শরীয়তপুর প্রতিনিধি: শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালতের সিনিয়র সহকারী বিচারক ও লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা মো. খালেদ মিয়াকে বিচারিক কাজে বাধা ও হুমকি দেয়ার অভিযোগে সোলায়মান খান (৩৫) নামের এক যুবদল নেতাকে আটক করা হয়। পরে স্থানীয় বিএনপি নেতা ও বিএনপি সমর্থিত আইনজীবীদের হস্তক্ষেপে মুচলেকা নিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়।
আদালত ও পুলিশ সূত্রে জানা যায়, শরীয়তপুর জেলা ও দায়রা জজ আদালত ভবনের দ্বিতীয় তলায় সরকারের জাতীয় আইনগত সহায়তা প্রদান সংস্থার জেলা লিগ্যাল এইড কার্যালয়। সিনিয়র সহকারী জজ খালেদ মিয়া লিগ্যাল এইড কর্মকর্তা হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন। ৫ জানুয়ারি রোববার দুপুরে লিগ্যাল এইড আদালতে স্বামী-স্ত্রীর দেনমোহর মামলার আপোস মীমাংসার শুনানি চলছিলো। এ সময় সেখানে উপস্থিত ছিলেন সদর উপজেলা যুবদলের যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক সোলায়মান খান। তিনি একটি পক্ষ নিয়ে বিচারকের আদেশ ঘোষণার সময় উত্তেনাজনাপূর্ণ মন্তব্য করেন ও সহকারী জজ খালেদ মিয়াকে হুমকি দেন।
এ ঘটনায় সহকারী জজ খালেদ মিয়া কোর্ট পুলিশ ডেকে সোলায়মানকে আটক করার নির্দেশ দেন। পুলিশ দুপুর দেড়টার দিকে তাকে আটক করে কোর্টের হাজতখানায় রাখে। এরপর বিকেলে সহকারী জজ খালেদ মিয়া বাদী হয়ে একটি মামলার আবেদন করেন। বিকেলে ওই মামলা অতিরিক্ত চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট চাঁদনী রুপমের আদালতে পাঠানো হয়। এরপরই বিএনপিপন্থি আইনজীবীরা ও স্থানীয় বিএনপির নেতারা ওই ব্যক্তিকে ছাড়িয়ে নেয়ার জন্য তৎপর হয়ে ওঠেন। সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে সোলায়মানকে সহকারী জজ খালেদ মিয়ার কক্ষে আনা হলে সেখানে বিএনপিপন্থি আইনজীবী ও বিএনপি নেতাদের উপস্থিতিতে সহকারী জজের কাছে দুঃখ প্রকাশ করে ক্ষমা চান সোলায়মান। এরপর এমন আচরণ আর কখনো করবেন না এমন মুচলেকা দেয়ার পর তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। সন্ধ্যা ৭টার দিকে সোলায়মানকে তার স্বজন ও বিএনপির নেতারা আদালত থেকে নিয়ে যান।
এ ব্যাপারে জানতে চাইলে সোলায়মান খান বলেন, আমার এক প্রতিবেশী ছেলের সাথে তার স্ত্রীর ঝামেলা ছিলো। সেই ব্যাপারে তার সাথে আদালতে গিয়েছিলাম। সেখানে বসে ভুল বোঝাবুঝি হয়েছিলো। পরে বিষয়টি সমাধান হয়ে গিয়েছে।
জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক জামাল উদ্দিন বিদ্যুৎ বলেন, সোলায়মান খান যুবদলের কেউ না। শুনেছি, বিচারকের সাথে খারাপ আচরণ করায় পুলিশ তাকে আটক করেছে।
শরীয়তপুর জজ কোটের পিপি মনিরুজ্জামান দীপু বলেন, বিষয়টি আমার দৃষ্টিগোচর হয়নি। আদালত ও আইনজীবীদের কোনো পক্ষই বিষয়টি আমাকে জানায়নি। সাংবাদিকদের কাছেই প্রথম শুনেছি।
শরীয়তপুর আদালতের পুলিশ পরিদর্শক শিমুল সরকার বলেন, একজন সহকারী জজের মৌখিক নিদের্শে দুপুরে এক ব্যক্তিকে জজ কোর্টের দ্বিতীয়তলা থেকে আমাদের হেফাজতে রাখা হয়েছিলো। পরে সন্ধ্যার দিকে বিচারকের নির্দেশে মুচলেকা নিয়ে বিএনপিপন্থী এক আইনজীবীর জিম্মায় ছেড়ে দেয়া হয়।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available