মোহাম্মদ শফিক, জেলা প্রতিনিধি (কক্সবাজার): কক্সবাজার জেলার উখিয়ার পালংখালি এলাকা থেকে ভয়ংকর মাদক আইসের (ক্রিস্টাল মেথ) সর্ববৃহৎ চালান আটক করা হয়েছে। এসময় ২৪.২ কেজি আইস আটক করা হয়, যার মূল্য ১২০ কোটি টাকা।
৬ মে শনিবার দিবাগত রাতে ইরান মাঝির আস্তানায় অভিযান চালিয়ে বিশেষ কায়দায় লুকায়িত অবস্থায় এসব মাদক উদ্ধার করা হয়। এই চোরাচালানের অন্যতম হোতা ইরান মাঝিসহ ৪ জনকে গ্রেফতার করেছে র্যাব-১৫।
আটকরা হলেন- কক্সবাজার কেন্দ্রিক আইস চোরাচালানের অন্যতম হোতা মৃত সিরাজুল ইসলামের পুত্র ইমরান প্রকাশ ইরান মাঝি (৩৩), তার সহযোগী মোঃ রুবেল প্রকাশ ডাকাত রুবেল (২৬), মৃত আলী আহাম্মদের পুত্র মোঃ আলাউদ্দিন (৩৫) ও মৃত আব্দুল করিমের পুত্র জয়নাল আবেদীন প্রকাশ কালা বদা (৩৭)।
র্যাব জানায়, প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে গ্রেফতাররা পরস্পর যোগসাজসে পার্শ্ববর্তী দেশ হতে মাদক চোরাচালানের সাথে সম্পৃক্ততার বিষয়ে তথ্য প্রদান করে।
এ বিষয়ে বিস্তারিত জানাতে রোববার দুপুরে র্যাব-১৫ এর কার্যালয়ে এক সংবাদ সম্মেলনের আয়োজন করা হয়। এসময় র্যাবের আইন ও গণমাধ্যম শাখার পরিচালক খন্দকার আল মঈন বলেন, আটকদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে জানা যায়, গ্রেফতাররা পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক চোরাচালান চক্রের যোগসাজসে দেশে অবৈধ মাদক আইস চোরাকারবারির সাথে জড়িত। মূলত গ্রেফতার ইরান মাঝি এই চক্রের মূল হোতা। তার নেতৃত্বে মাদক সিন্ডিকেটের কার্যক্রম পরিচালিত হয়। ইরান মাঝির নেতৃত্বে চক্রটির বেশ কয়েকজন সদস্য পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে দূর্গম সীমান্তবর্তী এলাকা দিয়ে কক্সবাজার ও ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে ক্রিস্টাল আইসসহ অন্যান্য ভয়ংকর মাদক চোরাচালানের সাথে জড়িত। এই চক্রটি মূলত কক্সবাজার কেন্দ্রিক একটি মাদক চোরাকারবারী চক্র এবং রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের নির্ধারিত এজেন্ট রয়েছে। প্রথমে ইরান মাঝির নেতৃত্বে চক্রের সদস্যরা পার্শ্ববর্তী দেশের মাদক চক্রের নিকট হতে মাদক গ্রহণ করে অবৈধ পথে ঘুমধুম সীমান্ত হয়ে তারা মাদকগুলো বর্ডারের নিকটবর্তী গোপন স্থানে জমা করে। পরবর্তীতে সেখান থেকে তারা দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চল/নৌপথ ব্যবহার করে বিভিন্ন কৌশলে পার্শ্ববর্তী দেশ থেকে আনা ক্রিস্টাল আইসসহ অন্যান্য মাদক কক্সবাজারের রোহিঙ্গা ক্যাম্পসহ দূর্গম পাহাড়ি অঞ্চলের বিভিন্ন স্থানে লুকিয়ে রাখত। এরপর সুবিধাজনক সময়ে চক্রটি মাদকের চালানগুলো ইরান মাঝির জামতলির সফিউল্লাহ কাটা সংলগ্ন পাহাড়ী এলাকার বাড়িতে আস্তানায় নিয়ে আসত এবং নিজেদের মাঝে বন্টন করত। অতঃপর পর্যায়ক্রমে তারা বিভিন্ন উপায়ে শরীরের মধ্যে বেঁধে, গাড়িতে সেট করে এবং যোগান হিসেবে রাজধানীমুখী বিভিন্ন পরিবহনের মাধ্যমে ঢাকাসহ চাহিদা অনুযায়ী দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে প্রেরণ করত।
সর্বশেষ তারা শনিবার এই চালানটি উক্ত আস্তানায় নিয়ে আসে। পরবর্তীতে সেখান থেকে মাদকের চালানটি তারা চার ভাগে ভাগ করে রাজধানীসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে তাদের এজেন্টদের নিকট পৌঁছে দেয়ার পরিকল্পনা ছিলো।
গ্রেফতারদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা প্রক্রিয়াধীন রয়েছে বলে র্যাবের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available