সদরপুর (ফরিদপুর) প্রতিনিধি: ফরিদপুরের সদরপুর উপজেলায় এ বছর এখনো নতুন বইয়ের ঘ্রাণ পায়নি প্রায় ২০ হাজার প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী। ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার উপজেলার বিভিন্ন বিদ্যালয় ঘুরে দেখা গেছে পাঠ্য বই ছাড়াই ক্লাস করেছে শিশুরা। বছর ঘুরে নতুন শ্রেণীতে উঠেও নতুন বই প্রাপ্তির আনন্দ বঞ্চিত শিশুরা ক্লাসে বসে শুধু শিক্ষকের মুখে আলোচনা শুনে পাঠ নিয়ে চলেছেন।
কিন্তু নতুন বইয়ের অভাবে এ বছর এখনো বাড়িতে অধ্যয়ন করার কোনো সুযোগ হয়নি শিক্ষার্থীদের। ফলে স্কুলে বই ছাড়া উৎসব বিমুখ পাঠদানে উপজেলার শিশুদের মধ্যে অনাগ্রহ দেখা দিয়েছে বলে শিক্ষার্থীরা জানিয়েছে।
উপজেলার ভাষানচর ইউনিয়নের হাওলাদার ডাঙ্গী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে গিয়ে দেখা যায়, বই ছাড়াই ক্লাসের শিশুদের পাঠদান দেওয়া হচ্ছে। শিক্ষকরা মুখে মুখে কোমলমতি শিশুদের মৌলিক শিক্ষা দিয়ে চলেছেন।
বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক এন ইউ প্রিন্স বলেন, এ বছর এখনও আমরা কোনো বই পাইনি। তবুও কিছু পুরাতন বই দিয়ে রীতিমতো আমরা ক্লাস চালিয়ে যাচ্ছি। নতুন বই না থাকায় ক্লাসে শিক্ষার্থীদের উপস্থিতি অনেক কম। যদিও শিক্ষার্থীরা বিদ্যালয়ে আসছে কিন্তু পাঠগ্রহণে তাদের আগ্রহ কম লক্ষ্য করা যাচ্ছে। একই সাথে আনন্দময় ও উপভোগ্য হচ্ছে না শ্রেণি কার্যক্রম পরিচালনা করা।
উপজেলা সদরের সদরপুর মডেল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের ৫ম শ্রেণীর এক শিক্ষার্থী জান্নাতুল মাওয়া জিতু বলেন, নতুন বই না হলে স্কুলে আসতে আনন্দ লাগে না। নতুন বইয়ের অপেক্ষায় আছি। পুরান ক্যালেন্ডার রেডি রেখেছি। নতুন বই হাতে পেলের ক্যালেন্ডার দিয়ে বইগুলো মলাট করবো।
এ বিষয়ে একজন অভিভাবক মাহবুব হোসেন অনিক বলেন, কোন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা এখনো নতুন বই হাতে না পাওয়ায় ঝিমিয়ে পড়েছে উপজেলার প্রাথমিক শিক্ষা ব্যবস্থা। শিক্ষা ব্যবস্থা ঠিক রাখতে নতুন বই দেওয়ার বিষয়ে দ্রুত উদ্যোগ গ্রহণ করা জরুরি।
উপজেলার প্রাথমিক সহকারী শিক্ষা কর্মকর্তা ওয়াহিদ খান বলেন, উপজেলায় রয়েছে ১৩০টি প্রাথমিক বিদ্যালয়। এছাড়া প্রায় ২০টি কেজি স্কুল। বিভিন্ন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা নিজ উদ্যোগে পুরাতন কিছু বই সংগ্রহ করে কোন রকম ঢিলেঢালা ভাবে ক্লাস করছেন।
আজ বৃহস্পতিবার আমরা ১ম শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত এবং ২য় শ্রেণীর বাংলা, ইংরেজি ও গণিত বিষয়ের ৩টি করে বই পেয়েছি, শীঘ্রই আমরা এসব বই বিদ্যালয় এগুলোতে বিতরণ করবো। কবে নাগাদ বাকি বইগুলো পাবো সেটা এখন শিওর বলা সম্ভব হচ্ছে না তবে শীঘ্রই বাকি বইগুলো চলে আসবে।
উপজেলার ভারপ্রাপ্ত মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা মোফাজ্জেল হোসেন বলেন, উপজেলায় প্রাথমিক বিদ্যালয়ের মতো ২৫টি মাধ্যমিক বিদ্যালয় ও ৫টি মাদ্রাসার প্রায় ১২ হাজার শিক্ষার্থীরাও এখনো সব বই পায়নি। আমরা ৬ষ্ঠ শ্রেণীর ৩টি, ৭ম শ্রেণীর ৩টি, ৮ম শ্রেণীর ২টি, ও ১০ম শ্রেণীর ৩টি বিষয়ের বই পেয়েছি। এসব বই ইতোমধ্যে আমরা বিদ্যালয়গুলোতে বিতরণ করেছি। মাধ্যমিক ও মাদ্রাসার শিক্ষার্থীরা বাকি বইয়ের অপেক্ষায় রয়েছেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available