মোঃ মাইনুল হক, নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারীর সৈয়দপুরে প্রেমের প্রস্তাবে রাজি না হওয়ায় সহপাঠীর বিরুদ্ধে ছাত্রীকে শ্লীলতাহানির অভিযোগ পাওয়া গেছে। এ ঘটনায় ভুক্তভোগীর বাবা বাদী হয়ে দু’জনের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাতনামা আরও পাঁচজনকে আসামি করে থানায় মামলা দায়ের করেন।
৬ মে শনিবার মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এস আই আহসান হাবীব ও তার সঙ্গীয় ফোর্স সৈয়দপুর প্লাজা সুপার মার্কেট থেকে মামুন আলম নামে এক আসামিকে গ্রেফতার করেছে।
মামলায় এজাহারভুক্ত আসামিরা হচ্ছেন শহরের বাঁশবাড়ী শহীদ মাহাতাব বেগ লেনের বাসিন্দা তৌহিদ গুল ফ্যাক্টরির (ওয়ান স্টার গুল) মালিক মো. জাবেদ ওরফে চঞ্চলের ছেলে জুনায়েদ তৌহিদী (১৯) এবং শহরের নয়াটোলা এলাকার মো. শহিদ আলমের ছেলে মো. মামুন আলম (১৯)।
মামলা সূত্রে জানা যায়, ভুক্তভোগী সৈয়দপুর ক্যান্ট পাবলিক স্কুল এন্ড কলেজের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্রী (১৮)। সে নিয়মিত নিজেদের প্রাইভেট কারে করে দিনাজপুরের পার্বতীপুর শহরের বাসা থেকে কলেজে যাওয়া আসা করেন। আর তাকে প্রায় সময় প্রেমের প্রস্তাব দেওয়াসহ বিভিন্ন কুপ্রস্তাব দিয়ে আসছিল সহপাঠী জুনায়েদ তৌহিদী। কিন্তু কলেজছাত্রী সহপাঠীর দেওয়া প্রেমের প্রস্তাবে রাজি হয়নি। এতে ওই সহপাঠী কলেজছাত্রীকে নানা প্রকার ভয়ভীতি প্রদর্শন করে।
৩ মে বুধবার বেলা তিনটার দিকে কলেজ ছুটির পর ওই ছাত্রী প্রাইভেট কার (ঢাকা মেট্রো-গ-১৪-৯৪৩১) করে পার্বতীপুরের উদ্দেশে রওনা হন। আর তাকে বহনকারী গাড়িটি বেলা সোয়া তিনটার দিকে সৈয়দপুর-পার্বতীপুর সড়কের চেকপোস্ট মোড়ে ব্রিজের কাছে পৌঁছে। এ সময় চারটি মোটরসাইকেলে জুনায়েদ তৌহিদী, মো. মামুন আলমসহ কয়েকজন এসে কলেজছাত্রীকে বহনকারী প্রাইভেট কারের গতিরোধ করে।
এরপর জুনায়েদ তৌহিদী প্রাইভেট কারের পেছনের বাঁ দিকের দরজা লাথি মারে এবং জোরপূর্বক গাড়ির দরজা খুলে টানাহেঁচড়া করে কলেজছাত্রীকে বের করে সড়কে ফেলে দেন। পরে ছাত্রীকে এলোপাতাড়ি মারধর করা শ্বাসরোধ করার চেষ্টাসহ কলেজ ইউনিফর্ম ছিঁড়ে ফেলে। পেটে সজোরে একাধিকবার লাথিও মারে।
এ সময় প্রাইভেটকারের চালক মো. শাকিল কলেজছাত্রীকে রক্ষা করতে এগিয়ে এলে অভিযুক্তরা তাকেও কিলঘুষি মারে। কলেজছাত্রী নিজেকে রক্ষার জন্য আবার গাড়িতে উঠতে চেষ্টা করলে জুনায়েদ তৌহিদী পুনরায় তাকে টেনেহেঁচড়া করে বাইরে ফেলে দেয় এবং তার শরীরের বিভিন্ন জায়গায় লাথি ও কিলঘুষি মারতে থাকে। এতে কলেজছাত্রীর ডান হাত ভেঙে যাওয়াসহ পুরো শরীরে গুরুতর আঘাতপ্রাপ্ত হওয়ায় সৈয়দপুর ১০০ শয্যা হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।
পরে শুক্রবার কলেজছাত্রীর বাবা বাদী হয়ে জুনায়েদ তৌহিদী ও মো. মামুন আলমের নাম উল্লেখসহ অজ্ঞাত আরও পাঁচজনকে আসামি করে সৈয়দপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলায় প্রাইভেট কারটি ভাঙচুরের অভিযোগও করা হয়েছে।
মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করে সৈয়দপুর থানায় ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. সাইফুল ইসলাম বলেন, মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মামুন আলমকে শনিবার গ্রেফতার করা হয়েছে। মামলাটি গুরুত্বের সঙ্গে তদন্ত করাসহ অন্য আসামিদের গ্রেফতারের জোর প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
উল্লেখ্য, টাকার বিনিময়ে বিষয়টি ধামাচাপা দিতে সর্বাত্মক প্রচেষ্টা চালিয়েছিল জুনায়েদ তৌহীদির পরিবার। যেকারণে মামলা নথিভুক্ত করতে বিলম্ব করা হয়েছে। অভিযোগ রয়েছে প্রধান আসামীকে ভারতে পালিয়ে যাওয়ার সুযোগ করে দেয়া হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available