পাবনা প্রতিনিধি: সন্ধ্যা গড়িয়ে আঁধার নামলেই জেগে উঠে পাবনার অবৈধ বালুমহলগুলো। কোনো ধরনের বাধাহীনভাবে রাতব্যাপী চলে এই বালু উত্তোলনের উৎসব। অবৈধ ও যত্রতত্রভাবে বালু উত্তোলন হওয়ায় প্রতি বছর নদী ভাঙনে বিলীন হচ্ছে ফসলি জমি। রাজনৈতিক ছত্রছায়ায় চলা এ কার্যক্রম বন্ধে প্রশাসনের কোনো পদক্ষেপও চোখে পড়ে না। উল্টো তাদের বিরুদ্ধেই সহযোগিতার অভিযোগ উঠেছে।
আগে আওয়ামী লীগ নেতাদের নেতৃত্বে চললেও এখন নেতৃত্ব দিচ্ছেন প্রশাসনের ছত্র ছায়ায় বিএনপি নামধারী কতিপয় ব্যক্তি।
পদ্মা নদীর পাবনার হেমায়েতপুর ইউনিয়নের চর ভবানীপুর, দোগাছী ইউনিয়নের চর বলরামপুর, ভাঁড়ারা ইউনিয়নের দড়িভাউডাঙ্গি, চরতারাপুর ইউনিয়নের দিঘী গোয়ালবাড়ি, শুকচর, সুজানগর উপজেলার চর ভবানীপুর, বরখাপুর, উদয়পুর, হাট মালিফা, নাজিরগঞ্জ, সাগরকান্দি, বেড়া উপজেলার ঢালারপুর, নগরবাড়ি, চাকলা, ঈশ্বরদী উপজেলার পাকশী, লক্ষীকুণ্ডা এলাকাসহ জেলার ১৫-২০টি পয়েন্টে প্রতিদিন প্রায় অন্তত ৩ কোটি টাকা মূল্যের এসব বালু উত্তোলন হচ্ছে।
স্থানীয় কৃষক ও সংশ্লিষ্টদের সঙ্গে কথা বলে জানা গেছে, গণমাধ্যমে সংবাদ প্রকাশের পর সম্প্রতি বালু উত্তোলন বন্ধ ছিল। গত এক সপ্তাহ ধরে আবারও শুরু হয়েছে। এখন দিনের বদলে রাতে তোলা হচ্ছে। আগে এইসব বালু মহলে নেতৃত্ব দিতেন আওয়ামী লীগের নেতাকর্মীরা, এখন দিচ্ছেন বিএনপি নামধারী কতিপয় ব্যক্তি।
এ ব্যাপারে পাবনার ভারপ্রাপ্ত জেলা প্রশাসক জাহাঙ্গীর আলম বলেন, আপনার মাধ্যমেই জানলাম। এছাড়া দুই-একটা মাধ্যমেও শুনেছি যে রাতে বালু তোলা হচ্ছে। আমরা প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নেয়ার জন্য উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তাদের বলে দিয়েছি। তারা মোবাইল কোর্ট করেছে এবং মোবাইল কোর্ট অব্যাহত থাকবে।
নিজেদের সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করে পাবনা পুলিশ সুপার মোরতোজা আলী খান বলেন, এটা তো লোকজনের বক্তব্য। আমরাও তো অভিযান করি। কিন্তু আপনাদের এ বিষয়ে জেলা প্রশাসক ও নৌপুলিশকে ধরতে হবে। এসব বিষয়ে মূল কাজটা ওদের। অভিযানের জন্য যদি জেলা প্রশাসকের অফিস থেকে আমাদের কাছে ফোর্স চায় আমরা ফোর্স দিয়ে দিই। কিন্তু আমার জানা মতে, আগে যেভাবে বালু উত্তোলন হতো এবার তা হচ্ছে না। তারপরও আপনারা ডিসি অফিসকে বলেন, তারা আমাদের কাছে ফোর্স চাইলে আমরা দিবো।
দলের নেতাকর্মীদের সম্পৃক্ততার বিষয়ে পাবনা জেলা বিএনপির আহবায়ক ও বিএনপি চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব বলেন, এটা তো বহুদিন ধরেই চলে আসতেছে। এখন হয়তো লোকালি ওরা হয়তো করে কিন্তু সাংগঠনিকভাবে তো হচ্ছে না। এ বিষয়ে এতো ব্যস্ত হওয়ার কী আছে? সরকারের উন্নয়নমূলক কাজ চলতেছে, এজন্য কি বালু লাগবে না? মাটি লাগবে না? আওয়ামী লীগের আমলে কি বালু তোলা হয় নাই? তখন কি সাংবাদিকরা নিউজ করেছে? তখন কোথায় ছিল তারা? তারপরও এগুলো তো প্রশাসন দেখে, আমরা হয়তো ওইভাবে দেখি না বা করিও না।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available