নুরুল হক সিকদার, রামু (কক্সবাজার) প্রতিনিধি: কক্সবাজারের উখিয়ায় লুলু আল মারজান নামে এক নারী নেত্রীকে কুপিয়ে হত্যার ঘটনায় জড়িত ২ জনকে আটক করেছে পুলিশ।
আটকরা হলো- পালংখালী ৭ নং ওয়ার্ডের মৃত শফিকুর রহমানের ছেলে জাহাঙ্গীর আলম (৭০) ও তার ছেলে মোঃ সেলিম।
৬ মে শনিবার দিবাগত রাতে প্রায় ৭ ঘন্টা অভিযান চালিয়ে তাদের দু’জনকে আটক করা হয়। রোববার সকালে বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন উখিয়া থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) শেখ মোহাম্মদ আলী।
তিনি বলেন, গোপন সংবাদ ভিত্তিতে চট্টগ্রামের লোহাগড়া এলাকা থেকে নারী নেত্রী মারজান হত্যায় জড়িত দুই আসামিকে গ্রেফতার করা হয়েছে। হত্যাকাণ্ডের মূলহোতা ইউসুফসহ বাকি আসামিদের গ্রেফতারের বিষয়ে অভিযান অব্যাহত রেখেছে পুলিশ।
এর আগে নারী নেত্রী লুলু আল মারজান হত্যাকান্ডের ঘটনায় চার জনের নাম উল্লেখ করে, আরও অজ্ঞাতনামা চার জনের বিরুদ্ধে উখিয়া থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেছেন নিহতের মেজ মেয়ে।
জানা যায়, গত ৪ মে বৃহস্পতিবার রাত ৮টার দিকে উপজেলার পালংখালী ইউনিয়নের ৭ নং ওয়ার্ডের পশ্চিম পালংখালী এলাকায় নিহত লুল আল মারজানের বসতবাড়িতে এ ঘটনা ঘটে। নিহত নারী ওই এলাকার মৃত আলমগীর মেম্বারের কন্যা। তিনি পালংখালী উচ্চ বিদ্যালয়ের পরিচালনা কমিটির সদস্য এবং গত পালংখালী ইউপি নির্বাচনে ৭, ৮ ও ৯ নম্বর ওয়ার্ডে সংরক্ষিত নারী আসনে ইউপি সদস্য পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করেছিলেন। তিন সন্তানের জননী তিনি। তার স্বামী ৩-৪ বছর আগে অজ্ঞাত রোগে আক্রান্ত হয়ে মারা যায়। এরপর থেকেই লুল আল মারজান সন্তানদের নিয়ে খুবই মানবেতর জীবনযাপন করছিলেন।
এঘটনায় অভিযুক্ত মোহাম্মদ ইউসুফ নিহত মারজানের আপন চাচাতো ভাই।
নিহতের স্বজন মাজেদ জানায়, জমি সংক্রান্ত বিরোধের জের ধরে আলোচিত ডাকাত ইউসুফ তার খালা মারজানকে জবাই করে হত্যা করেছে। তিনি আরও জানান, ১৯৯৯ সালে তার নানা আলমগীর মেম্বার অর্থাৎ নিহত মারজানের বাবাকেও ইউসুফের বাবা জাহাঙ্গীর আলম হত্যা করেছিলেন। তার নানা আলমগীর হত্যাকাণ্ডের বিচার হয়নি বলেই আজ তার খালা মারজানকেও হত্যা করার সাহস পেয়েছে ইউসুফ।
নিহতের ছোট কন্যা রাহমিনা মমতাজ জানান, গেল ১০ রমজানে আমার মাকে ইউসুফ ও তার পরিবারের সদস্যরা হত্যার উদ্দেশ্যে হুমকি দেন। তারা মাকে বলেন, তোর বাবাকে হত্যা করে আমরা এ পৃথিবীতে বেঁচে আছি, তোকে হত্যা করলেও আমাদের কিছু হবে না। হত্যার হুমকির বিষয়ে মা থানায় একটি জিডি করেছিলেন। এনিয়ে আজকে থানায় বিচার হওয়ার কথা ছিল। আজ পুলিশ বিচার না করায়, এশারের আযানের সময় ইউসুফ বাড়িতে ঢুকে প্রথমে বাড়ির গেইট ভাংচুর করে, এরপর মায়ের চিৎকার শুনে, আমার দুই বোন এগিয়ে গেলে তাদেরকেও এলোপাতাড়ি কুপানো হয়। এসময় দায়ের কোপে গুরুতর আহত হয় আমার দুই বোন ও এক ভাগিনা।
স্থানীয় জনপ্রতিনিধিরা জানায়, ইউসুফ একজন মাদক ও অস্ত্র কারিগর। এর আগে র্যাব তাকে অস্ত্র ও অস্ত্র তৈরির সরঞ্জামসহ গ্রেফতার করে। কারামুক্ত হয়ে হত্যাকাণ্ডটি ঘটায় ইউসুফ।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available