রাঙ্গাবালী (পটুয়াখালী) প্রতিনিধি: একদিকে ধেয়ে আসছে ঘূর্ণিঝড় 'মোখা'। অন্যদিকে শঙ্কা বাড়ছে পটুয়াখালীর উপকূলীয় রাঙ্গাবালীর মানুষের। সাগর ও নদী ঘেরা এই দ্বীপের কোথাও বাঁধ ভাঙা, কোথাও ঝুঁকিপূর্ণ এবং দুর্বল বাঁধ। আবার কোথাও নেই বাঁধ কিংবা ঘূর্ণিঝড় আশ্রয়কেন্দ্রও। তাই দুর্যোগ ঝুঁকিতে ৬টি এলাকার হাজারও মানুষ।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সবচেয়ে বেশি ঝুঁকিতে বেড়িবাঁধ ও আশ্রয়কেন্দ্র বিহীন বিচ্ছিন্ন দ্বীপ চরনজির, চরহেয়ার ও চরকাশেমের মানুষ। অন্যদিকে উপজেলার চালিতাবুনিয়া ইউনিয়নের গরুভাঙা, মধ্য চালিতাবুনিয়া ও চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডার গ্রামে প্রায় ৭-৮ কিলোমিটার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ সিডর পরবর্তী ঘূর্ণিঝড়ে কয়েক দফায় বিধ্বস্ত হয়। কিন্তু দীর্ঘদিনেও তা নির্মাণের উদ্যোগ নেওয়া হয়নি।
আবহাওয়া অফিসের তথ্য বলছে, ১৯৬০ থেকে ২০১৭ সাল পর্যন্ত ৩৬টি ঘূর্ণিঝড় আঘাত হেনেছে উপকূলে। এরমধ্যে ১৫টিই মে মাসে। যার মধ্যে ঘূর্ণিঝড় নারগিস, ফণী, মহাসেন, রোয়ানু, আইলা, ইয়াস ও মোরা ছিল উল্লেখযোগ্য। তাই মধ্য মে মাসের এই ঘূর্ণিঝড় 'মোখা' এখন উপকূলের নতুন আতঙ্ক।
উপজেলা সদর থেকে বিচ্ছিন্ন চরমোন্তাজ ইউনিয়নের চরআন্ডার বাসিন্দা মো. তুহিন হাওলাদার বলেন, চরআন্ডা ছোট্র একটা দ্বীপ স্বাভাবিক জোয়ারে চরআন্ডা তলাইয়া যায়। পশ্চিম পাশ ও পূর্ব পাশে বেড়িবাঁধ নাই। আমরা সাধারণ মানুষ কষ্টে আছি। লবণ পানি ঢুকে রবিশস্য নষ্ট হয়ে যায় । ঝড় হইলে আমরা কোথায় যাব? থাকার এমন কোনো ব্যবস্থা নাই। একটি মাত্র সাইক্লোন শেল্টার নামেই রয়েছে। এই শেল্টার ১০০ থেকে ১৫০ জন মানুষ থাকতে পারে। কিন্তু মানুষ আছে প্রায় পাঁচ-ছয় হাজারের মত।
স্থানীয় মুরব্বি মো. জয়নাল মিয়া বলেন, ঘূর্ণিঝড় খবর হুনছি। এই মহাবিপদে আল্লাহর কাছে সাহায্য চাওয়া ছাড়া আমাদের আর কিছুই করার নাই।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী খালেদ বিন অলীদ বলেন, উপজেলার ৭৫০ মিটার বাঁধ অধিক ঝুঁকিপূর্ণ আর ঝুঁকিপূর্ণ আছে ২০০০ মিটার। যারমধ্যে ১৪৫০ মিটার বাঁধের নির্মাণকাজ চলছে। কোনো জায়গার বাঁধ উন্মুক্ত থাকবে না।
রাঙ্গাবালী উপজেলা পরিষদ চেয়ারম্যান জহির উদ্দিন আহমেদ বলেন, বেশিরভাগ বেড়িবাঁধই দুর্বল। উপজেলার বেশিরভাগ এলাকার বন্যা নিয়ন্ত্রণ বেড়িবাঁধ নিচু এবং নাজুক। তাই দুর্যোগ মৌসুমে পানির উচ্চতা বাড়লে বাঁধের ক্ষতিও বাড়ে। তাই টেকসই বাঁধের প্রয়োজন।
এ ব্যাপারে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মহিউদ্দিন আল হেলাল বলেন, আমরা ইতোমধ্যে একটি মিটিং করেছি। এবং সাইক্লোন শেল্টারগুলো প্রস্তুত রাখার জন্য বলছি। যেহেতু চরআন্ডা খুবই ঝূঁকিপূর্ণ সেহেতু এদের ব্যাপারে আমাদের বিশেষ নজর থাকবে। এখন তো আশ্রয় কেন্দ্রে তৈরি করতে পারবো না। আর বেড়িবাঁধের বিষয়ে আমাদের প্রস্তাব পাঠানো রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available