সুমন আহমেদ, মতলব (চাঁদপুর): চাঁদপুরের মতলব উত্তর উপজেলার মেঘনা-ধনাগোধা দেশের দ্বিতীয় বৃহত্তর সেচ প্রকল্প। এ সেচ প্রকল্পের কৃষিজমিতে অপরিকল্পিতভাবে গড়ে উঠেছে ঘরবাড়ি। ফলে হুমকির মুখে পড়েছে এ সেচ প্রকল্পটি।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের (পাউবো) মেঘনা-ধনাগোদাা সেচ প্রকল্প কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, ১৯৮৭-৮৮ অর্থ বছরে মতলব উত্তর উপজেলার ১৪ টি ইউনিয়ন নিয়ে প্রকল্পের কাজ শুরু হয়। বর্তমানে প্রকল্পটির আওতায় ১৪ টি ইউনিয়ন ও একটি পৌরসভা রয়েছে। শুরুতে প্রকল্পে জমির পরিমাণ ছিল ১৭ হাজার ৫৮৪ হেক্টর। এর মধ্যে কৃষিজমির পরিমাণ ছিল ১৩ হাজার হেক্টর। ৩৫ বছরে অপরিকল্পিতভোবে ঘরবাড়ি নির্মাণ করায় ২০২৩ সালে এসে জমির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৭ হাজার হেক্টরে। বাকি অন্তত ৬ হাজার হেক্টর কৃষিজমির বেশির ভাগই ঘরবাড়ি নির্মাণের করণে নষ্ট হয়েছে। আবাদি জমি কমে যাওয়ায় ফসল উৎপাদনও কম হচ্ছে।
সরেজমিন দেখা গেছে, প্রকল্পের জোড়খালী, ফতেপুর, ঠেটালিয়া, লুধুয়া, গজরা, আবুরকান্দি, ব্রাম্মনচক, মান্দারতলি, ঘনিয়ারপাড়, দেওয়ানজিকান্দি, রুহিতারপার, দুলালকান্দিসহ আরও অনেক এলাকায় কৃষিজমিতে গড়ে উঠেছে অসংখ্য ঘরবাড়ি। প্রকল্পের ভেতর প্রবেশ করে মনে হয়েছে, এটি যতটা না সেচ প্রকল্প, তার চেয়ে বেশি আবাসন প্রকল্প।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক কৃষক জানান, তিনি ৭০ শতাংশ কৃষিজমি নিয়ে একটা পাকা বাড়ি বানিয়েছেন। কম উচ্চতায় ও কম খরচে, সুন্দর পরিবেশে বসবাসের উদ্দেশ্যেই বাড়িটি করেছেন। কিন্তু কৃষি জমিতে ঘন ঘন বাড়ি তৈরি বন্ধ হওয়া দরকার বলে মনে করছেন স্থানীয়রা।
উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার কার্যালয়ের তথ্যনুযায়ী, আইন মোতাবেক যে কোনো জমির শ্রেণি পরিবর্তন করতে সরকারের অনুমতি নিতে হয়। কিন্তু এ আইনের তোয়াক্কা করছে না প্রকল্প সংশ্লিষ্টরা।
প্রকল্পের নির্বাহী প্রকৌশলীর মতে, এখানে বাড়িঘর তৈরি বন্ধে পাউবোর নিজস্ব কোনো আইন নেই। এ সুযোগকেই কাজে লাগাচ্ছে প্রকল্পের বাসিন্দারা। এভাবে চলতে থাকলে কয়েক বছরের মধ্যে এ প্রকল্পটি আবাসন প্রকল্পে রূপ নেবে বলে ধারনা করা হচ্ছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2024, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available