পঞ্চগড় প্রতিনিধি: পঞ্চগড়ের সদর উপজেলায় পাওনা টাকা চাইতে গিয়ে বন্ধুদের মারধরে রবিউল ইসলাম (১৮) নামে অপর এক বন্ধুর মৃত্যু হয়েছে। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঝলইহাট-কালিয়াগঞ্জ সড়কে মারধরের ঘটনাটি ঘটে। এসময় রবিউলকে তার বন্ধুরা এলোপাথারি মারধর করে এবং তার বাম চোখে ইট দিয়ে আঘাত করে গুরুতর আহত অবস্থায় ফেলে পালিয়ে যায়। পরে তাকে পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালে ভর্তি করা হলে ২০ ফেব্রুয়ারি বৃহস্পতিবার বিকেলে গুরুতর আহত রবিউলকে উন্নত চিকিৎসার জন্য পঞ্চগড় জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক রংপুর হাসপাতালে রেফার করেন।
রংপুর যাওয়ার পথে পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জ উপজেলা শহর এলাকায় পৌঁছালে তার শারিরীক অবস্থার আরো অবনতি হয়। দেবীগঞ্জ উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে গেলে জরুরি বিভাগের কর্তব্যরত চিকিৎসক তাকে মৃত ঘোষণা করেন। খবর পেয়ে নিহতের মরদেহ ময়নাতদন্তের জন্য পঞ্চগড় আধুনিক সদর হাসপাতালের মর্গে প্রেরণ করে পুলিশ। ময়নাতদন্ত শেষে নিহতের দাফনকাজ সম্পন্ন করে পরিবারের সদস্যরা।
এ ঘটনায় নিহতের মামা জয়নাল ইসলাম গত ২১ ফেব্রুয়ারি শুক্রবার রাতে রবিউলের পাঁচ বন্ধুর না উল্লেখসহ অজ্ঞাত ৪-৫ জনকে আসামি করে সদর থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন। এঘটনায় আসামিদের গ্রেফতারে পুলিশের অভিযান অব্যাহত রয়েছে বলে জানা গেছে। নিহত রবিউল সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের দামুকা পাড়া এলাকার জহিরুল ইসলামের ছেলে।
মামলার আসামিরা হলেন, নতুনহাট এলাকার মোতালেবের ছেলে জিসান ইসলাম রহমত (২২), একই এলাকার মোতালেব (৫৫), কাজী পাড়া এলাকার হাবেজ আলীর ছেলে আব্দুল্লাহ (১৮), তারজেন ইসলামের ছেলে সবুজ (২৩), রফিকুল ইসলামের ছেলে বক্কর (২০)।
মামলার এজহার সূত্রে জানা যায়, রবিউলের কাছ থেকে ৬০০ টাকা ধার করে নেন তার বন্ধু জিসান ইসলাম রহমত। বেশ কিছুদিন ধরে রবিউল পাওনা টাকা চাইতে গেলে জিসান রেগে যেত। এনিয়ে তাদের বিরোধ তৈরি হয়। পরে গত ১৯ ফেব্রুয়ারি বুধবার রাতে সদর উপজেলার মাগুড়া ইউনিয়নের দামুকা পাড়া এলাকার নিজ বাড়ি থেকে ঝলই বাজারে আসছিলেন রবিউল। এ সময় মাগুড়া ইউনিয়নের নয়নীবুরুজ উচ্চ বিদ্যালয়ের সামনে ঝলইহাট-কালিয়াগঞ্জ সড়কে রবিউলের পথরোধ করে জিসানসহ অন্য আসামিরা। সেখানে তাকে এলোপাথারি মারধর শুরু করে তারা। একপর্যায়ে রবিউলের বাম চোখে জিসান ইট দিয়ে আঘাত করলে মাটিতে পড়ে যায় সে।
মামলার বাদী ও নিহত রবিউলের মামা জয়নাল ইসলাম বলেন, পাওনা ৬০০ টাকা চাইতে গেলে জিসান ও তার সহযোগীরা আমার ভাগিনাকে হত্যা করল। রবিউলের বাবা ছেলেকে হারিয়ে এখন পাগল প্রায়। দিনমজুর পরিবারের সংসারে নিজেরাই কষ্টে দিনাতিপাত করতো। পরিবারের উপার্জনক্ষম একটা ছেলে আজ নাই। পরিবারটি কীভাবে শোক সামলাবে। রবিউলকে হত্যার তিনদিন হয়ে গেলেও আসামিদের ধরতে পুলিশের কোনো পদক্ষেপ নাই। আমরা দ্বারে দ্বারে ঘুরছি। আসামিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি চাই আমরা।
সদর থানা পুলিশের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এসএম মাসুদ পারভেজ বলেন, আসামিরা ঘটনার পরপরই পালিয়ে গেছে। তবে তথ্যপ্রযুক্তির সহায়তায় তাদের ধরতে আমাদের অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
(এই ওয়েবসাইটের যেকোনো কিছু অনুমতি ছাড়া ব্যবহার করা বেআইনি)
© 2025, এশিয়ান অনলাইন টিভি  |  সর্বস্বত্ব সংরক্ষিতDeveloped by Future IT
Recent comments
Latest Comments section by users
No comment available