রংপুর ব্যুরো: বাংলাদেশ কৃষি উন্নয়ন কর্পোরেশন (বিএডিসি)'র আওতায় স্থাপিত গভীর নলকূপটি গোপনে স্থানীয় প্রভাবশালীদের কাছে বিক্রির অভিযোগ উঠেছে। রংপুরের পীরগঞ্জ উপজেলার বড় আলমপুর ইউনিয়নের তাতার পুর মৌজায় সেচ পরিচালনাকারী দায়িত্বে থাকা ম্যানেজারসহ সদস্যদের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ উঠে।
অভিযোগে জানা যায়, ওই সেচের আওতাভুক্ত কৃষকরা দীর্ঘদিন ধরে ওই গভীর নলকূপ থেকে জমিতে পানি সেচ দিয়ে আসিতেছিল। তবে প্রত্যেক মৌসুমে ধান চাষাবাদে গভীর নলকূপটি থেকে ধান চাষীরা পর্যাপ্ত পানি সেচ দিতে না পারার কারণে ধানের ফলন হয় না। এতে প্রত্যেক মৌসুমে সাধারণ কৃষকরা ভীষণ ক্ষতিগ্রস্ত হয়। গভীর নলকূপটি বর্তমান পরিচালনাকারী কমিটিগণ দীর্ঘদিন ধরে নিজেদের ইচ্ছেমতো খামখেয়ালি করে পরিচালনা করে আসছেন। এতে সাধারণ কৃষকরা কাঙ্ক্ষিত সেচ থেকে বঞ্চিত হয়েছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, বছরের পর বছর ধরে গভীর নলকূপটি স্থাপনের পর থেকেই পরিচালনা করে আসছিলেন শিমুলবাড়ী গ্রামের হিরু মিয়া, খোরশেদ আলম জুয়েল, মৃত মোস্তাফিজার রহমান ও মৃত জেনারুল ইসলাম। এরা সকলেই আপন চার ভাই এবং তাদের বোন জামাই তৈয়ব আলী (৫ জন মিলে) এটি পরিচালনা করে আসছেন।
ওই কমিটিটি পুরোটাই একটি পরিবারের দখলে। এছাড়া সেখানে অন্যান্য কোনো কৃষককে পরিচালনা কমিটিতে রাখা হয়নি। কমিটির ৫ জন সেদস্যের মধ্যে ২ সদস্য আপন দুই ভাই মোস্তাফিজার ও জিনারুল। তারা আজ থেকে প্রায় ৫ -৭ বছর পূর্বে মারা গেছেন। সেই থেকে আপন দুই ভাই ও বোন জামাইকে নিয়ে বছরের পর বছর ধরে নিজেদের সম্পত্তি মনে করে পরিচালনা করে আসছেন বিএডিসি'র গভীর নলকূপটি।
কৃষক আমিনুল ইসলাম, আহাদ আলী, সিরাজুল ইসলাম, রহিম মিয়া, রন্জু মিয়া অভিযোগ করে বলেন, বছরের পর বছর একই কমিটি দিয়ে পরিচালনা করা হচ্ছে নলকূপটি। সেচ পরিচালনা কমিটিতে ওই সেচের আওতায় সাধারণ কোনো কৃষককেই সদস্য করা হয়নি। সদস্য করা হয়েছে আপন চার ভাই ও বোন জামাইসহ ৫ জনকে।
অপরদিকে কৃষক জাকির হোসেন, ইসমাইল, রাজা মিয়া, আব্দুর রশিদ ও সায়েদ বলেন, সরকারি সম্পত্তি গভীর নলকূপের ম্যানেজারসহ অন্যান্য সদস্যরা মিলে মোটা অঙ্কের টাকার বিনিময়ে স্থানীয় কয়েকজনের কাছে বিক্রি করে দিয়েছেন তারা । অনেকের মুখে মুখে শোনা গেছে গভীর নলকূপটি প্রায় ৭ লাখ টাকায় বিক্রি করা হয়েছে।
সরকারি জিনিস কীভাবে বিক্রি করে তারা, আর এটা কীভাবে সম্ভব। নলকূপের পরিচালনা কমিটি ও ম্যানেজার বাতিল চাই আমরা, বাতিল করে নতুন কমিটি গঠন করা হোক এমনটাই দাবী সকল কৃষকের।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে উপজেলা উপ-সহকারী (নির্মাণ) বিএডিসি কর্মকর্তা নাজমুস সাদাত বলেন, অভিযোগ পেয়েছি ওখানকার অনেক কৃষকেরা স্বাক্ষরিত একটি অভিযোগে উল্লেখ করেছেন, গভীর নলকূপটি গোপনে বিক্রি করেছে ও বর্তমান কমিটি বাতিল করে নতুন কমিটি গঠনেরও দাবি করেছেন তারা। তবে বর্তমানে যে একই পরিবারের সদস্যরা মিলে গভীর নলকূপটি পরিচালনা করছিলেন তা আমার জানা ছিলো না। তদন্ত করে তাঁদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।
বিএডিসি রংপুর জোনের সহকারী প্রকৌশলী (সওকা) সাইফুল ইসলাম বলেন, এ ব্যাপারে অভিযোগ পেয়েছি, তবে তাদের বিরুদ্ধে তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available