মো. তৌহিদুর রহমান তুহিন, সাদুল্লাপুর (গাইবান্ধা) প্রতিনিধি: গাইবান্ধার সাদুল্লাপুরে গত কয়েক বছরের তুলনায় এবার বৃষ্টি কম হওয়ার কারণে ফলন কম হলেও দাম ভালো পাওয়ায় কৃষকদের মুখে ফুটে উঠেছে তৃপ্তির হাসি। উপজেলার ইদিলপুর ও ধাপেরহাট ইউনিয়নসহ আশেপাশের কয়েকটি ইউনিয়নের চাষীরা শশা চাষ করে লাভবান হয়েছে।
ইদিলপুর ইউনিয়নের দক্ষিণ লক্ষীপুর গ্রামের শিক্ষিত বেকার যুবক জাহিদ জানায়, লেখা পড়ার পাশাপাশি আমি বাবাকে কৃষিকাজে সহযোগিতা করতাম। তবে চাকুরি না পাওয়ায় বেকারত্ব ঘুচাতে কৃষিকাজে মনোযোগী হই। গত মৌসুমে আমি ফুল কপি, বাঁধা কপি ও টমেটো চাষ করে উৎপাদন খরচও তুলতে পারিনি। সেই জমিতে এবার শসা লাগিয়েছি। ফলন ভালো না হলেও দাম ভালো থাকায় ক্ষতি পুষিয়ে লাভের মুখ দেখছি।
ধাপেরহাট ইউনিয়নের হিংগারপাড়া গ্রামের কৃষক মাসুদ আলী জানান, আমি ৫০ শতাংশ জমিতে শশার চাষ করেছি। ১২ রমজান থেকে ৪ এপ্রিল পর্যন্ত তিন লাখের বেশি টাকা বিক্রি করেছি। আজও সাত মণ শশা ১০ হাজার টাকা বিক্রি করেছি। গাছের বয়স হওয়ায় ফুল ফল কমে গেছে, হয়তো আর এক সপ্তাহ শশা উত্তোলন করা যাবে।
হিংগার পাড়া গ্রামের কৃষকের স্ত্রী লিমা বেগম জানান, শশা চাষে খুব পরিশ্রম হয়। ভালো দাম পাওয়ায় সেই পরিশ্রম ও কষ্টের কথা ভুলে গেছি। ১২ দিনে ৩০ শতাংশ জমি থেকে এক লাখ টাকার উপরে শশা বিক্রি করেছি।
এদিকে ধাপেরহাট বাজারের একাধিক শশা ব্যবসায়ী জানায়, উৎপাদন কম হওয়ায় ও বাজারে চাহিদা থাকায় আমরা বাজারে শশা পাচ্ছি না। ফরিয়া ব্যবসায়ীরা রাস্তা মোড়ে মোড়ে শশা কিনে আমাদের নিকট বিক্রি করছে। আমাদের লাভ কম হলেও কর্মসংস্থান হয়েছে অনেক মানুষের, আমরাও কম বেশী লাভ করছি। ধাপেরহাট এলাকার উৎপাদিত শশার কদর সারা বাংলায়। কারণ এখানকার শশার স্বাদই আলাদা।
ধাপেরহাট ইউনিয়নের ইউপি সদস্য শাহ আব্দুর রাজ্জাক বলেন, এ বছর শশা চাষীরা দাম ভালো পাওয়ায় লাভবান হয়েছে। তিনি বলেন, আমাদের এলাকায় মাচায় শশা চাষ হয় তাই উৎপাদন খরচ একটু বেশী হলেও এ বছর কৃষক লাভ করেছে।
এ বিষয়ে সাদুল্লাপুরের উপজেলা কৃষি অফিসার মতিউল আলম বলেন, সারাদেশে লালমাটি অধিষ্ঠিত ধাপেরহাটের উৎপাদিত শশার ব্যাপক চাহিদা। অন্যান্য এলাকার শশার থেকে এ এলাকার শশার স্বাদ ব্যতিক্রম। আমাদের যে লক্ষ্য মাত্রা ছিল তার তুলনায় বৃষ্টির অভাবে শশার ফলন কম হয়েছে।
তবে এ বছর কৃষক এক মণ শশা ২ হাজার ৮ শত টাকা পর্যন্ত বিক্রি করছে। বর্তমান বাজার দুই হাজারের কম হলেও লাভবান কৃষক। অতিরিক্ত দামের কারণে সব কৃষকই কম বেশি লাভবান হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available