• ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:৫০:০৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:
এশিয়ান রেডিও
  • ঢাকা
  • |
  • বৃহঃস্পতিবার ৭ই অগ্রহায়ণ ১৪৩১ বিকাল ০৫:৫০:০৮ (21-Nov-2024)
  • - ৩৩° সে:

জনদুর্ভোগ

সৈয়দপুর পৌরসভার কসাইখানার বেহাল অবস্থা, পশু জবাইয়ে ভোগান্তি

১৫ মে ২০২৩ দুপুর ১২:১৭:৫৭

সৈয়দপুর পৌরসভার কসাইখানার বেহাল অবস্থা, পশু জবাইয়ে ভোগান্তি

মো. মাইনুল হক (নীলফামারী) প্রতিনিধি: নীলফামারীর প্রথম শ্রেণির সৈয়দপুর পৌরসভার কসাইখানা (কিলখানা) বেহাল হয়ে পড়েছে। এখানে পর্যাপ্ত জায়গার সংকট ও চারপাশে দুর্গন্ধযুক্ত ময়লা আবর্জনার স্তুপ রয়েছে। পর্যপ্ত পানির না থাকা, কুকুর ও কাকের উপদ্রব বেড়ে যাওয়া এবং খোলা জায়গায় রোদ-বৃষ্টিতে দুর্ভোগ পড়েছে কসাইরা। এসব নানা সমস্যার কারণে চরম জটিলতায় পশু জবাইয়ে ভোগান্তি পোহাতে হচ্ছে তাদের। দীর্ঘ দিন থেকে এ পরিস্থিতি বিরাজ করলেও সমাধানের কোনও উদ্যোগ নেই কর্তৃপক্ষের।

ফলে অস্বাস্থ্যকর পরিবেশে পশু জবাই করা হচ্ছে। এ কারণে গোশতে নোংরা ময়লা লেগে থাকাসহ কুকুর ও কাকের থাবায় রোগজীবাণু মিশছে। সেইসাথে স্বাস্থ্য পরীক্ষার ব্যবস্থা না থাকায় রোগাক্রান্ত, গগর্ভবতী ও অসুস্থ পশু জবাই করে সরবরাহ করা হচ্ছে। এতে চরম স্বাস্থ্যঝু্ঁকিপূর্ণ হয়ে ভোক্তার হাতে পৌঁছাচ্ছে গোশত। যা অত্যন্ত ক্ষতিকর ও আশংকা জনক। এ থেকে পরিত্রাণে আশু হস্তক্ষেপ প্রয়োজন।

সরেজমিনে সৈয়দপুর শহরের নয়াবাজার সুরকী মহল্লার ভাগাড় এলাকায় কিলখানায় গেলে দেখা যায়, মূল শেডের ভিতরে ও বাইরের খোলা চত্বরে গাদাগাদি করে ১০ টি গরু জবাই করে চামড়া ছিলার কাজ করছে কসাইরা। মেঝেতে রক্ত, গবরের একটা স্তর তৈরি হয়েছে। এর মধ্যেই চলছে গোশত কাটার কর্মযজ্ঞ। পাশেই গরুর ভুঁড়ি, চামড়ার ও গোশতের উচ্ছিষ্ট ফেলা হচ্ছে। সেগুলোতে ঝাঁকে ঝাঁকে কাক আর দলে দলে কুকুরের হুরোহুরি করছে।

এ সবসহ ভাগাড়ের ময়লা আবর্জনা মাড়িয়ে কাক-কুকুড় ছুটাছুটি করছে শেডের ভিতরে ও বাইরে। সেখানে আস্ত চামড়া ছেলা গরু আর গোশতের বড় বড় অংশের উপরে নোংরা পায়ে বসে ঝিল্লি টেনে ছেঁড়ায় ব্যস্ত কাক। একইভাবে কুকুরেরাও সুযোগ বুঝে দাঁত বসাচ্ছে গোশত কামড়ে খাওয়ার জন্য।

কখনো কখনো পুরো রান বা অন্য কোনও কাটা অংশ কয়েকটা কুকুর মিলে কামড়ে টেনে হিচড়ে নিয়ে যাওয়ারও চেষ্টা করছে। অথচ এসব যেন তোয়াক্কাই করছে না গোশত ব্যবসায়ীরা। এমনকি সেগুলো না ধুয়েই তারা ওই অবস্থাতেই গোশত রিকশা, ভ্যান ও অটোতে তুলে নিয়ে যাচ্ছে বাজারে।

এ দৃশ্য নাকি নিত্যদিনের। এমন মন্তব্য করে জবাই করার জন্য গরু নিয়ে চত্বরের সামনে অপেক্ষমাণ কসাইরা জানান, ছোট-বড় মিলিয়ে প্রতিদিন প্রায় ৫০ থেকে ৮০ টি গরু জবাই হয় এই কিলখানায়। কিন্তু জায়গা না থাকায় একসাথে ৫-৮ টির বেশি পশু জবাই সম্ভব হয় না। এসময় অন্য কসাই বা পশু মালিকদের অপেক্ষায় দাঁড়িয়ে থাকতে হয়।

তাছাড়া একটি পশু জবাই, চামড়া ছিলা ও বিভিন্ন অংশ পৃথক করা এবং ভুঁড়ি পরিষ্কার করতে গড়ে নু্ন্যতম আধঘন্টা থেকে একঘন্টা সময় লাগে। পানি স্বল্পতার কারণে গোশত ধোয়া আর রক্ত পরিষ্কার করতে আরও বেশি সময় লাগছে। ফলে সবগুলো গরুর খালগিরি শেষ করতে সময় লেগে যায় কমপক্ষে প্রায় ৫-৭ ঘন্টা। এতে ভোর ৫ টায় শুরু করলেও সকাল ১০ টা থেকে বেলা ১২ টা বেজে যায়। শুক্রবার হলেতো আরও সমস্যার সৃষ্টি হয়। কারণ এইদিন দ্বিগুণ পশু আসে।

অন্য একজন বলেন, এরপরও আমরা এখানে পশু জবাই করতে আনি। সারাবছর অনেক কষ্ট করে কাজ করি। বর্ষায় এই ভোগান্তি আরও বেড়ে যায়। এখন রোদে পুড়ছি আর তখন পানিতে ভিজে রক্ত, কাদা আর নোংরা ময়লায় একাকার হয়ে পড়ে শেডসহ বাইরের অংশ। কিলখানা থেকে রাস্তা পর্যন্ত ময়লায় আচ্ছন্ন হয়ে পড়ে। এর মধ্যেই গরু আনা, জবাই করা ও গোশত নিয়ে যাওয়া, অসহনীয় দুর্ভোগের ব্যাপার। আপনি চোখে না দেখলে তা বলে বুঝানো মুশকিল।

এসময় ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, আমাদের এই ভোগান্তি বিষয়ে বার বার বলেও কোনও সুরাহা পাইনি। পৌর কর্তৃপক্ষ বা কিলখানার ইজারাদার কেউই কোনও পদক্ষেপ নেয়নি। অথচ পশু প্রতি ১শ' টাকা করে দিতে হয়। বিনিময়ে সামান্য সেবা পাই না। আবার কিলখানা ছাড়া অন্য জায়গায় জবাই করলে এসব ভোগান্তিও নাই, টাকাও লাগে না। কিন্তু আইনের নামে আমাদেরকে এই দুর্ভোগ পোহাতে বাধ্য করা হচ্ছে। তবে এখন অনেকেই শহরের বিভিন্ন জায়গায় নিজ নিজ উদ্যোগে পশু জবাই করছে।

জানা গেছে, ২ লাখ ৭০ হাজার টাকার কসাইখানা নিতে হয়েছে ৬ লাখ ৮০ হাজার টাকায়। সিন্ডিকেট করে একটি চক্র এভাবে অতিরিক্ত টাকা হাতিয়ে নিয়েছে। অথচ যদি সঠিক দরে ইজারা দেয়া হতো তাহলে অতিরিক্ত টাকা খরচ করে কিলখানার উন্নয়ন করতে পারতো ইজারাদার। সব টাকা যদি পৌরসভার তহবিলে জমা হতো তাহলে সেই টাকাতেও কাজ করা যেত। কিন্তু টাকা ঠিকই ব্যবহৃত হয়েছে, তবে তা চলে গেছে ব্যক্তির পকেটে।

এ ব্যাপারে সৈয়দপুর গোশত ব্যবসায়ী কল্যাণ সমিতির সভাপতি ও কিলখানার ইজারদার মো. নাদিম কোরাইশীর সাথে কথা হয়।

তিনি জানান, নিজের টাকাই তুলতে পারছি না। সেখানে সেবা কি দিবো? ইজারার টাকা দিয়েইতো উন্নয়ন করতে পারে পৌরসভার কর্তৃপক্ষ। কিন্তু বর্তমান পৌর কর্তৃপক্ষ কোনও কাজই করছে না। অথচ শেডের পরিধি বাড়ানোসহ অন্যান্য সমস্যা সমাধান খুবই জরুরি।

তিনি আরও জানান, কসাইদের কষ্টের কথা ভেবে সকল সদস্যের যৌথ স্বাক্ষরে একাধিকবার লিখিত আবেদন জানিয়েছি পৌর মেয়রকে। কিন্তু তিনি বার বার আশ্বাস দিলেও কিছুই করেননি। কোনও রকম ভ্রুক্ষেপ নেই কারো। পশুর স্বাস্থ্য পরীক্ষায় নিয়জিত কর্তৃপক্ষও নিয়মিত আসেন না। উন্নয়ন না করায় ঠিকমত তদারকি করতেও পারছে না তারা।

সূত্র মতে, আগামী মাসে পূর্বের টেন্ডারের মেয়াদ শেষ হবে। নতুন করে টেন্ডারের মাধ্যমে ইজারা দিতে আবারও টাকার খেলা চলবে। কিন্তু কিলখানার কোনও উন্নতি হবে না। সাবেক মেয়র আমজাদ হোসেন সরকার ও আখতার হোসেন বাদল যেটুকু করে গেছেন সেটাকে পূঁজি করেই সবাই নিজ নিজ পকেট ভারি করছেন।

এ জন্য কসাইদের পক্ষ থেকে দাবি উঠেছে দ্রুত বিদ্যমান সমস্যার সমাধান করা হোক। যেই ইজারা নিক এত কষ্ট করে আর কিলখানায় পশু জবাই করবে না তারা। এতে প্রয়োজনে ব্যবসা বন্ধ করে দিবে, নয়তোবা আন্দোলনে নামবে তারা। তাদের প্রতি সহমত পোষণ করে সচেতন সৈয়দপুরবাসী। তাদের দাবি, উন্নয়ন করাসহ যথাযথ নিয়ম প্রতিপালনে তদারকি ও স্বাস্থ্যকর পরিবেশ এবং মানসম্মত গোশত সরবরাহে পৌর কর্তৃপক্ষসহ প্রশাসনের সার্বিক হস্তক্ষেপ আশা করেছেন।

এনিয়ে কথা বলতে পৌর সচিবের কাছে গেলে তিনি সাংবাদিক দেখে ক্ষিপ্ত হয়ে বলেন, আমি কোনও মন্তব্যই করতে পারবো না। মেয়রের অনুমতি নিয়ে আসেন তারপরও কথা বলবো। কথা বললে আপনারা যাওয়ার পর যে চাপ আসবে তা কি আপনারা সমাধান করবেন? কার, কি ধরণের চাপ জানতে চাইলে তিনি অপারগতা প্রকাশ করেন।

এদিকে পৌর মেয়র রাফিকা আকতার বেবীর সাথে দেখা করতে চাইলে তিনি ব্যস্ত আছেন বলে পূর্বের মতই এড়িয়ে যান। মোবাইলে তার মন্তব্য জানার বার বার চেষ্টা করলেও তিনি রিসিভ করেননি। কয়েকদিন চেষ্টাার পর মোবাইল রিসিভ করলেও মেয়র কথা না বলে টগর নামে একজন জানান, মেয়র ব্যস্ত আছেন। কয়েক ঘন্টা পর আবার কল দিলে টগর আবার বলেন, মেয়র অসুস্থ কথা বলতে পারবে না। এমতাবস্থায় মেয়রের মতামত জানা সম্ভব হয়নি।  

Recent comments

Latest Comments section by users

No comment available

সর্বশেষ সংবাদ





সেনাকুঞ্জে পৌঁছেছেন খালেদা জিয়া
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৪:২০:৫২





আলু বীজের চড়া দামে দিশেহারা হাওরের চাষিরা
২১ নভেম্বর ২০২৪ বিকাল ০৩:৩৬:৫৫