কচুয়া (চাঁদপুর) প্রতিনিধি: চাঁদপুরের কচুয়ায় অটোরিকশা ছিনতাই করে চালক ফারুক হোসেনকে (৩৩) হত্যার ঘটনায় তিন জনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। উদ্ধার করা হয়েছে চালকের মোবাইল ফোন ও অটোরিকশা।
২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার দুপুরে চাঁদপুর পুলিশ সুপার কার্যালয়ের সম্মেলন কক্ষে পুলিশ সুপার (এসপি) মুহম্মদ আব্দুর রকিব প্রেস ব্রিফিংয়ে এই তথ্য জানান।
গ্রেফতাররা হলেন- আরিফুর রহমান (৩৫), মো. আল আমিন (২৪) ও আবুল খায়ের (৪০)। হত্যার শিকার চালক ফারুক হোসেন কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার লক্ষ্মীপুর গ্রামের বাসিন্দা।
আসামি মো. আরিফুর রহমান কুমিল্লা জেলার বরুড়া থানার দেবপুর গ্রাম, আল-আমিন ও আবুল খায়ের একই জেলার চান্দিনা থানার লতিফপুর গ্রামের বাসিন্দা।
প্রেস ব্রিফিংয়ে পুলিশ সুপার জানান, গত ৫ ফেব্রুয়ারি হত্যার শিকার ফারুক যাত্রী বহনের উদ্দেশ্যে বাড়ি থেকে অটোরিকশা নিয়ে বের হয়। রাত ১০টায় বাড়িতে না আসলে এবং তার মোবাইল ফোন বন্ধ থাকায় ফারুকের স্ত্রী কচুয়া থানায় অজ্ঞাতনামা আসামি করে মামলা করে। ওই মামলার সূত্র ধরে কচুয়া থানার উপ-পরিদর্শক (এসআই) কামরুল হাসান একটি দল নিয়ে ঘটনার রহস্য উদ্ঘাটনে কাজ শুরু করে।
ঘটনার এক পর্যায়ে তদন্তকারী দল অপরাধী চক্রকে শনাক্ত করতে সক্ষম হয়। তার ধারবাহিকতায় ১৯ ও ২০ ফেব্রুয়ারি দুদিন অভিযান করে চট্টগ্রাম ও কুমিল্লা জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তিন আসামিকে গ্রেপ্তার করে এবং আসামি আরিফের দেয়া তথ্য মতে মোবাইল ফোন ও অটোরিকশা উদ্ধার করে।
প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদে আসামি আরিফ জানায়, সে একজন পেশাদার মাদক কারবারি ও মাদক সেবক। এক সময় ঢাকায় সাউন্ড সিস্টেমের দোকানে কাজ করত। কয়েক বছর আগে নিজ বাড়িতে চলে আসে। জীবিকা নির্বাহের জন্য সিএনজি চালিত অটোরিকশা চালাতেন আরিফ। ঘটনার সময় সে বেকার ও সংসার চালাতে না পেরে হতাশাগ্রস্ত ছিল।
অপরদিকে হত্যার শিকার ফারুক অটোরিকশা চালানোর পাশাপাশি মাদক কারবারে জড়িত। ঘটনার দিন ৪ ফেব্রুয়ারি আরিফ হোসেন ফারুকের কাছ থেকে ২ পিস ইয়াবা ট্যাবলেট ক্রয় করেন এবং টাকা না থাকায় তার নিজের ব্যবহৃত নোকিয়া মোবাইল ব্যবহারের জন্য দিয়ে দেয়। এরপর ৫ ফেব্রুয়ারি সন্ধ্যায় পুনরায় আরিফ তার বাড়ি ফাঁকা আছে এবং ইয়াবা নিয়ে ফারুককে তার বাড়িতে আসার জন্য বলে। ওই বাড়ির বাগানে তারা দুজনে ইয়াবা ট্যাবলেট সেবন করে। ফারুক ইয়াবার টাকা চাইলে আরিফ ঘরে গিয়ে একটি নাইলনের দড়ি নিয়ে আসে এবং হঠাৎ ফারুককে বেঁধে শ্বাসরোধ করে হত্যা করে। তার মৃত্যু নিশ্চিত হওয়ার পর মরদেহ নিকটবর্তী ভবানিপুর-পায়ালগাছ সড়কের পাশে ফেলে মোবাইল ও অটোরিকশা নিয়ে আরিফ চলে যায়।
গত ৬ ফেব্রুয়ারি সকাল আনুমানিক ১০টার দিকে ঘটনাস্থল পায়ালগাছা সড়কের পাশে জনৈকি হালিম পাটওয়ারীর ফসলি জমি সংলগ্ন স্থানে ফারুকের মরদেহ দেখতে পেয়ে স্থানীয়রা পুলিশকে জানায়। জেলা পুলিশ, পিবিআই ও সিআইডি মরদেহ সনাক্ত, সুরতহাল প্রস্তুতসহ মরদেহ উদ্ধার করে চাঁদপুর সরকারি জেনারেল হাসপাতালের মর্গে পাঠায়। পরবর্তীতে ছায়েরা বেগম নামে এক নারী ফারুক তার স্বামী বলে শনাক্ত করেন।
পুলিশ সুপার বলেন, গ্রেপ্তার আসামিদের চাঁদপুর আদালতে সোপর্দ করা হবে। ঘটনায় জড়িতরা কুমিল্লা জেলার হলেও ঘটনাস্থল চাঁদপুরের অংশে। ঘটনার পরেই পুলিশ তৎপর থেকে আসামিদের গ্রেপ্তার করতে সক্ষম হয়।
প্রেস ব্রিফিংয়ে অতিরিক্ত পুলিশ সুপার (প্রশাসন ও অর্থ) মো. লুৎফুর রহমান, কচুয়া থানার ওসি আজিজুল ইসলামসহ অন্যান্য পুলিশ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available