স্টাফ রিপোর্টার, সিলেট: সিলেট বিপিএল পর্বের দ্বিতীয় দিনেই কাউন্টারে মিলছে না টিকেট, চলে গেছে কালোবাজারিদের হাতে এমন অভিযোগ ক্রিকেটপ্রেমীদের। এমনকি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বিভিন্ন বাহিনীর চোখের সামনেই কালোবাজারিরা দর্শকদের কাছে বেশি দামে টিকেট বিক্রি করছেন। কিন্তু নেওয়া হচ্ছে না কোনো পদক্ষেপ।
৭ জানুয়ারি মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামের প্রধান প্রবেশপথসহ অন্তত ১০টি স্থানে কালোবাজারিরা দর্শকদের কাছে টিকেট বিক্রি করছেন- দেখা গেছে এমন দৃশ্য। তবে বিপিএল সংশ্লিষ্টদের কাছ থেকে এ বিষয়ে কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
সিলেট স্ট্রাইকার্স ও রংপুর রাইডার্সের ম্যাচ দিয়ে সোমবার শুরু হয়েছে বাংলাদেশ প্রিমিয়ার লিগ (বিপিএল)-এর সিলেটে পর্ব। দ্বিতীয় দিন মঙ্গলবার সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়ামে দুপুরে শুরু হয় ঢাকা ক্যাপিটালস ও রংপুর রাইডার্সের খেলা। এটি শেষে সন্ধ্যায় ছিল সিলেট ও বরিশালের খেলা। আর এ ম্যাচকে সামনে রেখেই অপতৎপর হন টিকেট-দালালরা। মঙ্গলবার দুপুরে সিলেট আন্তর্জাতিক ক্রিকেট স্টেডিয়াম এলাকায় গিয়ে জানা যায়- খেলা দেখতে আসা ক্রিকেটপ্রেমীদের অভিযোগের শেষ নেই।
কাউন্টারে টিকেট না পাওয়া যুবক ও তরুণরা জানান- ভোর থেকে তারা টিকেট কাউন্টারে দাঁড়িয়েছিলেন। সকাল ৯টায় কাউন্টার খুলে ঘণ্টাখানেক টিকেট বিক্রির পর ‘আর নেই’ বলে জানান কাউন্টারের লোকজন। তবে পরে মিলতে পারে বলে এসময় কাউন্টারে অপেক্ষমাণ হাজারো দর্শকদের আশ্বাস দেন দায়িত্বরতরা।
এদিকে, কাউন্টারে টিকেট না মিললেও দুপুরে স্টেডিয়ামের ১নং গেট থেকে ৩নং গেট পর্যন্ত রাস্তার ধারে ও পার্কিং করা বিভিন্ন গাড়ির পেছনে অন্তত ১০ জায়গায় দালালদের টিকেট বিক্রি করতে দেখা গেছে। দুপুর দেড়টার দিকে ধরা পড়ে ৪-৫ জন দালালের অতিরিক্ত দামে টিকেট বিক্রি করার চিত্র। এসময় তারা রিপোর্টারের দিকে ক্ষিপ্ত হয়ে উঠেন।
এসময় ভুক্তভোগীরা জানান, দালালরা ১৫০ টাকার টিকেট ৮০০, ৩০০ টাকার টিকেট ১৫০০ ও ৫০০ টাকার পাঁচটি টিকেট ২৫০০ টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছেন।
২৫০০ টাকা দিয়ে পাঁচটি টিকেট কেনা একজন বলেন, আমি সিলেট ও বরিশালের খেলা দেখার জন্য ১ হাজার টাকা গাড়িভাড়া দিয়ে এখানে এসেছি। সকাল থেকে কাউন্টারে দাঁড়িয়ে ১০টার দিকে আমাদের বলা হয় টিকেট নাই। অথচ দালালের কাছ থেকে আমি ৫০০ টাকার টিকেট ২৫০০ টাকা দিয়ে কিনেছি। কী করবো এত কষ্ট করে এসেছি, খেলা তো দেখতে হবে।
তবে এ বিষয়ে বিপিএল কর্তৃপক্ষের কোনো বক্তব্য পাওয়া যায়নি। বিপিএল মিডিয়া শাখার একাধিক কর্মকর্তার মুঠোফোনে বক্তব্য নিতে চাইলে তারা কথা বলতে অপরাগতা প্রকাশ করেন। পরে সিলেট স্টেডিয়ামের ভেন্যু ম্যানেজার জয়দেব দাসকে ফোন দিলে তিনি বলেন, আমি মাঠের ভেতরে রয়েছি পরে কথা বলবো।
ভুক্তভোগীদের অভিযোগ- সংশ্লিষ্টদের যোগ-সাজশেই বিপিএল-এর টিকেট কালোবাজারে যায়। আগে প্রত্যেকবার এমনটি ঘটলেও পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে আগের মতো টিকেট কালোবাজারি হবে না বলে সিলেটের ক্রিকেটভক্তরা মনে করেছিলেন। কিন্তু অবস্থা আগের মতোই বলে তারা চরম হতাশ বলে জানান।
এদিকে, কয়েকজন যুবক জানান- দালালদের টিকেট বিক্রি করার বিষয়টি তারা স্টেডিয়ামের প্রধান ফটকে কর্তব্যরত পুলিশ সদস্যদের জানালেও পুলিশ এ বিষয়ে কিছু করতে পারবে না বলে যুবকদের জানায়। এতে ক্ষোভ প্রকাশ করেছেন টিকেট না পাওয়া ক্রিকেটপ্রেমীরা।
অপরদিকে, আসলের পাশাপাশি জাল টিকেটও বিক্রি করছেন দালালরা। জাল টিকেট কিনে মঙ্গলবার দুপুরে প্রতারিত হয়েছেন গোলাপগঞ্জের ৪ জন। এদের মধ্যে নাইম আহমদ নামের এক কলেজছাত্র বলেন- ‘কাউন্টারে সিলেট-বরিশালের ম্যাচের টিকেট না পেয়ে এক দালালের কাছ থেকে আমরা ৪ বন্ধু তার কাছ থেকে ৪টি টিকেট কিনি। কিন্তু খেলার আগমুহূর্তে গেটে গিয়ে জানতে পারি- টিকেটগুলো জাল। কিন্তু পরবর্তীতে আর ওই দালালকে খুঁজে পাইনি।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available