদ্ধভাবে থাকতে পছন্দ করে। বর্ষাকাল এদের প্রজনন মৌসুম। স্ত্রী পাখি ২ থেকে ৫ টি ডিম পাড়ে। ডিমের রঙ গোলাপি সাদা ও বাদামি ছোপযুক্ত। ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে সময় লাগে ১০-১৫ দিন। বাবা ও মা দুজনেই বাচ্চার জন্য খাবার সংগ্রহ করে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available