পিরোজপুর প্রতিনিধি: পিরোজপুরের স্বরূপকাঠী উপজেলার একটি ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুলের কারণে এক শিক্ষার্থীর পা কেটে ফেলতে হয়েছে বলে অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় বৃহস্পতিবার ওই শিক্ষার্থীর সহপাঠীরা ‘হেলথকেয়ার’ নামের ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি ঘেরাও করে। পরে এটিকে বন্ধ ঘোষণা করা হয়।
জানা গেছে, ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীর নাম জিহাদুল ইসলাম (১৪)। সে উপজেলার সোহাগদল গ্রামের মো. আমিনুল ইসলাম মিলন মিয়ার ছেলে এবং নবম শ্রেণির ছাত্র। সে কয়েকদিন আগে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে পায়ে ব্যথা পায়। এ অবস্থায় নেছারাবাদ উপজেলা হাসপাতালের জরুরি বিভাগে গেলে চিকিৎসক পায়ের গোড়ালি এক্সরে করার জন্য তাকে হাসপাতাল সংলগ্ন হেলথকেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে পাঠান। সেখানকার টেকনিশিয়ান চিকিৎসকের দেওয়া পরীক্ষার কাগজ না দেখেই এক্সরে করেন হাঁটুতে। চিকিৎসক সেই এক্সরে রিপোর্ট দেখে ছেলেটির পুরো পা ব্যান্ডেজ করে ছেড়ে দেন। এর কয়েক দিনের মাথায় জিহাদুলের পায়ে পচন ধরে। এ কারণে তার পুরো পা কেটে ফেলতে হয়।
ওই স্কুল ছাত্রের পিতা আমিনুল ইসলাম মিলন অভিযোগ করেন, ছেলেটি ২০ দিন পূর্বে মোটরসাইকেল থেকে পড়ে গিয়ে ডান পায়ে একটু ব্যথা পেয়েছিল। নেছারাবাদ হাসপাতালে ডাক্তারের কাছে নিয়ে যাই। ডাক্তার ছেলের ডান পায়ের গোড়ালি পরীক্ষা করার জন্য প্রেসক্রিপশনে লিখে দেন। পরে পরীক্ষার জন্য হাসপাতাল সংলগ্ন হেল্থ কেয়ার ডায়াগনস্টিক সেন্টারে নিয়ে গেলে সেখানকার টেকনিশিয়ান পায়ের গোড়ালি এক্সরে না করে পায়ের হাঁটু এক্সরে করে।
ডাক্তার সেই এক্সরে রিপোর্ট দেখে হাঁটু ব্যান্ডেজ করেন। এতে কয়েক দিনের মাথায় পায়ে ব্যথা শুরু হয়। অবস্থা খারাপ দেখে ঢাকার পিজি হাসপাতালে নিয়ে গেলে সেখানকার ডাক্তাররা পরীক্ষা করে দেখেন ছেলের পায়ের গোড়ালির রগ ছিড়ে গিয়েছিল। ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ভুল রিপোর্টে এবং ভুল চিকিৎসায় ছেলের পায়ের ভিতর থেকে পচে গেছে। পরে সেখানকার ডাক্তাররা বোর্ড বসিয়ে সিদ্ধান্ত নিয়ে ছেলের পা কেটে ফেলেছে। আমরা এর উপযুক্ত বিচার চাই।
ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালকের একজন মো. মাসুদ রানা বলেন, ওই ছেলের কথামতো আমরা এক্সরে করে দিয়েছি। তবে ডাক্তারের দেয়া প্রেসক্রিপশন দেখে এক্সরে করে দিলে আমাদের সমস্যা হতো না। আসলে আমাদের ভুল হয়েছে।
নেছারাবাদ হাসপাতালের স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. আসাদুজ্জামান জানান, ওই ডায়াগনস্টিক সেন্টারের ডাক্তারের দেয়া প্রেসক্রিপশনে লেখা এক্স-রের জায়গা দেখে পরীক্ষা করলে ছেলেটির এত বড় সমস্যা হতো না। আমি ভুক্তভোগীদের মৌখিক অভিযোগে ডায়াগনস্টিক সেন্টারটি সাময়িকভাবে বন্ধ রাখতে নির্দেশ দিয়েছি। তদন্ত চলছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available