নাঙ্গলকোট (কুমিল্লা) প্রতিনিধি: কুমিল্লার নাঙ্গলকোটে প্রেমিকের সাথে দেখা করতে এসে দুই তরুণী দলবদ্ধ ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। এ ঘটনায় ১৩ জানুয়ারি সোমবার রাতে নাঙ্গলকোট থানায় একটি ধর্ষণ মামলা দায়ের করেছেন ভুক্তভোগী তরুণীদের একজন। এতে প্রেমিকসহ সাত জনকে আসামি করা হয়েছে।
মামলার প্রধান আসামি উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন নুরপুর গ্রামের শহীদুল ইসলাম, দ্বিতীয় আসামি করা হয়েছে ভোমরা গ্রামের আলী মিয়ার ছেলে স'মিল মালিক খোকন মিয়া এবং তৃতীয় আসামি নুরপুর গ্রামের রঞ্জু মিয়ার ছেলে ইউনিয়ন যুবদল নেতা মহসিনসহ মোট ৭ জন।
এর আগে ৯ জানুয়ারি বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন নুরপুর গ্রামের সেবাখোলা বাজারের খোকন মিয়ার স'মিল ঘরের ভেতরে এ ধর্ষণের ঘটনা ঘটে। মঙ্গলবার ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে আসামিদের কেউই এলাকায় নেই। তাঁদের মুঠোফোন নম্বরও বন্ধ রয়েছে।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা যায়, ধর্ষণের শিকার ওই দুই তরুণী সম্পর্কে একে অপরের ঘনিষ্ঠ বান্ধবী। এক জনের বাড়ি লক্ষ্মীপুর জেলায় এবং অপর জনের বাড়ি চাঁদপুরে। কুমিল্লা নগরের টমছমব্রিজ এলাকার একটি বাসায় তাঁরা উভয়ে ভাড়া থাকেন এবং স্থানীয় বাসায় গৃহকর্মী হিসেবে কাজ করেন।
জানা যায়, উপজেলার বাঙ্গড্ডা ইউপির নুরপুর গ্রামের শহীদুল ইসলামের সঙ্গে তাঁদের একজনের মুঠোফোনে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বৃহস্পতিবার সে সূত্র ধরে তাঁরা শহীদুলের সঙ্গে দেখা করতে আসেন। প্রেমিক শহীদুল, যুবদল নেতা মহসিন ও স'মিল মালিক খোকন মিয়া তাঁদের দুজনকে সেবাখোলা বাজারে খোকন মিয়ার স'মিলে তুলে নিয়ে যায়।
এ সময় তাদের কাছে থাকা নগদ টাকা-পয়সা, দুইটি মোবাইল ফোন, মূল্যবান জিনিসপত্রসহ গলায় থাকা একটি রুপার চেইন নিয়ে যায় এবং প্রেমিক শহীদুল, যুবদল নেতা মহসিন ও স'মিল মালিক খোকনের নেতৃত্বে ৭ জন মিলে দুপুর ১২টা থেকে বিকেল ৪টা পর্যন্ত দলবদ্ধভাবে টানা তাঁদের ধর্ষণ করে যায়।
এ ঘটনার ভিডিও ধারণ করে রাখে ধর্ষণকারীরা। বিষয়টি কাউকে জানালে ভিডিও সোশ্যাল মিডিয়ায় ছড়িয়ে দেওয়ার হুমকিও দেওয়া হয়। এরপর মঙ্গলবার ঘটনাটি জানাজানি হওয়ার পর থেকে প্রেমিক শহিদুল, স'মিল মালিক খোকন মিয়া ও যুবদল নেতা মহসিন এলাকা থেকে পালিয়ে যায়। তাঁদের ফোন নম্বর বন্ধ থাকায় বক্তব্য নেওয়া সম্ভব হয়নি।
তবে মহসিনের বাবা রঞ্জু মিয়া বলেন, আমার ছেলে যুবদলের রাজনীতি করে। এ জন্য স্থানীয় রাজনৈতিক একটি গ্রুপ আমার ছেলের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপপ্রচার চালাচ্ছে। এর আগেও তার বিরুদ্ধে অনেক অপপ্রচার করা হয়েছিল, কিন্তু তাতে কোন লাভ হয়নি তাদের। এখন আবার মেয়ে দিয়ে আমার ছেলেকে ফাঁসানোর চেষ্টা চলছে।
যুবদল আহ্বায়ক মনিরুল ইসলাম বলেন, মহসিন আমাদের যুবদলের কেউ নয়, সে বাঙ্গড্ডা ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান আওয়ামী লীগ নেতা সাইফুল ইসলামের অনুসারী। ৫ আগস্টের পর যুবদলের নাম দিয়ে এলাকায় পোস্টারিং করে। অপরাধী যেই হোক তাদের আইনের আওতায় এনে শাস্তির ব্যবস্থা গ্রহণ করা হোক।
নাঙ্গলকোট থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা এ কে ফজলুল হক বলেন, ঘটনা ঘটনার চার দিন পর সোমবার রাতে থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে। বিষয়টি আগেই জানাজানি হওয়ায় আসামিরা এলাকা থেকে পলাতক রয়েছেন। তাঁদের ধরতে বিভিন্ন স্থানে অভিযান পরিচালনা করছে পুলিশ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available