নীলফামারী প্রতিনিধি: নীলফামারী ইটাখোলা ইউনিয়ন ছারারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের কর্মকান্ড নিয়ে শিক্ষার্থী অভিভাবক ও জনমনে চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে। এই বিদ্যালয়ের শিক্ষা কার্যক্রমে মুখ থুবড়ে পড়েছে।
বিদ্যালয়ের দপ্তর সূত্রে জানা গেছে, ১৯৯৪ সালে বিদ্যালয়টি স্থাপিত হয়। এমপিও ভুক্ত হয় ১৯৯৯ সালে। ২০২৩ সালের ১২ জানুয়ারি বিদ্যালয়টি উচ্চ মাধ্যমিক হিসাবে শিক্ষামন্ত্রণালয় থেকে স্বীকৃতি পায়।
সরজমিনে বিদ্যালয় গিয়ে জানা যায়, ৬ষ্ঠ শ্রেণিতে মোট শিক্ষার্থী ভর্তি তালিকায় রয়েছে ৪১ জন। তবে উপস্থিতি পাওয়া গেছে ১৩ জন শিক্ষার্থীকে। ৭ম শ্রেণিতে অনুরুপ ভাবে ৪৫ জন শিক্ষার্থী ভর্তি তালিকায় থাকলেও উপস্থিত পওয়া গেছে ১২জনকে।
কাগজে কলমে ছাত্র-ছাত্রীর সংখ্যা তিন গুন বাড়িয়ে উপবৃত্তির শর্ত পুরণ করে ২২জন শিক্ষার্থীর নামে উপবৃত্তি আদায় করা হচ্ছে শিক্ষা মন্ত্রণালয় থেকে। একই ভাবে ৮ম শ্রেণির ভর্তির তালিকায় ৮৫ জন দেখানো হলেও বাস্তবে উপস্থিত রয়েছে ২৫ জন আর উপবৃত্তি পাচ্ছে ৩২ জন। ৯ম শ্রেণিতে ৩৫ জন ভর্তি তালিকায় থাকলেও উপস্থিতি পাওয়া গেছে ৪ জন। আর উপবৃত্তি পাচ্ছেন ৯ জন। ১০ম শ্রেণিতে ৪১ জন ভর্তি পরিক্ষায় দেখানো হলেও উপস্থিত রয়েছেন ৫ জন। আর উপবৃত্তি পাচ্ছেন ২০ শিক্ষার্থী।
অভিযোগ ওঠেছে এ বিদ্যালয়ে অধিকাংশ শিক্ষার্থী মাসের পর মাস অনুপস্থিত থেকেও উপবৃত্তির সুযোগ সুবিধা ভোগ করছে।
এদিকে বিদ্যালয়টিতে শিক্ষা কার্যক্রম সুষ্ঠ ভাবে পরিচলনার জন্য প্রয়োজনীয় শিক্ষক-শিক্ষিকা, তৃতীয় ও চতুর্থ শ্রেণির নিয়োগ প্রদান করা হয়েছে।
এ বিদ্যালয়ের পরিচলনা পর্ষদ (ম্যানেজিং কমিটি) উপর শিক্ষা মন্ত্রণালয় পরিচলনার দায়ভার অর্পণ করলেও পরিষদটি দায়সারাভাবে বিদ্যালয়টি পরিচলনা করে আসছেন বলে অভিযোগ ওঠেছে।
অভিযোগে সত্যতা যাচাইয়ে মুভমেন্ট রেজিস্ট্রারে প্রধান শিক্ষক নানা অসংগতিসহ খেয়াল খুশি মত স্কুলে যাওয়া আসা করেন বলেও এলাকায় অভিযোগ পাওয়া গেছে। তবে বেতন ভাতা উত্তোলনের তালিকায় শত ভাগ উপস্থিতি দেখিয়ে বেতন-ভাতা উত্তোলন করেন বলে অভিযোগ পাওয়া গেছে।
অপর দিকে ২০০২ সালে শরিফুল ইসলাম জীববিদ্যা, কামরুন্নাহার কম্পিউটার, ইয়াসিন আলী সমাজ বিজ্ঞান ও লাইব্রীয়ান পদে নিয়োগ প্রাপ্ত হন। তাদের বেতন ভাতার এমপিও সিট শিক্ষা মন্ত্রণালয়ে অনুমোদন না পাওয়ায় তারা বেতন না পাওয়ার অজুহাতে বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের পাঠ দানে বিমূখ রয়েছেন তারা। ঐ সকল শিক্ষকের বিষয় ভিত্তিক পাঠ গ্রহণে বঞ্চিত হচ্ছে শিক্ষার্থীরা। এতে শিক্ষার্থীর অভিভাবকদের চরম ক্ষোভ বিরাজ করছে।
সম্প্রতি প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীদের ভর্তির তালিকা অনুপাতে সরকারের কাছ থেকে বোর্ড বই সংগ্রহ করে শিক্ষার্থীর মাঝে বন্টন করে উদ্ধৃত বই গুলি কালোবাজারে বিক্রি করেন বলে অভিযোগ রয়েছে।
বিদ্যালয়ের বিভিন্ন অনিয়মের বিষয় জানতে চাইলে প্রধান শিক্ষক মনোয়ার হোসেন বিষয়টি কৌশলে এড়িয়ে যান।
জানতে চাইলে ছাড়ারপাড় উচ্চ বিদ্যালয়ের সভাপতি হেদায়েত আলী শাহ্ ফকির বলেন, প্রধান শিক্ষকের অনিয়মের বিষয়টি শিক্ষকরা আমাকে জানিয়েছেন। আমি অবগত আছি। তবে বেতন ভাতা না থাকায় চার শিক্ষক বিদ্যালয় নিয়মত আসেন না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available